ফজলী আম
জামদানী শাড়ি
শীতল পাটি
রসগোল্লা
নীলাঞ্জনা
অপরাজিতা
জয়ীতা
মেরীনা অ্যাডমিরাল
বাঙালি জাতি বা বাঙালী জাতি দক্ষিণ এশিয়ার বিশেষ একটি ইন্দো-আর্য জাতিগোষ্ঠীর নাম। স্থানীয় জনসংখ্যা স্বাধীন বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, বরাক উপত্যকা এবং নিম্ন আসাম ও মণিপুরের কিছু অংশের মধ্যে বিভক্ত। তাদের অধিকাংশই বাংলায় কথা বলে, যা ইন্দো-ইরানি ভাষাসমূহের বিশেষ একটি ভাষা।
বাঙালি জাতির উদ্ভব ঘটেছে প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার বছর পূর্বে। এ অঞ্চলে প্রথম আসে মানুষ, যাদেরকে নেগ্রিটো বলা হয়। তারপর বিভিন্ন জাতি বর্ণের মিশ্রণে সৃষ্টি হয় বাঙালি জাতি। সমগ্র বাঙালি জাতিকে দুভাগে ভাগ করা যায়। যথা : প্রাক আর্য বা অনার্য জনগোষ্ঠী এবং আর্য জনগোষ্ঠী ৷ প্রাক আর্য জনগোষ্ঠকে মূলত নেগ্রিটো, অস্ট্রিক, দ্রাবিড়, মঙ্গোলীয় বা ভোটচীনীয় এই চারটি শাখায় বিভক্ত ছিল।
১. অনার্য জনগোষ্ঠী
নেগ্রিটো
অস্ট্রিক
দ্রাবিড়
মঙ্গোলীয়
২. আর্য জনগোষ্ঠী
বাঙ্গালীদের সবচেয়ে প্রাচীন পূর্বপুরুষ হলো নেগ্রিটোরা। বর্তমানে সাঁওতাল, ভীল, মুণ্ডা, হাড়ি, চণ্ডাল ও ডোম উপজাতিকে নেগ্রিটোদের উত্তরসূরী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। বিশেষ করে সুন্দরবন, ময়মনসিংহ ও যশোর অঞ্চলে এদের প্রভাব লক্ষ্যণীয়।
অস্ট্রিক জাতি হলো অনার্য জনগোষ্ঠী । বাঙালি জাতির প্রধান অংশ গড়ে উঠেছে অস্ট্রিক জাতি থেকে। অস্ট্রিক জাতির আরেক নাম 'নিষাদ জাতি’। প্রায় ৫০০০ বছর পূর্বে এরা ইন্দোচীন থেকে আসাম হয়ে বাংলায় প্রবেশ করে। নেগ্রিটোদের উৎখাত করে সিন্ধু-বিধৌত অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে।
দক্ষিণ ভারতের বৃহত্তর তামিল জনগোষ্ঠী দ্রাবিড়দের উত্তরসূরী। সিন্ধুর হরপ্পা ও মহেঞ্জোদাড়ো সভ্যতার স্রষ্টা দ্রাবিড় জনগোষ্ঠী। দ্রাবিড়রা ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকে বর্তমান দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবেশ করে। দ্রাবিড়রা অস্ট্রিকদের উপর প্রভাব বিস্তারের ফলে উত্তরের সংমিশ্রনে গড়ে উঠে বাঙ্গালী জাতির সিংহভাগ।
মঙ্গোলীয়রা (Sino- Tibetan) ইন্দোচীন হতে আগমন করে। কালের বিবর্তনে অস্ট্রিক, দ্রাবিড় ও মঙ্গোলীয় জাতির ত্রি-সংমিশ্রণ ঘটে। ত্রিপুরা, চাকমা, গারো, কোচ, ইত্যাদি এই গোষ্ঠীভুক্ত।
আর্য হচ্ছে একটি প্রাচীন জাতিবিশেষ, যার অর্থ সর্বংশজাত ব্যক্তি। আর্যদের আদিনিবাস ছিল ইউরাল পর্বতের দক্ষিণে বর্তমান মধ্য এশিয়া- ইরানে। প্রায় ২০০০ বছর পূর্বে খাইবার গিরিপথ (আফগানিস্থান-পাকিস্তান) ব্যবহার করে আগমন করে এদেশে। আর্যরা সনাতন ধর্মালম্বী, তাদের ধর্মগ্রন্থের নাম বেদ। বেদ থেকে ঋগ্বেদের সৃষ্টি হয়েছে। আর্য হওয়ার ধারণাটি জাতিগত নয়, বরং ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত ।
ইন্দো-আর্যদের আসার পর অঙ্গ, বঙ্গ এবং মগধ রাজ্য গঠিত হয় খ্রিষ্টপূর্ব দশম শতকে । এই রাজ্যগুলি বাংলা এবং বাংলার আশেপাশে স্থাপিত হয়েছিল । অঙ্গ বঙ্গ এবং মগধ রাজ্যের বর্ণনা প্রথম পাওয়া যায় অথর্ববেদে প্রায় ১২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে । মহাভারতে পৌন্ড্র রাজ বাসুদেব এর উল্লেখ পাওয়া যায় ।
৩২৭-৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গ্রিক বীর আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণের সময় থেকে প্রকৃত ইতিহাস পাওয়া যায়। গ্রিক লেখকদের কথায় বাংলাদেশে 'গঙ্গারিডাই' নামে একটি শক্তিশালী জাতির বাসস্থান ছিল ভাগীরথী ও পদ্মার মধ্যবর্তী অঞ্চলে। গ্রিক গ্রন্থকারগণ গঙ্গারিডই ছাড়াও প্রাসিতায় নামে অপর এক জাতির উল্লেখ করেছেন। আলেকজান্ডারের আক্রমণের সময় বাংলার রাজা মাধাদি দেশ জয় করে পাঞ্জাব পর্যন্ত রাজ্য বিস্তার করেছিলেন। তিনি ছিলেন পাটালিপুত্রের নন্দবংশীয় কোন রাজা।
জেনে নিই
বিন্দুসার মৌর্য বংশের দ্বিতীয় শাসক এবং রাজা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের পুত্র। পিতা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারসূত্রে পিতৃ-রাজত্ব লাভ করেন বিন্দুসার। সিংহাসন আরোহণকালে তিনি অমিত্রঘাত' অর্থাৎ শত্রু নিধনকারী উপাধি লাভ করেন। বিন্দুসারের রাজত্বকালের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল তক্ষশীলার বিদ্রোহ (পাকিস্তান)। তক্ষশীলার এই বিদ্রোহ দমন করেছিলেন যুবরাজ অশোক। বিন্দুসারের রাজত্বকালে একমাত্র শ্রেষ্ঠ অর্জন ছিল- কলিঙ্গ জয়। সম্রাট অশোকও উত্তরাধিকার সূত্রে সিংহাসনের অধিকারী হয়েছিলেন।
উত্তর বাংলায় মৌর্য শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। সম্রাট অশোকের (তৃতীয় শাসক) রাজত্বকালে। এসময় অঞ্চলটি মৌর্যদের একটি প্রদেশে পরিণত হয়েছিল। এ প্রদেশের রাজধানী ছিল প্রাচীন পুণ্ড্রনগর। সম্রাট অশোকের একটি শিলালিপি পাওয়া যায় মহাস্থানগড়ে। সম্রাট অশোক সিংহাসন আরোহনে নিজ ভ্রাতাদের নির্মমভাবে হত্যা করেন ফলে তার উপাধি হয় চণ্ডাশোক। সম্রাট অশোক কলিঙ্গ যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন। সম্রাট অশোক বৌদ্ধধর্মকে বিশ্বধর্মে পরিণত করেন। এজন্য তাকে বৌদ্ধ ধর্মের কনস্ট্যানটাইন (রোমান সম্রাট) বলা হয়।
চাণক্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিষয়ে একজন দিকপাল ছিলেন। চাণক্য ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ও বিন্দুসারের প্রধানমন্ত্রী ও উপদেষ্টা। চাণক্যের ছদ্মনাম 'কৌটিল্য' আর উপাধি- ‘বিষ্ণুখণ্ড’। কৌটিল্য রচিত গ্রন্থের নাম- 'অর্থশাস্ত্র' । ভারত চলে চাণক্য নীতিতে।
তার একটি উক্তিঃ “যে রাজা শত্রুর গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা করতে পারে না এবং শুধু অভিযোগ করে যে তার পিঠে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, তাকে সিংহাসনচ্যুত করাই উচিত।"
ভারতের ইতিহাসে স্বর্ণযুগ হিসেবে বিবেচনা করা হয় গুপ্ত যুগকে। গুপ্ত বংশের নামমাত্র প্রতিষ্ঠাতা শ্ৰীগুপ্ত । গুপ্ত বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয় প্রথম চন্দ্রগুপ্তকে। প্রথম চন্দ্রগুপ্তের উপাধি মহারাজাধিরাজ। চন্দ্রগুপ্ত সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল পাটালিপুত্রে। গুপ্তদের সময়ে রাজতন্ত্র ছিল সামন্ত নির্ভর। গুপ্ত রাজাদের অধীনে বড় কোনো অঞ্চলের শাসককে বলা হতো মহাসামন্ত। মৌর্যদের মতো এদেশে গুপ্তদের রাজধানী ছিল মহাস্থানগড়ের পুণ্ড্রনগর।
সমুদ্র গুপ্তের শাসনকাল ছিল ৩৪০-৩৮০ খ্রিস্টাব্দ। গুপ্ত বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক সমুদ্রগুপ্ত সমগ্র বাংলা জয় করেন। তাঁকে প্রাচীন ভারতের "নেপোলিয়ন" বলা হয়। সমুদ্রগুপ্তের রাজত্বকালে সমগ্র বাংলা জয় করা হলেও সমতট ছিল করদ রাজ্য।
সমুদ্রতন্ত্রের মৃত্যুর পর পাটালিপুত্রের সিংহাসনে বসেন দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত। তাঁর উপাধি ছিল 'বিক্রমাদিত্য'। তিনি নবরত্নের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
যেমনঃ
দ্বিতীয় চন্দ্রখণ্ডের শাসনামলে চৈনিক তীর্থযাত্রী ফা-হিয়েন ভারতবর্ষে এসেছিলেন। ফা-হিয়েন-ই প্রথম চীনা পরিব্রাজক হিসেবে ভারতবর্ষে এসেছিলেন। তাঁর ভারত সফরের ৭টি বইয়ের মধ্যে ফো-কুয়ো-কিং বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
শশাঙ্ক প্রথম গৌড়ে রাজ্য স্থাপন করেন। শশাঙ্কের ধর্ম ছিল- শৈব। তিনি ছিলেন প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে প্রথম সার্বভৌম নৃপতি রাজা । গুপ্তদের অধীনে বড় অঞ্চলের শাসকদের পদবি ছিল- মহাসামন্ত। শশাঙ্কের রাজধানীর নাম- কর্ণসুবর্ণ (মুর্শিদাবাদে অবস্থিত)। শশাঙ্ক ছিলেন গুপ্ত রাজা মহাসেনগুপ্তের একজন মহাসামন্ত অথবা ভ্রাতুষ্পুত্র। হিউয়েন সাঙ রাজা শশাঙ্ককে বৌদ্ধ ধর্মের নিগ্রহকারী হিসেবে অভিহিত করেছেন। শশাঙ্ক মৃত্যুবরণ করেন- ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দের দিকে ।
শশাঙ্কের মৃত্যুর পর বাংলার ইতিহাসে প্রায় ১০০ বছর (সপ্তম-অষ্টম শতক) ধরে এক দুর্যোগপূর্ণ অন্ধকারময় যুগের সূচনা সময়কালকে মাৎস্যন্যায় বলা হয়। বাংলার অরাজকতার সময়কালকে পাল তাম্রশাসনে আখ্যায়িত করা হয়েছে মাৎস্যন্যায়। পুকুরে বড় মাছ ছোট মাছকে ধরে গিলে ফেলার মতো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিকে বলে মাৎস্যন্যায়। এ অরাজকতার যুগ চলে একশ বছরব্যাপী। অষ্টম শতকের মাঝামাঝি এ অরাজকতার অবসান ঘটে পাল রাজত্বের উত্থানের মধ্য দিয়ে। [তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় (দশম শ্রেণী)]
হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালের চীনা বৌদ্ধ পণ্ডিত হিউয়েন সাঙ ভারত সফরে আসেন। হিউয়েন সাঙ নালন্দা মহাবিহারের অধ্যক্ষ শীলভদ্রের কাছে ১৪ বছর বৌদ্ধ ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। হিউয়েন সাত সিন্ধি নামে এক গ্রন্থ রচনা করেন। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপক নাগার্জুন, আর্যদেব, শীলভদ্র, ধর্মপাল। হিউয়েন সাত রাজা শশাঙ্ককে বৌদ্ধধর্ম বিদ্বেষী বলে আখ্যায়িত করেন। সভাকৰি বানভী হর্ষবর্ধনের জীবনীমূলক গ্রন্থ 'হর্ষচরিত' রচনা করেন।
মেগাস্থিনিস ছিলেন একজন প্রাচীন গ্রীক ইতিহাসবিদ, কূটনীতিবিদ এবং হেলেনিস্টিক যুগে ভারতীয় নৃতত্ত্ববিদ ও অনুসন্ধানকারী। তিনি প্রাচীন গ্রিস এর একজন পর্যটক এবং ভূগোলবিদ। সিরিয়ার রাজা প্রথম সেলুকাসের দূত হিসেবে ভারতীয় রাজা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এর রাজদরবারে আসেন। তিনি যখন ভারতে আসেন তখন চন্দ্রগুপ্তের রাজদরবার ছিল ভারতের পাটালিপুত্র নামক স্থানে।
ফা-হিয়েন চীনের শানসি প্রদেশে আনুমানিক ৩৩১ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম ছিল কুঙ্গ। বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষা নেওয়ার পর ফা-হিয়েন রাখা হয়েছিল। তিনি চীন দেশের পরিব্রাজক ছিলেন। ৩৯৯ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে চীনের রাজধানী চ্যাংগান থেকে ভারতের দিকে রওনা হয়েছিলেন। চ্যাংগান আর পুরনো নাম ছিল হাইফেং এবং পরবর্তীতে নামকরণ হয় সিয়ান।
মা হুয়ান ছিলেন চীনা পরিব্রাজক। তিনি ১৪০৬ সালে গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের আমলে উপমহাদেশে আসেন।
ইবনে বতুতা ছিলেন মুসলিম পরিব্রাজক। তিনি ১৩০৪ সালে মরোক্কোয় জন্মগ্রহণ করেন এবং মোহাম্মদ বিন তুঘলকের শাসনামলে ১৩৩৩ সালে ভারতবর্ষে আগমণ করেন। তিনি বাংলায় আসেন ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের আমলে। ইবনে বতুতা প্রথমে বিদেশি পর্যটক হিসেবে বাঙ্গালা শব্দ ব্যবহার করেন। জীবনের নিত্যনৈমিত্তিক দ্রব্যের প্রাচুর্য ও স্বল্পমূল্য আর মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য বতুতাকে আকৃষ্ট করলেও এ দেশএর আবহাওয়া তার পছন্দ হয়নি। এজন্য তিনি বাংলার নামকরণ করেন ধনসম্পদপূর্ণ নরক। ইবনে বতুতার কিতাবুল রেহালা নামক গ্রন্থে বাংলার অপরূপ সৌন্দর্যের বর্ননা পাওয়া যায়।
কুষাণ সাম্রাজ্য
কনিষ্ক ছিলেন কুষাণ সাম্রাজ্যের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। তাঁর চিকিৎসক ছিলেন চরক।চরক আয়ুর্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতির সংকলনগ্রন্থ রচনা করেন, যা 'চরক সংহিতা' নামে সমাধিক পরিচিত।
প্রাচীন যুগে বাংলা নামে কোনো অর্থও রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ছিলনা। মূলত, বাংলার যাত্রা শুরু হয় বিক্ষিপ্ত জনপদগুলোর মধ্য দিয়ে। গুপ্ত, পাল ও সেন প্রভৃতি আমলের উৎকীর্ণ শিলালিপি ও বিভিন্ন সাহিত্যগ্রন্থে প্রাচীন বাংলায় প্রায় ১৬টি জনপদের কথা জানা যায় (বাংলায় ছিল ১০টি)। জনপদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন জনপদ হল পুত্র (পুণ্ড্রবর্ধন)। তবে প্রতিটি জনপদের সীমানা সবসময় একইরকম না থাকলেও প্রাচীন বাংলার চিরায়ত আবহ ধারন করে রেখেছে এই শত শত জনপদসমূহ।
প্রাচীন জনপদ | বর্তমান অঞ্চল |
গৌড় | ভারতের মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বর্ধমান ও বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ |
বঙ্গ | ফরিদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, বগুড়া, পাবনা, ঢাকা, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা ও নোয়াখালীর কিছু অংশ এবং ময়মনসিংহের কিছু অংশ |
পুণ্ড্র | বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর ও রাজশাহী অঞ্চল |
হরিকেল | সিলেট এবং চট্টগ্রামের অংশবিশেষ |
সমতট | কুমিল্লা ও নোয়াখালী |
বরেন্দ্র | বগুড়া, দিনাজপুর, রাজশাহী ও পাবনা |
চন্দ্রদ্বীপ | বরিশাল |
উত্তর রাঢ় | মুর্শিদাবাদের পশ্চিমাংশ, বীরভূম, বর্ধমান জেলার কাটোয়া |
দক্ষিণ রাঢ় | বর্ধমানের দক্ষিণাংশ, হুগলি ও হাওড়া |
তাম্রলিপ্ত | হরিকেলের দক্ষিণে বর্তমান মেদিনীপুর জেলার তমলুক |
প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনের দিক দিয়ে সমৃদ্ধ প্রাচীন জনপদ ছিল- পুন্ড্র। এর রাজধানীর নাম ছিল পুণ্ড্রনগর/পুণ্ড্রবর্ধন। পরবর্তীকালে এর নাম হয় মহাস্থানগড়। এর সীমানা রংপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর, বগুড়া (শর্টকাট- রংরাদিব)। পাথরের চাকতিতে খোদাই করা লিপি (প্রাচীনতম) পাওয়া যায়- পুণ্ড্রতে। পুন্ড্র জাতির উল্লেখ পাওয়া যায় বৈদিক সাহিত্য ও মহাভারতে। প্রাচীন পুন্ড্র রাজ্য স্বাধীন সত্তা হারায় সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে।
গৌড় জনপদ গড়ে উঠেছিল ভাগীরথী নদীর তীরে। গৌড়ের রাজধানী ছিল- কর্ণসুবর্ণ। কর্ণসুবর্ণ এর অবস্থান ছিল বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলায়। গৌড় জনপদের একমাত্র বাংলাদেশের জেলা- চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এর সীমানা ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া (শর্টকাট- চাপাই মামুন)। গৌড়ের স্বাধীন নৃপতি ছিলেন গৌড়রাজ শশাংক। শশাঙ্কের শাসনামলের পরে বঙ্গদেশ তিনটি জনপদে বিভক্ত ছিল। যথা পুণ্ড্র, গৌড়, বঙ্গ রাজাদের গৌড়রাজ উপাধির জন্য গৌড় জনপদটি পরিচিতি লাভ করে। ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাংলায় সৃষ্টি হয়- মাৎস্যন্যায়।
→ প্রাচীন গৌড় নগরীর অংশবিশেষ অবস্থিত- চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়।
→ শশাঙ্কের রাজধানী মুর্শিদাবাদের কর্ণসুবর্ণের অবস্থান ছিল- গৌড় অঞ্চলে ।
→ রাজা শশাঙ্কের শাসনামলের পরে বঙ্গদেশ বিভক্ত ছিল- ৩টি জনপদে (পুণ্ড্র, গৌড় ও বঙ্গ)।
→ গৌড় অঞ্চলের অনেক শিল্প ও কৃষিজাত দ্রব্যের উল্লেখ পাওয়া যায়-
কৌটিল্যের ‘অর্থশাস্ত্র' গ্রন্থে।
→ তৃতীয় ও চতুর্থ শতকে গৌড়ের নাগরিকদের বিলাস-ব্যসনের পরিচয় পাওয়া যায়-
বাৎসায়নের গ্রন্থে।
→ গৌড় অঞ্চলের সমৃদ্ধি বেশি ছিল-
পাল আমলে।
→ মুসলিম যুগের শুরুতে মালদহ জেলার যে অঞ্চল গৌড় নামে অভিহিত হতো-
লক্ষ্মণাবতী।
শেরশাহ
হুমায়ুন
জাহাঙ্গীর
আকবর
ঐতরেয় আরণ্যক গ্রন্থে সর্বপ্রথম 'বঙ্গ' শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রাচীন শিলালিপিতে বঙ্গের দু'টি অঞ্চলের নাম পাওয়া যায়। একটি বিক্রমপুর এবং অন্যটি নাব্য (নিচু জলাভূমি) এর সীমানা ছিল ঢাকা, গাজীপুর, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল, বাগেরহাট, পটুয়াখালী। দেশবাচক বাংলা শব্দের প্রথম ব্যবহার হয় আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরি আছে। গঙ্গা ও ভাগীরথীর মাঝখানের অঞ্চলকে বলা হতো বঙ্গ। প্রাচীন বঙ্গ দেশের সীমানার উল্লেখ পাওয়া যায় ড. নীহাররঞ্জন রায়ের "বাঙ্গালির ইতিহাস" নামক গ্রন্থে।
হরিকেল জনপদের অবস্থান ছিল বাংলার পূর্ব প্রান্তে। হরিকেল জনপদের রাজধানী ছিল- শ্রীহট্ট (সিলেট)। সীমানা সিলেট থেকে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
বঙ্গের প্রতিবেশী জনপদ হিসেবে সমতটের অবস্থান। গঙ্গা-ভাগীরথীর পূর্ব তীর থেকে মেঘনার মোহনা পর্যন্ত অঞ্চলকে বলা হতো সমতট। সমতটের রাজধানী- বড় কামতা, কুমিল্লা শহর থেকে দূরত্ব- ১২ মাইল। এর সীমানা বৃহত্তর কুমিল্লা ও নোয়াখালী। কুমিল্লার ময়নামতিতে শালবন বিহার অবস্থিত। হিউয়েন সাং-এর বিবরণ অনুসারে কামরূপে সমতট নামে জনপদ ছিল।
বরেন্দ্র বা বরেন্দ্রী উত্তরবঙ্গের একটি প্রাচীন জনপদ। এ জনপদটি গঙ্গা ও করতোয়ার মধ্যবর্তী অঞ্চলে গড়ে ওঠে। জনপদটির অন্য আরেকটি নাম- বারেন্দ্রী জনপদ। সীমানা ছিল রংপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর ও পাবনা জেলা (শর্টকাট- রংয়াদিপ)। পালদের পিতৃভূমি বলা হয়- বরেন্দ্র জনপদকে। বাংলাদেশের প্রথম যাদুঘর “বরেন্দ্র যাদুঘর" রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১০ সালে।
হরিকেলের দক্ষিণে অবস্থিত ছিল তাম্রলিপ্ত জনপদ । সপ্তম শতক থেকে এটি দণ্ডভুক্তি নামে পরিচিত হতে থাকে। গ্রিব বীর টলেমির মানচিত্রে বাংলায় 'তমলিটিস' নামে বন্দরনগরীর উল্লেখ পাও যায়, যা বাংলার প্রাচীনতম বন্দর।
বরিশাল জেলার পূর্ব নাম বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ। বাংলার জনপদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র জনপদ চন্দ্রদ্বীপ। এ প্রাচীন জনপদটি বালেশ্বর ও মেঘনার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ছিল। বর্তমান বরিশাল জেলাই ছিল চন্দ্রদ্বীপের মূল ভূ-খণ্ড ও প্রাণকেন্দ্র ।
রাঢ় জনপদের অপর নাম সূক্ষ্ম (রহস্যময়ী) জনপদ । রাঢ়ের রাজধানী কোটিবর্ষ। সীমানা ভাগীরথী নদীর পশ্চিম তীরবর্তী অঞ্চল ।
বাকেরগঞ্জের সীমানা খুলনা, বরিশাল, বাগেরহাট। (শর্টকাট- বাকের খুবহাটে)
সপ্তগাও এর অবস্থান বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী অঞ্চল ও খুলনা। (শর্টকাট-বঙ্গখুল)
কামরূপ জনপদ রংপুর, ভারতের জলপাইগুড়ি ও আসামের কামরূপ জেলা নিয়ে বিস্তৃত ছিল।
পাল সাম্রাজ্যের উৎসস্থল ছিল বাংলা অঞ্চল। পাল সম্রাটদের নামের শেষে 'পাল' অনুসর্গটি যুক্ত ছিল যার অর্থ "রক্ষাকর্তা"। পাল সম্রাটেরা বৌদ্ধধর্মের মহাযান ও তান্ত্রিক সম্প্রদায়ের অনুগামী ছিলেন। শশাঙ্কের মৃত্যুর পর দীর্ঘদিন বাংলায় তেমন কোন যোগ্য শাসক ছিল না ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে গৌড়ের সম্রাটপদে গোপালের নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে এই সাম্রাজ্যের পত্তন ঘটে। অধুনা বাংলা ও বিহার ভূখণ্ড ছিল পাল সাম্রাজ্যের প্রধান কেন্দ্র। এই সাম্রাজ্যের প্রধান শহরগুলি ছিল পাটলীপুত্র, বিক্রমপুর, রামাবতী (নরেন্দ্র), মুঙ্গের, তাম্রলিপ্ত ও জগদ্দল। বাংলার প্রথম বংশানুক্রমিক শাসন শুরু হয় পাল রাজত্বকালে। সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ৪০০ বছর শাসন করেন পাল বংশের রাজারা।
জেনে নিই
গোপাল পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা। গোপাল ছিলেন গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত। ৭৫০ থেকে ৭৮১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দেশ শাসন করেন। ভারতের বিহারে 'অদন্তপুরী মহাবিহার' প্রতিষ্ঠা করেন।
পাল রাজাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন ধর্মপাল। বাংলা ও বিহারব্যাপী তাঁর শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। তিনি পরমেশ্বর, পরমতারক মহারাজাধিরাজ উপাধি লাভ করেন। বিক্রমশীল উপাধি অনুসারে 'বিক্রমশীল বিহার' প্রতিষ্ঠা করেন। নওগাঁ জেলার পাহাড়পুরে ‘সোমপুর বিহার’ প্রতিষ্ঠা করেন। ধর্মপাল নেপাল পর্যন্ত রাজ্য বিস্তার করেন। 'সোমপুর বিহার' জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক ১৯৮৫ সালে বিশ্বসভ্যতার নিদর্শন হিসেবে (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ) স্বীকৃত হয়েছে।
দেবপাল ছিলেন রাজা ধর্মপালের পুত্র এবং পাল বংশের তৃতীয় রাজা। তিনি মুঙ্গেরে (বিহার) রাজধানী স্থাপন করেন।তিনি পাল সাম্রাজ্যের সবচেয়ে বেশি সাম্রাজ্য বিস্তারকারী শাসক। দেবপালের পৃষ্ঠপোষকতায় নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় বৌদ্ধ সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠে। দেবপাল আসামকে করদ রাজ্যে পরিনত করেন।
নারায়ণপাল ছিলেন পাল বংশের পঞ্চম রাজা। তিনি সবচেয়ে বেশি (৫৪ বছর) ক্ষমতায় থাকেন।
মহীপালের রাজত্বকাল ছিল ৫০ বছর। তিনি দিনাজপুরের মহীপাল দীঘি ও মুর্শিদাবাদের মহীপালের সাগরদীঘি নির্মাণ করে। তাঁর উপাধি ছিল 'পরমেশ্বর পরম ভট্টারক মহারাজাধিরাজ'। মহীপালের নামানুসারে বগুড়ার মহীপুর, রংপুরের মাহিগঞ্জ, দিনাজপুরের মাহীসন্তোষ ইত্যাদি অঞ্চলের নামকরণ করা হয়।
বরেন্দ্র অঞ্চলের সামন্তবর্ণ দ্বিতীয় মহীপালের সময়ে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। কৈবর্ত বিদ্রোহকে বরেন্দ্র বিদ্রোহ বা সামস্ত বিদ্রোহও বলা হয়। জেলে সম্প্রদায়কে কৈবর্ত বলা হলেও এটি মূলত জেলে, কৃষক, শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন নিচু শ্রেণীর কর্মজীবী মানুষকে নির্দেশ করে। কৈবর্ত বিদ্রোহের নেতা ছিলেন কৈবর্ত নায়ক দিব্যোক বা দিব্য। তিনি দ্বিতীয় মহীপালকে হত্যা করে বরেন্দ্র দখল করে শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
পাল বংশের সর্বশেষ সফল শাসক ছিলেন রামপাল। শাসক রামপাল দিব্যকে পরাজিত করে বরেন্দ্র পুনরুদ্ধার করেন। তিনি রাজধানী স্থাপন করেন 'রামাবতী' (মালদহে)। দিনাজপুর শহরের নিকট যে রামসাগর রয়েছে তা রামপালের কীর্তি। তাঁর সভাকবি ছিলেন’ রামচরিত' এর রচয়িতা কবি সন্ধ্যাকর নন্দী।
মদনপালের পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ধ্যাকর নন্দী রামচরিত রচনা করেন। তিনি বিজয় সেনের কাছে পরাজয়ের মধ্যদিয়ে সেনরা বাংলাকে দখল করেন।
সেন রাজবংশ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম দিকের মধ্যযুগীয় একটি হিন্দু রাজবংশ ছিল, সেন বংশের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় একাদশ শতাব্দীর মাঝপর্বে। সেনরাজাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে তারা পালদের হটিয়ে রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সামাজিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন সুদূর কনৌজ পর্যন্ত। কর্ণটি থেকে বৃদ্ধ বয়সে বাংলার আসেন সামন্ত সেন। তিনি প্রথমে বসতি স্থাপন করেন রাঢ় অঞ্চলে বা গঙ্গা নদীর তীরে। তিনি রাজ্য প্রতিষ্ঠা না করায় সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতার মর্যাদা দেওয়া হয় হেমন্ত সেনকে। আর বিজয় সেনকে বলা হয় সেন বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা। সেনরা জাতিতে ব্রাহ্মণ ছিলেন।
জেনে নিই
হেমন্ত সেনের মৃত্যুর পর বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন বিজয় সেন। সেন বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা বিজয় সেন। মহারাজাধিরাজ, পরমেশ্বর পরমভট্টারক উপাধি গ্রহণ করেন। পাল বংশের পতন ঘটে বিজয় সেনের হাতে। হুগলী জেলার বিজয়পুর ছিল বিজয় সেনের প্রথম রাজধানী। দ্বিতীয় রাজধানী স্থাপন করেন বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে। ধর্মের দিক থেকে বিজয় সেন ছিলেন শৈব।
বিজয় সেনের পর সিংহাসনে আরোহণ করেন তাঁর পুত্র বল্লাল সেন । 'দানসাগর' ও 'অদ্ভূতসাগর' গ্রন্থের লেখক বল্লাল সেন। ; অদ্ভুতসাগর' গ্রন্থটি তিনি সমাপ্ত করে যেতে পারেননি। এটি সমাপ্ত করে তাঁর পুত্র লক্ষ্মণ সেন। বল্লাল সেন ছিলেন তন্ত্র হিন্দুধর্মের পৃষ্ঠপোষক। বল্লাল সেনের আমলে বৌদ্ধ ধর্ম দুর্বল হয়ে পড়ে। বল্লাল সেন হিন্দু সমাজকে নতুন করে গঠন করার জন্য 'কৌলিন্য প্রথা প্রবর্তন করেন। বল্লাল সেন শেষ জীবন অতিবাহিত করেন বানপ্রস্থ অবলম্বন করেন। বল্লাল সেনের বিশেষ উপাধি ছিল- অরিরাজ নিঃশঙ্ক শঙ্কর।
গৌরেশ্বর লক্ষ্মণ সেন ছিলেন সর্বশেষ কার্যকরী রাজা। বৃদ্ধ বয়সে লক্ষ্মণ সেন গঙ্গা তীরে দ্বিতীয় রাজধানী নবদ্বীপে বসবাস শুরু করেন। ১১৯৬ খ্রিস্টাব্দে সুন্দরবন এলাকায় ডোম্মন পাল বিদ্রোহী হয়ে একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। লক্ষ্মণ সেনের প্রধানমন্ত্রী ও ধর্মীয় প্রধান ছিলেন হলায়ুধ মিশ্র। হলায়ুধ মিশ্র বাংলা সাহিত্যের অন্ধকার যুগের সৃষ্টিকর্ম 'সেক শুভোদয়া' রচনা করেন। লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি ছিলেন- জয়দেব। তার রচনা গীতগোবিন্দ। ১২০৪ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খলজি রাজধানী নদীয়া আক্রমণ করে। লক্ষ্মণ সেন নদীপথে পালিয়ে পূর্ববঙ্গের রাজধানী বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ১২৩০ সাল পর্যন্ত লক্ষ্মণ সেনের দুই পুত্র কেশব সেন ও বিশ্বরূপ সেন নামমাত্র শাসন করে।
উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদ বিন আব্দুল মালিকের খেলাফতকালে ভারতে মুসলমানদের বিজয়াভিযান শুরু হয়। তার সেনাপতি মুসা বিন নুসাইর সমগ্র উত্তর আফ্রিকা এবং তারিক স্পেন জয় করে। খলিফা ওয়ালিদের রাজত্বকালে হাজ্জাজ বিন ইউসুফ পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ (ইরাকের) শাসনকর্তা নিযুক্ত হন। তিনি ৭১২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর জামাতা মুহম্মদ বিন কাসিমকে সিন্ধু রাজা দাহিরের বিরুদ্ধে অভিযানে প্রেরণ করেন। কাসিম সর্বপ্রথম সিন্ধুর নেবল শহর অবরোধ করেন। অতঃপর তিনি সিন্ধু নদী পার হয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদে রাজা দাহিরকে আক্রমণ করেন। যুদ্ধে দাহির শোচনীয়ভাবে পরাজিত এবং নিহত হয়। মুহম্মদ বিন কাসিমের কিছু বিজয়ের ফলে উপমহাদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। কিন্তু মুহম্মদ বিন কাসিমের অকালমৃত্যুর কারণে উপমহাদেশে ইসলাম একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
মুহম্মদ বিন কাসিমের সিন্ধু বিজয়ের প্রায় ৩০০ বছর পর গজনীর সুলতান মাহমুদ ১০০০ সাল থেকে ১০২৭ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে উপমহাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে ১৭ বার অভিযান পরিচালনা করেন। সুলতান মাহমুদ শাসনকর্তা ছিলেন গজনীর (আফগানিস্থান)। সুলতান মাহমুদ ভারত আক্রমণ করেন ১৭ বার। সুলতান মাহমুদের সভাকবি ছিলেন মহাকবি ফেরদৌসী। ফেরদৌসীর রচিত অমর কাব্যগ্রন্থের নাম শাহনামা। ফেরদৌসীকে বলা হয় প্রাচ্যের হোমার। সুলতান মাহমুদ 'সোমনাথ মন্দির’ আক্রমণ করেন ১০২৬ সালে। সোমনাথ মন্দির ভারতের গুজরাটে অবস্থিত। সুলতান মাহমুদের রাজ্যসভার প্রসিদ্ধ দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ আল বেরুনী।
ময়েজউদ্দিন মুহম্মদ বিন সাম ইতিহাসে শিহাবউদ্দিন (মুহম্মদ ঘুরী) নামে অধিক পরিচিত। ধারনা করা হয় মুহম্মদ ঘুরী ছিলেন আফগান জাতির বংশধর। গজনীতে ঘুর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হলে মুহম্মদ ঘুরী উপমহাদেশে তাঁর সাম্রাজ্য বিস্তারে মনোনিবেশ করেন।
তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধের সফলতার পর মুহাম্মদ ঘুরী উত্তর উপমহাদেশের শাসনভার তার সুযোগ্য সেনাপতি কুতুবুদ্দিনের উপর ন্যস্ত করে গজনী প্রত্যাবর্তন করেন। কুতুবুদ্দিন উত্তর ভারতে রাজ্যবিস্তার করে দিল্লিতে তার রাজধানী স্থাপন করেন।
দিল্লী সালতানাত বলতে মধ্যযুগে ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসনকালকে বুঝানো হয়। ১২০৬ থেকে ১৫২৬ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ভারতে রাজত্বকারী একাধিক মুসলিম রাজ্য ও সাম্রাজ্যগুলি “দিল্লী সালতানাত” নামে অভিহিত। এই সময় বিভিন্ন তুর্কি ও আফগান রাজবংশ দিল্লি শাসন করে। এই রাজ্য ও সাম্রাজ্যগুলি হল: মামলুক সুলতান (১২০৬-৯০), খিলজি রাজবংশ (১২৯০-১৩২০), তুঘলক রাজবংশ (১৩২০-১৪১৩), সৈয়দ রাজবংশ (১৪১৩-৫১) এবং লোদি রাজবংশ (১৪৫১-১৫২৬)। এই সালতানাত মঙ্গোলদের( চাগাতাই খানাত থেকে) আক্রমণকে প্রতিহত করার কয়েকটি শক্তির মধ্যে অন্যতম বলে পরিচিত।
দাস বংশের ইতিহাস ( ১২০৬ - ১২৯০ খ্রিস্টাব্দ ) দাস বংশের ইতিহাস শুরু কুতুবউদ্দিন আইবকের হাত ধরে । কুতুবউদ্দিন আইবক ( ১২০৬ - ১২১০ খ্রিস্টাব্দ ) মহম্মদ ঘোরীর দাস ছিলেন কুতুবউদ্দিন আইবক। নিঃসন্তান ঘোরীর মৃত্যুর পর তার বিশ্বস্ত সেনাপতি তথা দাস কুতুবউদ্দিন আইবক ১২০৬ খ্রিস্টাব্দে নিজেকে স্বাধীন নরপতি ঘোষণা করেন। আইবক কথাটির অর্থ হলো দাস। কুতুবউদ্দিন আইবক ছিলেন দিল্লির প্রথম সুলতান ও ভারতে দাস বংশের প্রতিষ্ঠাতা।
কুতুবউদ্দিন আইবেক মুহম্মদ ঘুরীর একজন ক্রীতদাস হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি মুহম্মদ ঘুরীর অনুমতিক্রমে ভারত বিজয়ের পর দিল্লীতে মুসলিম শাসনের গোড়াপত্তন করেন ১২০৬ সালে। উপমহাদেশে স্থায়ী মুসলিম শাসনের প্রতিষ্ঠাতা কুতুবউদ্দিন আইবেক। ১২০৬ থেকে ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ৩০০ বছর ধরে ভারতে শাসনকারী একাধিক মুসলিম সাম্রাজ্যসমূহ দিল্লি সালতানাত নামে পরিচিত।
জেনে নিই
সুলতান ইলতুতমিশকে দিল্লী সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়। কুতুবউদ্দিন আইবেকের জামাতা ছিলেন ইলতুতমিশ। শামসুদ্দিন ইলতুতমিশের উপাধি সুলতান-ই আজম। তিনি বন্দেগান-ই-চেহেলগান বা চল্লিশ চক্র নামে দল গঠন করেন তুর্কি দাস নিয়ে। ভারতে মুসলমান শাসকদের মধ্যে তিনি প্রথম মুদ্রা প্রচলন করেন। তিনি কুতুবমিনারের নির্মাণকাজ সমাপ্ত করেন।
ইলতুতমিশের কন্যা ছিলেন সুলতানা রাজিয়া। ১২০৬ খ্রিস্টাব্দে দিল্লীর সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি ছিলেন দিল্লীর মসনদে আরোহণকারী প্রথম মুসলমান নারী।
সুলতান নাসিরউদ্দিন অত্যন্ত ধর্মভীরু লোক ছিলেন। সরল ও অনাড়ম্বর জীবনযাপনের জন্য তিনি ফকির বাদশাহ নামে পরিচিত। তিনি কুরআনের প্রলিপি ও টুপি সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
সুলতান গিয়াসউদ্দিন বিদ্যোৎসাহী ও গুণীজনের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। শান্তি শৃঙ্খলার জন্য 'রক্তপাত ও কঠোর নীতি' (Blood & Iron Policy) অবলম্বন করেন। 'মহান শাসক' উপাধি লাভ করেন তিনি। "ভারতের তোতা পাখি' (বুলবুল-ই-হিন্দু) নামে পরিচিত আমীর খসরু বলবনের দরবার অলংকৃত করতেন।
জালালউদ্দিন খলজি (ফিরুজ) ছিলেন খলজি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম সুলতান। এই বংশ ১২৯০ থেকে ১৩২০ সাল পর্যন্ত দিল্লির সুলতানি শাসন করে। জালালউদ্দিন মামলুক (কৃতদাস) রাজবংশের আধিকারিক হিসাবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। এটি দিল্লি সালতানাত শাসনকারী দ্বিতীয় রাজবংশ। এটি ছিল তুর্কি-আফগান বংশোদ্ভূত মুসলিম রাজবংশ। ১২৯০ থেকে ১৩২০ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এই রাজবংশ দক্ষিণ এশিয়ার বিরাট অংশ শাসন করে। ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি ছিলেন খলজি বংশেরই বংশধর। ১৩২০ সালে পাঞ্জাবের শাসনকর্তা গাজী মালিক সিংহাসন দখল করেন।
আলাউদ্দিন খলজী (১২৯৬-১৩১৬ খ্রিস্টাব্দ) পর্যটক ইবনে বতুতা আলাউদ্দিন খলজীকে দিল্লীর শ্রেষ্ঠ সুলতান বলে অভিহিত করেছেন। আলাউদ্দিন খলজী জনগণের সার্বিক কল্যাণের জন্য দ্রব্যের মূল্য নির্দিষ্ট করে দেন। দিল্লির বিখ্যাত আলাই দরওয়াজা তাঁরই কীর্তি। ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দিন বারনী, কবি আমির খসরু প্রমুখ গুণীজন তাঁর পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন । মুসলমান শাসক হিসাবে দক্ষিণ ভারত জয় করেন। চতুদর্শ লুইয়ের মত আলাউদ্দিন খিলজি ঘোষনা করেন আমিই রাষ্ট্র। তিনি ১৩০৬ খ্রিস্টাব্দে দেবগিরির রাজারাদের দিল্লীর আনুগত্য স্বীকারে বাধ্য করেন। আলাউদ্দিন খিলজির সময় খিলজিরা সফলভাবে মোঙ্গল আক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম হয়।
তুঘলক সাম্রাজ্যের সূচনা হয়েছিল গিয়াসউদ্দিন তুগলকের মাধ্যমে। তার মৃত্যুর পর তার ছেলে মুহাম্মদ বিন তুগলক ক্ষমতায় আসীন হন। তিনিই তুগলক সাম্রাজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটিয়েছিলেন। তারপরও মুহাম্মদ বিন তুগলক তা দূর্বল রাজ্যনীতি, অসহিঞ্চুতা এবং রহস্যময় আচরনের কারণে সমালোচিত ছিলেন। তাই বাংলা এবং উর্দুতে তুগলকি কান্ড বলতে আজব এবং অবান্তর কান্ড-কারখানাকে বুঝায়।
মুহম্মদ বিন তুঘলক অত্যন্ত প্রতিভাবান ও শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন।তিনি রাজধানী দিল্লি থেকে দেবগিরিতে স্থানান্তর করেন। উত্তর ভারতে মঙ্গলদের আক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তিনি রাজধানী দিল্লিতে ফেরত আনেন।তিনি সোনা ও রূপার মুদ্রার পরিবর্তে প্রতীক তামার মুদ্রা প্রচলন করেন। তিনি কৃষির উন্নয়নে প্রতিষ্ঠা করেন দেওয়ান-ই- কোহি নামে কৃষিবিভাগ।
তুঘলক বংশের শেষ সুলতান ছিলেন মাহমুদ শাহ। ১৩৯৮ সালে তৈমুর ভারত আক্রমণ করেন মাহমুদ শাহ এর আমলে। বিখ্যাত তুর্কি বীর তৈমুর ছিলেন মধ্য এশিয়ার সমরকদের অধিপতি। শৈশবে তাঁর একটি পা খোড়া হয়ে যায় বলে তিনি তৈমুর লঙ নামে পরিচিত।
খানজাহান আলী ছিলেন একজন মুসলিম ধর্মপ্রচারক। খানজাহান আলীর উপাধি উল্লুগ খান খান-ই-আজম। খান জাহান আলী তুঘলক সেনাবাহিনীতে সেনাপতির পদে যোগদান করেন- ১৩৮৯ সালে। তিনি রাজা গণেশকে পরাজিত করে বাংলার দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে ইসলামের পতাকা উড্ডীন করেন। তিনি বাগেরহাট জেলায় বিখ্যাত ষাটগম্বুজ মসজিদ (১৪৩৫-১৪৫৯ খ্রিস্টাব্দ) নির্মাণ করেন। মসজিদের নাম ষাট গম্বুজ হলেও মসজিদে গম্বুজ মোট ৮১টি তবে মসজিদের ভিতরে ষাটটি স্তম্ভ আছে। এটি বাংলাদেশের মধ্যযুগের সবচেয়ে বড় মসজিদ। ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো একে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করে।
১৫২৬ সালে পানি পথের প্রথম যুদ্ধে বাবরের নিকট দিল্লির লোদী বংশের সর্বশেষ সুলতান ইব্রাহিম লোদীর পরাজয়ের মাধ্যমে দিল্লি সালতানাতের ৩২০ বছরের অবসান ঘটার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় মুঘল শাসনামল।
১৫২৬ সালে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইবরাহিম লোদির বিরুদ্ধে বাবরের জয়ের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা হয়। মুঘল সম্রাটরা ছিলেন মধ্য এশিয়ার টাকো মঙ্গোল বংশোদ্ভূত। তারা চাগতাই খান ও তৈমুরের মাধ্যমে চেঙ্গিস খানের বংশধর। ১৫৫৬ সালে আকবরের ক্ষমতারোহণের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের ধ্রুপদী যুগ শুরু হয়। ১৫৭৬ সালে যুদ্ধে সম্রাট আকবর বাংলায় মুঘল শাসনের সূত্রপাত করেন মুঘল সাম্রাজ্যের মোট শাসক ছিলেন ১৭ জন, এদের মাঝে প্রসিদ্ধ হলেন ৬ জন। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের পরাজয়ের ফলে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহর রেঙ্গুনে নির্বাসিত করা হয়। নির্বাসনের মধ্য দিয়ে মুঘল সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।
জহিরুদ্দিন মুহম্মদ বাবর তার সাহসিকতা ও নির্ভীকতার জন্য ইতিহাসে বাবর নামে প্রসিদ্ধ। বর্তমান রুশ-তুর্কিস্তানের অন্তর্গত ফারগানা নামক রাজ্যে বাবরের জন্ম। বাবর পিতার দিক থেকে তৈমুর লং এবং মায়ের দিক থেক চেঙ্গিস খানের বংশধর ছিলেন। বাবর শব্দের অর্থ সিংহ। বাবর ফারগানার সিংহাসনে আরোহন করেছিলেন মাত্র ১১ বছর বয়সে।
জেনে নিই
সম্রাট বাবরের মৃত্যুর পর ১৫৩০ সালের ডিসেম্বরে হুমায়ূন পিতার সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হন। ১৫৩৮ সালে তিনি বাংলার গৌড় অধিকার করেন। গৌড় নগরের অপরূপ সৌন্দর্য তাকে বিমোহিত করে ফলে এর নাম রাখেন 'জান্নাতাবাদ'। হুমায়ূন কনৌজের যুদ্ধে ১৫৪০ সালে শেরশাহের নিকট পরাজিত হয়ে দিল্লি ত্যাগ করেন। ১৫৪০-১৫৫৫ খ্রি: পর্যন্ত শেরশাহের নেতৃত্বে ভারতবর্ষে শুরশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৫৫৫ সালে ১৫ বছর পর হুমায়ুন পুনরায় পারস্য সাম্রাজ্যের সহায়তায় মুঘল শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন।
জেনে নিই
শেরশাহ সম্রাট বাবরের সেনাবাহিনীর সেনা নায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১৫৩৯ সালে চৌসারের যুদ্ধে দূর্বল হুমায়ুনকে পরাজিত করে শেরখান শেরশাহ উপাধি ধারন করেন। তিনি নিজেকে বিহারের স্বাধীন সুলতান হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৫৪০ সালে তিনি বাংলা দখল করেন এবং হুমায়ুনকে পরাজিত করে দিল্লি। অধিকার করে উপমহাদেশে আফগান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
জেনে নিই
ভারতবর্ষের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক ১৫৫৬ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে আকবর ভারতের শাসনতার গ্রহণ করেন। ১৫৫৬ সালে হিমু দিল্লি দখল করে নিলে বৈরাম খান (আকবরের প্রধান সেনাপতি) পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে হিমুকে পরাজিত করে দিল্লি অধিকার করেন। আকবর | বৈরাম খানকে খান-ই বাবা বলে ডাকতেন। বৈরাম খানের তত্ত্বাবধানে তিনি সময় দক্ষিণ এশিয়ার সাম্রাজ্য বিস্তার করেন। ১৫৬০ সালে আকবর পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা গ্রহন করেন।
জেনে নিই
সম্রাট আকবরের সংস্কারমূলক অবদান
সম্রাট আকবর ১৫৭৬ সনে বাংলা জয় করলেও বারো ভূঁইয়াদের কারনে মুঘল শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। পরে, সম্রাট জাহাঙ্গীর বাংলায় মুঘল শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত করেন এবং বাংলার রাজধানী রাজমহল হতে ঢাকায় স্থানান্তর করেন। সম্রাট জাহাঙ্গীরের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ তুজুক-ই জাহাঙ্গীর। তিনি এদেশের সরকারি কাজে ফারসি ভাষা চালু করেন। সম্রাট জাহাঙ্গীরের সাথে নুরজাহানের বিবাহ মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
জেনে নিই
সম্রাট জাহাঙ্গীরের পরে মুঘল সাম্রাজ্যের ৫ম শাসক হন শাহজাহান। Prince of Builders বলা হয় স্থাপত্য শিল্পের অবদান ও আগ্রহের কারনে। তাজমহল ও ময়ূর সিংহাসনসহ বিভিন্ন স্থাপত্য তার শ্রেষ্ঠ নির্মানশৈলী। ১৬৩৩ সালে ইংরেজদের প্রথম বাণিজ্য কুঠি (পিপিলাই) স্থাপন করার অনুমতি দেন শাহজাহান। শাহজাহান' উপাধি প্রদান করেন তার পিতা সম্রাট জাহাঙ্গীর।
জেনে নিই
তাজমহল আগ্রার যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত । নির্মাণের সময়কাল (১৬৩২-১৬৫৩) খ্রিস্টাব্দ। এর স্থপতি ওস্তাদ লাহোরী, ওস্তাদ ঈশা খাঁ। তাজমহল নির্মাণ করেন ২০ হাজার শ্রমিক ২২ বছরে। এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করা হয় ১৯৮৩ সালে।
শাহজাহানের স্ত্রী মমতাজ মহলের গর্ভে চারপুত্র ও দুই কন্যা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পুত্রদের নাম দারা, সুজা, আওরঙ্গজেব ও মুরাদ। কন্যাদের নাম ছিল জাহান আরা ও রওশন আরা। ভ্রাতৃযুদ্ধে জাহান আরা দারার পক্ষ এবং রওশন আরা আওরঙ্গজেবের পক্ষ সমর্থন করে। যুদ্ধে অপর ভাইদের পরাজিত করে আওরঙ্গজেব ক্ষমতা দখল করেন। সম্রাট শাজাহান তাঁর পুত্র আওরঙ্গজেবকে যোগ্যতার স্বীকৃতিস্বরূপ 'আলমগীর' নামক তরবারী প্রদান করেন। জিন্দাপীরের সম্মানে বাংলার সুবাদার মীর জুমলা ১৬৬১ খ্রি. বিনাযুদ্ধে কুচবিহার মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। এসময় কুচবিহারের নাম রাখা হয়েছিল ‘আলমগীরনগর’।
জেনে নিই
দুর্বল ও অকর্মণ্য মুঘল সম্রাট মুহম্মদ শাহ এর আমলে (১৭৩৯ খ্রিস্টাব্দে) পারস্যের নাদির শাহ ভারত আক্রমণ করেন। নাদির শাহ ভারত হতে মহামূল্যবান কোহিনুর হীরা, ময়ূর সিংহাসন এবং প্রচুর ধনরত্ন পারস্যে নিয়ে যান।
শেষ মুঘল সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ। ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের পর ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে রেঙ্গুনে (বর্তমান ইয়াঙ্গুনে) নির্বাসন দেওয়া হয়। ১৮৬২ সালে তিনি রেঙ্গুনে নির্বাসিত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। রেঙ্গুনেই তাঁকে সমাহিত করা হয়।
মুহম্মদ ঘুরীর সেনাপতি কুতুবউদ্দিন আইবেকের আদেশক্রমে তুর্কী বার ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খলজী ১২০৪ সালে মাত্র ১৭-১৮ জন অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে বাংলার শেষ স্বাধীন সেন বংশের রাজা লক্ষণ সেনকে পরাজিত করে বাংলা দখল করেন। বখতিয়ার খলজীর বাংলা অধিকারের মাধ্যমে বাংলায় মুসলিম শাসনের সূচনা হয়। তিনি দিনাজপুরের দেবকোটে বাংলার রাজধানী স্থাপন করেন।
বাংলায় মুসলিম শাসনের প্রাথমিক পর্যায় ছিল (১২০৪-১৩৩৮) সাল পর্যন্ত। এ যুগের শাসকগণ সবাই দিল্লির সুলতানের অধীনে বাংলার শাসনকর্তা হয়ে এসেছিলেন। বাংলার অনেক শাসনকর্তাই দিল্লির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে স্বাধীন হতে চেয়েছিলেন। বারংবার এমন বিদ্রোহ সংঘটিত হওয়ার জন্য দিল্লির ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দিন বারানী “তারিখ- ই-ফিরোজশাহী" গ্রন্থে বাংলার নাম দিয়েছিলেন বুলগাকপুর বা বিদ্রোহের নগরী।
বাংলায় তুর্কী শাসক
দিল্লির সুলতানগণ (১৩৩৮-১৫৩৮) এ দুইশত বছর বাংলাকে তাদের অধিকারে রাখতে পারেনি। এ সময় বাংলার সুলতানরা স্বাধীনভাবে বাংলা শাসন করেন। ১৩৩৮ সালে সোনারগাও এর শাসক বাহরাম খানের মৃত্যু হলে তার বর্মরক্ষক 'ফখরা' সুযোগ বুঝে নিজে ফখরুদ্দিন মুবারক শাহ নামধারণ করে সোনারগাওয়ের সিংহাসন দখল করেন।
খরউদ্দিন মুবারক শাহের পূর্বনাম ফখরা। তিনি ছিলেন বাংলার প্রথম স্বাধীন সুলতান। তিনি সোনারগাঁয়ের শাসন ক্ষমতা দখল ও স্বাধীনতা ঘোষণা করেন- ১৩৩৮ সালে । স্বাধীন সুলতান হিসাবে তিনি উপাধি গ্রহণ করেন ফখরউদ্দিন মুবারক শাহ। তিনি চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত রাজপথ নির্মাণ করেন। ইবনে বতুতা তার আমলে (১৩৪৬) সালে বাংলায় আসেন।
শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ অবিভক্ত বাংলার প্রথন মুসলিম স্বাধীন সুলতান ছিলেন এবং ইলিয়াস শাহী বংশের করেন। ইলিয়াস শাহী বংশ ১৩৪২ সাল থেকে ১৪১৫ সাল পর্যন্ত একটানা ৭৩ বছর ধরে অবিভক্ত বাংলা শাসন করে।
জেনে নিই
পাণ্ডুয়ার আদিনা মসজিদ সিকান্দার শাহের অমর কীর্তি। তিনি সবচেয়ে দীর্ঘসময় ক্ষমতায় থাকা সুলতান। সুলতান সিকান্গৌদার শাহ গৌড়ের কোতয়ালী নরজা নির্মাণ করেন।
সবচেয়ে জনপ্রিয় সুলতান ছিলেন গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ। আজম শাহ বাংলা ভাষার পরম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তাঁর সময়ে ইউসুফ জোলেখা রচনা করেন কবি শাহ মুহম্মদ সগীর । এ সময় কৃত্তিবাসের রামায়ণ বাংলা অনুবাদ করা হয়। পারস্যের কবি হাফিজের সাথে তিনি পত্রালাপ করতেন।
বাংলার স্বাধীন সুলতানদের মধ্য সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন আলাউদ্দিন হুসাইন শাহ। তাকে বলা হয় বাংলার আকবর, তার শাসনামলকে বাংলার স্বর্ণযুগ বলা হয়। হুসাইন শাহের আমলে বাংলার রাজধানী ছিল গৌড় । তিনি সংগ্রাম থেকে আরাকানীদের বিতাড়িত করেন। হুসাইন শাহের রাজত্বকালে শ্রীচৈতন্য বৈষ্ণব আন্দোলন (বৃন্দাবন) গড়ে তোলেন। হুসাইন শাহের সেনাপতি কবীন্দ্র পরমেশ্বর বাংলা ভাষায় মহাভারত রচনা করেন। বিপ্রদাস, বিজয়গুপ্ত, যশোরাজ খান প্রমুখ সাহিত্যিকগণ তাঁর পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন। হুসেন শাহী আমলে বাংলা গজল ও সুফী সাহিত্যের সৃষ্টি হয়। তাঁর শাসনামলে গৌড়ের ছোট সোনা মসজিদ ও গুমতিদ্বার নির্মিত হয়।
গৌড়ের বিখ্যাত বড় সোনা মসজিদ (বারদুয়ারি মসজিদ) নির্মাণ করে। সুলতান নাসির উদ্দিন নুসরাত শাহের অমরকীর্তি- কদম রসুল। তার সময়ে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাংলার শেষ স্বাধীন সুলতান ছিলেন গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ শাহ। ১৫৩৮ সালে শেরশাহ গৌড় দখলের মাধ্যমে বাংলায় স্বাধীন সুলতানী যুগের অবসান ঘটে।
সম্রাট আকবর পুরো বাংলার উপর অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। বাংলার শক্তিশালী জমিদারগণ মুঘলদের বশ্যতা স্বীকার করেনি। স্বাধীনতা রক্ষার্থে তারা একজোট হয়ে মুঘল সেনাপতির বিরুদ্ধে লড়াই করতেন। বাংলার ইতিহাসে ভাটি অঞ্চলের এ জমিদারগণ বারো ভূঁইয়া নামে পরিচিত।
কয়েকজন শাসক
বারো ভূঁইয়াদের নেতা ছিলেন ঈসা খান। তিনি বাংলার ধানী হিসেবে সোনারগাও এর গোড়া পত্তন করেন। সম্রাট আকবরের সেনাপতিরা বারো ভূঁইয়াদের নেতা ঈসা খাঁকে পরাজিত করতে ব্যর্থ হন। ঈসা খাঁর মৃত্যুর পর বারো ভূঁইয়াদের নেতা হন ঈসার পুত্র মুসা খান। তার আমলেই বাংলার বারো ভূঁইয়াদের চূড়ান্তভাবে দমন করা হয়। সুবেদার ইসলাম খান বারো ভূঁইয়ানের নেতা মুসা খানদের পরাস্ত করেন। এগারসিন্ধুর গ্রাম (কিশোরগঞ্জ) ইসা খানের নাম বিজড়িত মধ্যযুগীয় একটি দূর্গ।
১৫৭৬ সালে রাজমহলের যুদ্ধে বাংলার শেষ আফগান শাসক দাউদ কররানী পরাজিত হলে বাংলায় মুঘল শাসন শুরু হয়। এ সময় মুঘল শাসক ছিলেন সম্রাট আকবর। সুবাদারি ও নবাবি এ দুই পর্বে বাংলায় মুঘল শাসন অতিবাহিত হয়। বারোভূঁইয়াদের দমনের পর সমগ্র বাংলায় সুবেদারী প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সময় সমগ্র বঙ্গ দেশ সুবহ-ই-বাঙ্গালাহ নামে পরিচিত হয়। মুঘল প্রদেশগুলো সুবা নামে পরিচিত ছিল। প্রাদেশিক শাসনকর্তাকে বলা হতো সুবাদার।
মানসিংহ সম্রাট বরের সেনাপতি ছিলেন। তিনি বাংলা দখল নেওয়ার প্রচেষ্ঠা চালান এবং বারো ভূঁইয়াদের দমন করতে ব্যর্থ হন।
১৬০৮ সালে ইসলাম খানকে সুবেদার হিসেবে নিয়োগ দেয় সম্রাট জাহাঙ্গীর। তিনি বারো ভূঁইয়াদের দমন করে সমগ্র বাংলায় সুবাদারি শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৬১০ সালে বিহারের রাজমহল থেকে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে আসেন। সুবেদার ইসলাম খান ঢাকার নামকরণ করেন জাহাঙ্গীরনগর। ইসলাম খান ঢাকার 'ধোলাই খাল খনন করেন। তিনি বাংলার নৌকা বাইচ উৎসবের সূচনা করেন।
শায়েস্তা খান বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হন ১৬৬৪ খ্রিস্টাব্দে। আওরঙ্গজেবের মামা ছিলেন শায়েস্তা খান। চট্টগ্রাম অধিকার করে আরাকানি মগ জলদস্যুদের উৎখাত করেন। আরাকানি জলদস্যুদের হটিয়ে তিনি চট্টগ্রামের নাম রাখেন ইসলামাবাদ। শায়েস্তা খান বাংলা থেকে ইংরেজদের বিতাড়িত করেন। টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যেত শায়েস্তা খানের আমলে। তাঁর আমলের স্থাপত্যশিল্প ছোট কাটরা, লালবাগ কেল্লা, চক মসজিদ, সাত গম্বুজ মসজিদ, পরি বিবির মাজার (শায়েস্তা খানের মেয়ে), হোসেনী দালান, বুড়িগঙ্গার মসজিদ, প্রভৃতি।
কাশিম খান জুয়ানি সম্রাট শাহজাহান কর্তৃক নিয়োগকৃত প্রথম সুবেদার। পর্তুগিজদের অত্যাচারের মাত্রা চরমে পৌঁছলে সম্রাট শাহজাহানের আদেশে কাসিম খান তাদেরকে শক্ত হাতে দমন করেন।
সম্রাট শাহজাহানের ২য় পুত্র শাহ সুজা ২০ বছর বাংলায় সুবাদারি করেন। তিনি ইংরেজদের বিনা শুল্কে বানিজ্য করার সুযোগ নেন। শাহজাদা সুজা ঢাকার চক বাজারে 'বড় কাটরা মসজিদ নির্মাণ করেন। সুজা তার ভ্রাতা আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন।
আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলা সুজাকে দমনের জন্য বাংলার রাজধানী জাহাঙ্গীরনগর পর্যন্ত এসেছিলেন। সম্রাট আওরঙ্গজেব তাঁকে বাংলার সুবাদারের দায়িত্ব নেন। তিনি ঢাকা গেট (পূর্ব নাম মীর জুমলা) নির্মাণ করেন। কৃষকদের নিকট থেকে প্রথম কর আদায় করেন।
পরিবিবি ছিলেন শায়েস্তা খানের কন্যা। পরিবিবির আসল নাম ইরান দুখত রহমত বানু। লালবাগ দুর্গের মাঝখানে বর্গাকার ভবনটিতে তার কবর।
১৩৫২ সালে সুলতান ইলিয়াস শাহ ১৬ টি জনপদ একত্রিত করে বঙ্গের নাম দেন বাঙ্গালাহ ।
১৫৩৮ সালে মুঘল সম্রাট হুমায়ুন গৌড়ের সৌন্দর্য দেখে বাঙ্গালার নাম দেন 'জান্নাতাবাদ'।
১৫৭৬ সালে মুঘল সম্রাট আকবর জান্নাতাবাদ নামকরণ করে ‘সুবে বাংলা’। সুবে অর্থ প্রদেশ।
লর্ড কার্জনের আমলে ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হলে বঙ্গের নাম হয় ‘পূর্ব বঙ্গ’ ।
১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সরকার সাংবিধানিক ভাবে পূর্ব বঙ্গের নাম 'পূর্ব পাকিস্তান' হয়।
১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব বাংলার নামকরণ করেন বাংলাদেশ।
মুর্শিদ কুলি খান বাংলায় প্রথম স্বাধীন নবাবী রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন ১৭১৭ সালে। তাঁর সময় সুবাকে বলা হতো ‘নিজামত’ আর সুবাদারের বদলে পদবি হয় ‘নাজিম’। সম্রাট ফররুখ শিয়ার শাসনকালে মুর্শিদকুলি খান বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হন। তিনি বার্ষিক ১ কোটি ৩ লক্ষ টাকা রাজস্ব পাঠাতেন। তাঁর শাসনামলে বাংলা সুবা বাংলা প্রায় স্বাধীন হয়ে পড়ে।
আলীবর্দি খান বাংলার প্রথম প্রকৃত স্বাধীন নবাব । তিনি মুঘল সম্রাটদের রাজস্ব প্রদান বন্ধ করেন। মুসলমান শাসনামলে এদেশে এসে অত্যাচার ও লুট করেছে বর্গীরা। বাংলা থেকে মারাঠা বর্গীদের বিতাড়িত করেন আলীবর্দি খান।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার কলকাতা অভিযানের সময় হলওয়েলসহ কতিপয় ইংরেজ কর্মচারী ফোর্ট উইলিয়ামে বন্দী হয়ে ছিলেন। হলওয়েলের বর্ণনা অনুসারে জানা যায়, নবাব ১৪৬ জন ইউরোপীয় ইংরেজ বন্দীকে একটি ক্ষুদ্র অন্ধকার প্রকোষ্ঠে আবদ্ধ রাখেন। প্রচন্ডে গরমে ক্ষুদ্র জায়গায় ১৪৬ জনের মধ্যে ১২৩ জন শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায়। হলওয়েল কর্তৃক প্রচারিত এই কাহিনি অন্ধকূপ হত্যা নামে প্রচারিত হয়। অন্ধকূপ হত্যার ঐতিহাসিক সত্যতা পাওয়া যায়নি।
সিরাজউদ্দৌলার প্রকৃত নাম মির্জা মোহাম্মদ বেগ। তিনি ছিলেন শেষ স্বাধীন নবাব। আলীবর্দি খান নবাব উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন তাঁর কনিষ্ঠ কন্যা আমেনা বেগমের পুত্র সিরাজউদ্দৌলাকে। ১৭৫৬ সালে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার সিংহাসনে বসেন মাত্র ২৩ বছর বয়সে। ১৭৫৬ সালে ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ দখল করে নেন এবং কলকাতার নাম রাখেন আলীনগর।
পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয় ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন। এ যুদ্ধে ইংরেজদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন রবার্ট ক্লাইভ। আলীবর্দির প্রথম কন্যা ঘষেটি বেগমের ইচ্ছে ছিল তাঁর দ্বিতীয় ভগ্নির পুত্র শওকত জঙ্গ নবাব হবেন। ফলে তিনি সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে সাহায্য করেন সেনাপতি মীর জাফর, খালা ঘসেটি বেগম, রায়দুর্লভ, জগৎশেঠ, উমিচান, রাজবল্লভ প্রমুখ। নবাবের পক্ষে যুদ্ধ করেন মীরমদন, মোহনলাল ও ফরাসী সেনাপতি সিনফ্রে ।
১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশির যুদ্ধে নবাবের সেনাপতি মীর জাফর বিশ্বাসঘাতকতা করে যুদ্ধে অংশগ্রহণে বিরত থাকেন। বিশ্বাসঘাতকতায় অসহায়ভাবে পরাজয় বরণ করেন সিরাজউদ্দৌলা। পলাশির যুদ্ধের মধ্য দিয়ে সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজরা বাংলায় রাজনৈতিক শাসনের ভিত্তি স্থাপন করে। মুঘল সাম্রাজ্যের স্থিতিকাল প্রায় ৩৩১ বছর (১৫২৬-১৫৫৭)। তবে ১৭৫৮ সাল পর্যন্ত প্রতীকি দায়িত্ব টিকে ছিল মুঘলদের। সর্বশেষ সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ।
মীর কাসিম ছিলেন মীর জাফরের জামাতা। তিনি ১৭৬০ সালে বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। মীর কাসিম ছিলেন একজন সুযোগ্য শাসক ও একনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক। তাই প্রশাসনকে ইংরেজ প্রভাবমুক্ত করার জন্য বিচক্ষণ নবাব সর্বাগ্রে রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে মুঙ্গেরে স্থানান্তরিত করেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে মীর কাশিমের যুদ্ধ হয় বক্সার নামক স্থানে, যুদ্ধে কাশিমকে পরাজিত করে ব্রিটিশ বেনিয়ারা শাসন পাকাপোক্ত করে।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতীয় উপমহাদেশে বাণিজ্য করার জন্য ষোড়শ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত একটি জয়েন্ট-স্টক কোম্পানি। এর সরকারি নাম "ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি"। ১৬০০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ইংল্যান্ডের তৎকালীন রাণী প্রথম এলিজাবেথ এই কোম্পানিকে ভারতীয় উপমহাদেশে বাণিজ্য করার রাজকীয় সনদ প্রদান করেছিলেন।
ভারতবর্ষে বাণিজ্য বিস্তারের লক্ষ্যে (১৬০০ সালে) The British East India Company ইংল্যান্ডে স্থাপিত হয়। Dutch East India Company ( ১৬০২ সালে)। ১৬১৬ সালে বাংলায় প্রবেশ করলেও ব্রিটিশদের সাথে টিকে থাকতে না পেরে কিছুকাল পরে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার দিকে চলে যায়। ফরাসিরা French East India Company প্রতিষ্ঠা করে (১৬৬৪ সালে) বাংলায় প্রবেশ করে তবে ইংরেজদের সাথে তিন দফা যুদ্ধে হেরে তারাও প্রায় একশ বছরের বাণিজ্য গুটিয়ে ইন্দোচীনের দিকে চলে যায়।
১৯৪৮ সালে ইউরোপের যুদ্ধরত বিভিন্ন দেশের মধ্যে ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তি (Thirty Years War) সমাপ্তি ঘটে এই শান্তিচুক্তির মাধ্যমে। এটি সম্পাদিত হওয়ার পর শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে ইউরোপীয় বিভিন্ন জাতি নতুন উদ্যমে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ে। এদের অধিকাংশের লক্ষ্য ছিল প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ ভারতবর্ষ (জম্বুদ্বীপ)|
ভারতে আসার জলপথ আবিষ্কার (১৪৮৭ সালে) পর্তুগিজরা। ১৪৮৭ সালে বার্ণলোমিউ দিয়াজ উত্তমাশা অন্তরীপে পৌঁছান। ভাস্কো দা গামা আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত উত্তমাশা অন্তরীপ (Cape of Good hope) হয়ে ১৪৯৮ সালে ভারতবর্ষে আসেন ভাস্কো দা গামা। ভারতে আসতে ভাস্কো দা গামা আরব নাবিকদের সাহায্য নেন। তিনি কালিকট বন্দরে পৌঁছান। পর্তুগিজ জলদস্যুদের বলা হত- হার্মাদ। ভারতে পর্তুগিজদের প্রথম গভর্নর ছিলেন- আলবুকার্ক। ইউরোপীয়দের মধ্যে পর্তুগিজরা প্রথম ভারতে আসে ও ঘাঁটি স্থাপন ১৫১৬ সালে। ভারতে পর্তুগিজ বা ইউরোপীয়দের প্রথম দুর্গ ছিল কোচিনা। তারা বাংলায় 'ফিরিঙ্গি' নামে পরিচিত ছিল।
ওলন্দাজরা বাংলায় আসে ১৬০২ সালে। নেদারল্যান্ড বা হল্যান্ডের অধিবাসীদের বলা হয় ওলন্দাজ বা ডাচ । উপমহাদেশে তাদের বণিকদের মসলার শ্রেষ্ঠ ব্যবসা গড়ে তোলে। পরবর্তীতে তারা ইন্দোনেশিয়াতে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল।
কলকাতা নগরীর প্রতিষ্ঠাতা জব চার্নক। ব্যবসার উদ্দেশ্যে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গঠন করে ১৬০০ সালে। বাংলায় ইংরেজরা প্রথম কুঠি স্থাপন করেন ১৬০২ সালে পিপিলাই (উরিষ্যা)। ইংরেজরা কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণ করেন ১৭০০ সালে। ফররুখশিয়া কোম্পানিকে বিনা শুল্কে বাণিজ্য করার অধিকার দেন ১৭১৭ সালে। ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি দেওয়ানী লাভ করেন ১৭৬৫ সালে দ্বিতীয় শাহ আলমের সময়ে, মাত্র বাৎসরিক ২৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে।
ডেনমার্কের অধিবাসীদের বলা হয় ডেনিশ বা দিনেমার। ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গঠন করে ১৬১৬ সালে। দিনেমাররা তাদের বানিজ্যকুঠি বিক্রি করে দেন ইংরেজদের কাছে।
ইউরোপীয়দের মধ্যে ফরাসিরা সবার শেষে আসে ১৬৬৮ সালে। ফরাসিরা সর্বপ্রথম ভারতে বাণিজ্য কুঠির স্থাপন করে- সুরাটে। ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৬৬৪ সালে । ফরাসিরা শ্রেষ্ঠ ফ্যাক্টরি/কুঠি নির্মাণ করে চন্দন নগরে। ইংরেজরা চন্দন নগর কুঠি দখল করে ১৭৫৭ সালে । পুণ্ডিচেরী নামক ফরাসি উপনিবেশটি স্থাপন করে ফ্রাঁসোয়া মার্টিন।
রবার্ট ক্লাইভ ছিলেন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাপতি এবং ব্রিটিশ উপনিবেশবাদী। তিনি ভারত উপমহাদেশে ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদের সূচনা করেন। তার উপাধি ছিল পলাশীর প্রথম ব্যারন। পলাশীর যুদ্ধে তার নেতৃত্বে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাদল বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার সৈন্যদলকে পরাজিত করে।
রবার্ট ক্লাইভ উপমহাদেশের প্রথম ইংরেজ গভর্নর। ক্লাইভ দিল্লির সম্রাট শাহ আলমের সাথে এলাহাবাদে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। বাৎসরিক মাত্র ২৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে দেওয়ানি প্রদান করেন। এই চুক্তির ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে।
দিল্লির সম্রাট শাহ আলমের নিকট দেওয়ানি লাভের পর বাংলার নবাবী শাসন ধূলিসাৎ হয়।
নবাবকে বৃত্তিভোগীতে পরিণত করে রবার্ট ক্লাইভ দ্বৈত শাসন প্রবর্তন করেন ১৭৬৫ সালে।
দ্বৈত শাসন ব্যবস্থায় বাংলার নবাবের উপর শাসন ও বিচার বিভাগের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।
ক্লাইভ রাজস্ব আদায় ও প্রতিরক্ষার দায়িত্ব ন্যস্ত করেন কোম্পানির উপর।
দ্বৈত শাসন ব্যবস্থার মারাত্মক পরিণতি হল ছিয়াত্তরের মন্বস্তর।
ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের সময় বাংলার গভর্নর ছিলেন লর্ড কার্টিয়ার।
ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের (১১৭৬ বঙ্গাব্দ) বা ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দঃ
দ্বৈত শাসনের আওতায় রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব পেয়ে ইংরেজরা প্রজাদের উপর অতিরিক্ত কর আদারে অত্যাচার শুরু করে। অতিরিক্ত করের চাপে যখন জনগণ ও কৃষকের নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা একই সময়ে তিন বছর অনাবৃষ্টির ফলে খরায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। নেমে আসে দুর্ভিক্ষের করাল গ্রাস। দুর্ভিক্ষে লক্ষ লক্ষ লোক অনাহারে মারা গেলেও কোম্পানি করের বোঝা কমানোর কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এই দুর্ভিক্ষে বাংলার প্রায় এক তৃতীয়াংশ (এক কোটি) লোকের মৃত্যু হয়। ইতিহাসে এটি ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত।
দ্বৈত শাসন ব্যবস্থায় ইংরেজ কোম্পানির অত্যাচার নিপীড়নের বিভিন্ন দিক ব্রিটিশ পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হলে ইংল্যান্ডে দ্বৈত শাসনের বিরুদ্ধে তুমুল তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। এজন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সুপারিশক্রমে ভারত শাসন সংক্রান্ত রেগুলেটিং অ্যাক্ট, ১৭৭৩ কার্যকর করা হয়। এর ফলে কোম্পানির গভর্নরের পদ গভর্নর জেনারেল পদে উন্নীত হয় ।
তেতাল্লিশের দুর্ভিক্ষ(১৯৪৩)/পঞ্চাশের মন্বন্তর(১৩৫০) এর সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন উইনস্টন চার্চিল। ১৯৪০ সালের ঘূর্ণিঝড় এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান ১৯৪২ সালে বার্মা (মায়ানমার) দখল করলে চাল আমদানির পথ বন্ধ হয়ে যায়।
সমসাময়ীক গ্রন্থঃ মধুশ্রী মুখোপাধ্যায়ের Churchill's Secret War, বিভূতিভূণের উপন্যাসঃ "অসনি সংকেত'। চলচিত্রঃ সত্যজিৎ রায়ের 'অসনি সংকেত' (১৯৭৩), মৃণাল সেনের 'আকালের সন্ধানে' (১৯৭০)। চিত্রকর্মঃ জয়নুল আবেদীনের 'ম্যাডোনা-৪৩'।
১৯০৩ সালের ব্রিটিশ সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৯০৫ সালের ১৬ই অক্টোবর বঙ্গভঙ্গ আইন কার্যকর হয়। বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি রাজাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। একটি পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশ এবং অন্যটি পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ ।
১৯১১ সালের বঙ্গভঙ্গ রদের মাধ্যমে পূর্ব বাংলার মুসলিম সমাজের স্বার্থ ক্ষুন্ন হওয়ায় ১৯১২ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ। ভাইসরয়ের সাথে নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, এ. কে. ফজলুল হক ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এ অঞ্চলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। ১৯১২ সালের ২৭শে মে গঠিত হয় ব্যারিস্টার রবার্ট নাথানের নেতৃত্বে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট ঢাকা ইউনিভার্সিটি কমিটি যেটি পরিচিতি পায় নাথান কমিশন' নামে। ১৯১৩ সালে প্রকাশিত হয় নাথান কমিটির ইতিবাচক রিপোর্ট । ১৯২১ সালের ১লা জুলাই কলা, বিজ্ঞান ও আইন এই ৩ অনুষদ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু করে লর্ড রিডিং এর আমলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন স্যার জে. হার্টজ।
লর্ড কর্নওয়ালিস ১৭৯৩ সালে (২৩ মার্চ) বাংলায় চিরস্থায়ী ভূমি ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন।
১৭৫৭ সালের পলাশী যুদ্ধের পর বাঙ্গালী সমাজ ইংরেজদের অপশাসন মেনে নিতে পারেনি। ফলে সাধারণ মানুষের মাঝে পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের মাধ্যমে।
১৮৫৬ সালে এনফিল্ড নামক এক প্রকার রাইফেল ব্যবহার শুরু হয়। এই বন্দুকের কার্তুজ দাঁত দিয়ে কেটে ব্যবহার করতে হতো। গুজব রটে যে, এই বলুকের কার্বুজ গরু ও শুয়োরের চর্বি নিয়ে তৈরী। হিন্দু-মুসলমান সৈনিকদের মনে ধারণা জন্মে যে, তাদের ধর্ম বিনষ্ট করার জন্য এই ব্যবস্থা করেছে। ১৮৫৭ সালের ২৯ মার্চ ব্যারাকপুরের দমদমে সিপাহি মঙ্গলপান্ডে কার্তুজ ব্যবহারে অস্বীকৃতি জানান এবং তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আক্রমণ করেন।
জেনে নিই
অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে ইউরোপের শিল্প বিপ্লব (১৭৬০-১৮৪০) এর সময় বস্ত্রশিল্পের এক অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়। ফলে কাপড়ে রং করার জন্য নীলের চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়। এ ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় নীলচাষে বাধ্য করে ইংরেজরা। কিন্তু নীলকররা নীলচাষীদের নানাভাবে অত্যাচার করত, প্রাপ্য দিতনা। নীল চাষে অসম্মতি জানালে তাদের উপর নেমে আসত অবর্ণনীয় নির্যাতন। নীল ব্যবসার জন্য গড়ে উঠে নীল কুঠি।
জেনে নিই
১৮৭৫ সালের পর মুসলিমদের শিক্ষার উন্নয়নে আলীগড় কলেজকে কেন্দ্র করে যে স্বতন্ত্র রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ধারা সৃষ্টি হয়, তাকে আলীগড় আন্দোলন বলে। ১৮৭৫ সালে উত্তর প্রদেশের আলীগড়ে স্যার সৈয়দ আহমদ খান ‘মোহামেডান অ্যাংলো- ওরিয়েন্টাল কলেজ স্থাপন করেন। মোহামেডান অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজ’ ১৯২০ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়।
১৯০৬ সালে ব্রিটিশ সরকার বৈপ্লবিক আন্দোলনকে সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন হিসেবে, চিহ্নিত করে। ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবীদের লক্ষ্য ছিল প্রধান প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যা করা। ভূনিয়াম, প্রযুক্ত চাকী বিহারের ফোর্ডের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করলে অন্য এক ইংরেজের স্ত্রী এবং কন্যা নিহত হয়। ক্ষুদিরাম ধরা পড়েন, বিচারে তার ফাঁসি হয়। প্রকৃত চাকী আহহত্যা করেন।
আমীর আলী রচিত বইয়ের নামঃ
১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইনে ভারতবাসীর অধিকারের পূর্ণ প্রতিফলন না ঘটায় শাসনতান্ত্রিক সমস্যা সমাধানের জন্য ১৯৩৫ সালে ভারত শাসন আইনে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন প্রদানের আইন করা হয়।
উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যঃ
১৯৩৭ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনঃ
১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন অনুযায়ী ১৯৩৭ সালের প্রাদেশিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান তিনটি দল যথা কংগ্রেস, মুসলিম লীগ ও কৃষক-প্রজা পার্টি অংশগ্রহণ করে। এই নির্বাচনে কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হলে কোয়ালিশন মন্ত্রিসভা গঠন করে মুসলিম লীগ ও কৃষক প্রজা পার্টি। এই মন্ত্রিসভায় শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
জেনে নিই
নির্বাচনে জয়ী দলের আসন সংখ্যা | |
---|---|
মুসলিম লীগ | ৪০ |
কৃষক প্রজা পার্টি | ৩৫ |
স্বতন্ত্র্য মুসলিম | ৪১ |
স্বতন্ত্র হিন্দু | ১৪ |
ফজলুল হকের উল্লেখযোগ্য অবদানঃ
১৯৩৯ সালে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ দ্বিজাতি তত্ত্বের মাধ্যমে হিন্দু ও মুসলমান নামে দুটি আলাদা জাতির প্রস্তাব করেন। স্বতন্ত্র জাতিসত্তা হিসেবে ঘোষণা করে হিন্দু ও মুসলমানদের জন্য দুটি আলাদা রাষ্ট্র গঠনের যে প্রস্তাব আনেন তাই ইতিহাসে দ্বি-জাতিতত্ত্ব নামে পরিচিত।
১৯৪০ সালের ২৩ শে মার্চ পাকিস্তানের লাহোরে জিন্নাহর সভাপতিত্বে | মুসলিম লীগের বার্ষিক অধিবেশনে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ফজলুল হক লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন। মূলকথা উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলো নিয়ে একাধিক স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন প্রসঙ্গে দাবি উত্থাপিত হয়।
জেনে নিই
১৯৪২ সালে জাপানিরা বার্মা দখল করলে বার্মা থেকে বাংলায় চাল আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। পক্ষান্তরে, বাংলায় খাদ্যশস্য ক্রয় করে বাংলার বাহিরে সৈন্যদের রসদ হিসেবে পাঠিয়ে দেওয়া হয় । অসাধু, লোভী ও মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা খাদ্য গুদামজাত শুরু করে। এদিকে অনাবৃষ্টির ফলে বাংলায় খাদ্য উৎপাদনও হ্রাস পায়। পরিণামে বাংলায় ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে বা ১৩৫০ বঙ্গাব্দে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয় যা ‘পঞ্চাশের মন্বন্তর' নামে পরিচিত।
জেনে নিই
অবিভক্ত বাংলার তিনজন মূখ্যমন্ত্রী
১৯৪৬ সালের নির্বাচন ও সোহরাওয়ার্দীর মন্ত্রিসভা
১৯৪৭ সালে বঙ্গভঙ্গ ভারতবর্ষ বিভক্তির একটি অংশ হিসেবে ধর্মের উপর ভিত্তি করে ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত বঙ্গ প্রদেশ ভারত এবং পাকিস্তানের অংশ হিসেবে বিভক্ত হয়। প্রধানত হিন্দু অধ্যুষিত "পশ্চিম বঙ্গ" ভারত এবং মুসলিম অধ্যুষিত "পূর্ব বঙ্গ” পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হয়। ৩ জুন পরিকল্পনা বা মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা অনুসারে ১৯৪৭ সালের ১৪ এবং ১৫ অগাস্ট যথাক্রমে পাকিস্তান এবং ভারতকে ডোমিনিয়ন রাষ্ট্র করা হয় এবং নতুন ভাবে বিভক্ত বাংলা প্রদেশের ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তান যা পাকিস্তানের প্রদেশ ছিল, তা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ২৪ বছর পর একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
নাম | সময়কাল |
---|---|
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ | ১৪ আগস্ট, ১৯৪৭ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত। |
স্যার খাজা নাজিমউদ্দীন | ১৯৪৮- ১৯৫১ সাল পর্যন্ত। |
মালিক গোলাম মুহাম্মদ | ১৯৫১- ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত। |
ইস্কান্দার আলী মির্জা | ১৯৫৫-১৯৫৬ সাল পর্যন্ত |
পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগঃ ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল এ্যাসেম্বলিতে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেন শেখ মুজিবুর রহমান(বর্তমান নাম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ)
লর্ড কর্নওয়ালিস
লর্ড ওয়েলেসলি
লর্ড ক্যানিং
লর্ড মিন্টো
তৎকালীন বোম্বে প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত করাচির ওয়াজির ম্যানশনে মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে এই স্থান পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের অংশ। শৈশবে তার নাম ছিল মুহাম্মদ আলি জিন্নাহভাই। তার বাবার নাম জিন্নাহভাই পুনজা ও মায়ের নাম মিঠাবাই। তার বাবা ছিলেন একজন গুজরাটি ব্যবসায়ী।
১৯০৪ সালের ডিসেম্বরে কংগ্রেসের বিশতম বার্ষিক অধিবেশনে অংশ নেয়ার মাধ্যমে জিন্নাহর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়।১৯১৩ সাল থেকে শুরু করে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা পর্যন্ত জিন্নাহ নিখিল ভারত মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল হন এবং আমৃত্যু এই পদে বহাল থাকেন। পাকিস্তানে তাকে কায়েদে আজম (মহান নেতা) ও বাবায়ে কওম (জাতির পিতা) হিসেবে সম্মান করা হয়।
ইস্কান্দার আলী মির্জা নভেম্বর ১৮৯৯ – ১৩ নভেম্বর ১৯৬৯) ছিলেন একজন বাঙালি রাজনীতিবিদ এবং পাকিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত এই পদে দায়িত্বপালন করেন। এর পূর্বে ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানের শেষ গভর্নর জেনারেল হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন। তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে মেজর জেনারেল পদে অবসর নেন।
আওয়ামী মুসলিম লীগ
সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা | মাওলানা আবদুল হামিদ খান (ভাসানী) |
---|---|
সহ-সভাপতি | আতাউর রহমান খান |
সাধারণ সম্পাদক | শামসুল হক |
যুগ্ম-সম্পাদক | শেখ মুজিবুর রহমান এবং খন্দকার মোস্তাক আহমদ |
ভাষা আন্দোলন
বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলন ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও, বস্তুত এর বীজ রোপিত হয়েছিল বহু আগে। অন্যদিকে, এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী।
প্রেক্ষাপট
১৯৪৭ সালে চৌধুরী খালিকুজ্জামান এবং আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন আহমদ উর্দুকে রাষ্ট্রভা করার পক্ষে প্রস্তাব করেন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহসহ বেশ কিছু বাঙালি লেখক বুদ্ধিজীবী এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। ১৯৪৭ সালে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ দৈনিক আজাদ' পত্রিকায় 'পাকিস্তানের ভাষা সমস্যা শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রক করেন। এখানে তিনি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করেন। এ সময় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এক ভাষণে বলেছিলেন, 'আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙ্গালি'।
গণপরিষদে বাংলার দাবি
১৯৪৮ সালের ২৩ শে ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের গণপরিষদে ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে গণপরিষদে বক্তৃতা প্রদানের এবং রাষ্ট্র ভাষা করার দাবি জানান কুমিল্লার সাংসদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। সেই দিন অধিবেশনে বাংলার পক্ষে ভোট পড়ে ১৫টি এবং বিপক্ষে ভোট পড়ে ৫১টি।
দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ও ভাষা দিবস
জিন্নাহ'র ঘোষণা ও ছাত্রদের প্রতিবাদ
১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করেন "Urdu and only Urdu shall be the state language of Pakistan" এছাড়াও ২৪ শে মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কার্জন হলে পুনরাবৃত্তি করলে ছাত্ররা না না বলে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানায়। ১১ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৮ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মৃত্যুবরণ করেন। এরপর গভর্নর জেনারেল নিযুক্ত হন খাজা নাজিমুদ্দীন।
নাম | গঠনের সময়কাল | আহ্বায়ক |
---|---|---|
রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ | ১ অক্টোবর, ১৯৪৭ | নূরুল হক ভূঁইয়া |
২য় বার রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ (সংস্কার) | ২ মার্চ, ১৯৪৮ | আহ্বায়ক শামসুল আলম |
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ | ১১ মার্চ, ১৯৫০ | আব্দুল মতিন |
সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ | ৩১ জানুয়ারি, ১৯৫২ | কাজী গোলাম মাহবুব |
আন্দোলন সংগ্রামে অন্যান্য সংগঠন
ভাষা আন্দোলনকালীন পাক-নেতৃত্ব | |
---|---|
পূর্ব বাংলার মূখ্যমন্ত্রী | নুরুল আমিন |
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী | খাজা নাজিমুদ্দিন |
পাকিস্তানের গভর্নর | মালিক গোলাম মোহাম্মদ |
পূর্ব বাংলা ভাষা কমিটি
১৯৪৯ সালের ৯ই মার্চ পাকিস্তান সরকার বাংলা ভাষা সংস্কারের নামে মাওলানা আকরাম খাঁ সভাপতি করে ১৬ সদস্যের একটি 'পূর্ব বাংলা ভাষা কমিটি' গঠন করে দেয়। ১৯৫১ সালে লিয়াকত আলী খান মৃত্যুবরণ করলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন খাজা নাজিমুদ্দীন।
তমুদ্দুন মজলিস
" পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু” পুস্তিকার লেখক ৩ জন
পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির মাত্র ১৮ দিনের মাথায় ১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তমদ্দুন মজলিশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম ছিলেন ভাষা আন্দোলনের সূচনাকারী। তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত 'পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা: বাংলা না উর্দু' শিরোনামের ঘোষনাপত্রে সর্বপ্রথম বাংলাকে রাষ্টভাষা করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়।
অধ্যাপক আবুল কাশেম বুঝতে পেরেছিলেন রাষ্ট্রভাষা প্রসঙ্গে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বাংলার মানুষের সংগ্রাম অনিবার্য হয়ে উঠেছে। আন্দোলনের শুরুতে অধ্যাপক আবুল কাশেমের ১৯ নম্বর আজিমপুরের বাসভবনই ছিল তমদ্দুন মজলিসের অফিস।
এ প্রসঙ্গে অলি আহাদ তাঁর 'জাতীয় রাজনীতি: ১৯৪৫-৭৫ বইয়ে লিখেছেন, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান এবং রসায়ন বিজ্ঞানের অধ্যাপকদ্বয় আবুল কাশেম ও নুরুল হক ভূঁইয়া ধূমায়িত অসন্তোষকে সাংগঠনিক রুপদানের প্রচেষ্টায় ১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান তমদ্দুন মজলিস গঠন করেন। নবগঠিত তমদ্দুন মজলিসই ভাষা-আন্দোলনের গোড়াপত্তন করে।"
১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় এক জনসভায় ঘোষণা করেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে গঠিত হয় "সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ” (All Parties State Language Movement Committee) ৩১ শে জানুয়ারি, ১৯৫২ সালে। কমিটিতে সদস্য ছিল ২২ জন। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য মাওলানা ভাসানী, শামসুল হক, আব্দুল মতিন এবং আহ্বায়ক কাজী গোলাম মাহবুব।
জেনে নিই
বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় পাকিস্তান গণপরিষদ | ১৯৫৪ সালে |
উর্দুর পাশাপাশি রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয় জাতীয় পরিষদ | ১৯৫৬ সালে |
বঙ্গবন্ধু সরকারি কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহারের নির্দেশ জারি করেন | ১৯৭৫ সালে |
জাতীয় সংসদে বাংলা ভাষা আইন পাস করা হয়। | ১৯৮৭ সালে |
১৯৯৮ সালের ১৭ই নভেম্বর ১৮৮ দেশের সমর্থনে ইউনেস্কোর ৩০তম উদ্যোক্তা সাধারণ অধিবেশনে ২১শে | ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। ২১ শে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে ২০০০ সাল থেকে। জাতিসংঘ ২০০৮ সাল থেকে মাতৃভাষা দিবস পালন করা আরম্ভ করে।
উদ্যোক্তাঃ রফিকুল ইসলাম ও আবদুস সালাম (কানাডা প্রবাসী)।
সংগঠনঃ The Mother Language Lovers of World
চেতনা '৭১' মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্য যা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত। এটি বৃহত্তর সিলেটের প্রথম মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্য। ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ২০০৯ সালের ২৬ মার্চ মিনি অডিটোরিয়ামের পশ্চিম পাশে চেতনা ‘৭১’ নামে একটি অস্থায়ী ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। চেতনা ‘৭১’ এর স্থপতি মোবারক হোসেন।
১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হলে বাংলাদেশ সরকার একটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ২০০০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝিতে ১৯,৪৯,০০,০০০ টাকার "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প" সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়। ২০০১ খ্রিস্টাব্দের ১৫ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের উপস্থিতিতে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। শুরুতে ১২ তলা ভবনের উল্লেখ থাকলেও প্রাথমিকভাবে ৫ তলা নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়; তাতে একটি মিলনায়তন, চারটি সম্মেলন কক্ষ, কম্পিউটার ল্যাব, জাদুঘর, আর্কাইভ, ভাষা প্রশিক্ষণের জন্য ১০টি শ্রেণীকক্ষসহ প্রয়োজনীয় অফিসকক্ষের ব্যবস্থা রাখা হয়। এরপর সরকার বদলের পরে ভবনের নির্মাণ কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়। ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের শেষ দিকে সরকার প্রকল্প সংশোধন করে নির্মাণকাজ শেষ করার উদ্যোগ নেয়। সংশোধিত প্রকল্পের অধীনে ৩ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ শেষ হয় ২০১০ খ্রিস্টাব্দে। সেবছর ২১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভবনটির উদ্বোধন করেন। ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনের ৯ বছর পর ভবনটি উদ্বোধন করা হয়।
জেনে নিই
চৌধুরী মাহবুব উল আলম (১৯২৭-২০০৭) কবি, সাংবাদিক, লেখক, ভাষা সৈনিক এবং ভাষা আন্দোলনের প্রথম কবিতার রচয়িতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্তরে (২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২) আন্দোলনকারী ভাষা সৈনিকদের ওপর পুলিশের গুলি এবং ছাত্র নিহত হওয়ার তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ স্বরূপ কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরী ’একুশে’ শিরোনামে রচনা করেন তাঁর বিখ্যাত কবিতা ’কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি’ যা ভাষা আন্দোলনের প্রথম কবিতা হিসেবে স্বীকৃত।
জহির রায়হান এর একুশের কর্ম
আলতাফ মাহমুদ এর একুশের কর্ম
গাজীউল হক এর একুশের কর্ম
অধ্যাপক আবুল কাশেম এর একুশের কর্ম
মুনীর চৌধুরী এর একুশের কর্ম
যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন- ১৯৫৪
যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়- ৪ঠা ডিসেম্বর, ১৯৫৩ সালে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫৪ সালে। যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী প্রচারণা (নির্বাচনের ইশতিহার) ২১ দফার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। প্রথম দফা ছিল বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা। করা। ১৯৫৪ সালের ৮ থেকে ১২ ই মার্চের নির্বাচন ছিল পূর্ব বাংলায় প্রথম অবাধ ও সর্বজনীন ভোটাধিকারের মাধ্যমে সাধারণ নির্বাচন। সরকারিভাবে নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয় ২রা এপ্রিল। নির্বাচনে মোট আসন ছিল ৩০৯ টি (মুসলিম আসন-২৩৭টি এবং অমুসলিম আসন ৭২টি)।
জেনে নিই
যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে কৃষক প্রজা পার্টির নেতা ছিলেন শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক।
যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে নেজামে ইসলাম পার্টির নেতা ছিলেন মাওলানা মোতাহার আলী ।
যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে গনতন্ত্রী দলের নেতা ছিলেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ ।
কাগমারী সাংস্কৃতিক সম্মেলন ১৯৫৭
১৯৫৭ সালে অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইল জেলার কাগমারীর সন্তোষে অনুষ্ঠিত একটি বিশেষ| সম্মেলন যা পরবর্তীতে পাকিস্তানের বিভক্তি এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল। ১৯৫৭ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ই ফেব্রুয়ারি অবধি এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ৮ই ফেব্রুয়ারি মওলানা আব্দুল হামিন খান ভাসানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি আরম্ভ হয়। উক্ত সম্মেলনে ভাসানী পাকিস্তানি শাসকদের হুঁশিয়ার করে বলেন, যদি পূর্ব পাকিস্তানে শোষণ অব্যাহত থাকে তবে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানকে "আসসালামু আলাইকুম " জানাতে বাধ্য হবেন।
জেনে নিই
সামরিক শাসন জারি (১৯৫৮)
পূর্ব বাংলার সংসদে সদস্যদের সংঘর্ষে ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলী গুরুতর আহত হন। এরই অজুহাতে, ইস্কান্দার মীর্জা ১৯৫৮ সালে ৭ই অক্টোবর সামরিক আইন জারি করেন। প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান আইয়ুব খানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করেন। ২৭ শে অক্টোবর, ১৯৫৮ ইস্কান্দার মীর্জাকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করে, আইয়ুব খান এবং প্রধানমন্ত্রীর পদ বিলুপ্ত করে নিজেই রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ২৩ মার্চ ১৯৬০ সালে সামরিক শাসন প্রত্যাহার করেন।
মৌলিক গণতন্ত্র (১৯৬০)
শিক্ষা আন্দোলন - ১৯৬২
১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল শিক্ষাকে সার্বজনীন অধিকার করা। কমিশনের প্রধান ড. এস এম শরীফের নামানুসারে এ রিপোর্টের নাম হয় শরীফ কমিশন রিপোর্টটি দাখিল করা হয়েছিল ১৯৫৯ সালে। পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষার জন্য প্রথম আন্দোলন এটি।
পাক-ভারত যুদ্ধ (১৯৬৫)
৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৫ কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়ে ২০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। এ যুদ্ধের স্থায়িত্বকাল ছিল ১৭ দিন। ১৯৬৬ সালের ১০ জানুয়ারি উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে সোভিয়েত ইউনিয়নের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কোসিগিনির মধ্যস্থতায় 'তাসখন্দ চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে পাক-ভারত যুদ্ধের অবসান হয়। ভারতের পক্ষে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। আতাউল গনি ওসমানীকে বীরত্বের জন্য 'পাপা টাইগার' উপাধি প্রদান করে পাক- সরকার।
১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন
১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে চৌধুরী মোহাম্মদ আলীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলগুলোর সম্মেলনে শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ছয় দফা কর্মসূচি পেশ করেন। ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬ সালে লাহোরে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ছয় লক্ষ বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। ছয়দফা রচিত হয় লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে।
ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি
জেনে নিই
১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচন (The General Election of 1970)
প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ৬৯ গণ অভ্যুত্থানের পতনের ফলে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আগা মুহম্মদ ইয়াহিয়া খানের নিকট ১৯৬৯ সালের ২৫ মার্চ ক্ষমতা হস্তান্তর করে রাজনীতিকে বিদায় জানান । জেনারেল ইয়াহিয়া খান দ্বিতীয় বারের মত সারা দেশে মার্শাল ল' জারি করেন ২৫ মার্চ রাতে । জেনারেল ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা গ্রহণের পর জনপ্রতিনিধির কাছে বৈধ প্রক্রিয়াতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দেন এবং আইনগত কাঠামো আদেশ (Legal Framework Order) ঘোষণা করেন ৩০ মার্চ, ১৯৭০ সালে। পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় পরিষদ নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর। পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালের ১৭ ডিসেম্বর।
আইনসভা | নির্বাচিত আসন | সংরক্ষিত আসন | মোট আসন |
---|---|---|---|
জাতীয় পরিষদ | ৩০০ | ১৩ | ৩১৩ |
আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত আসন | ১৬০ | ৭ | ১৬৭ |
পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ | ৩০০ | ১০ | ৩১০ |
আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত আসন | ২৮৮ | ১০ | ২৮৯ |
জেনে নিই
আগরতলা মামলা
বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেমের নেতৃত্বে পূরববাংলাকে বিচ্ছিন্ন করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের প্রচেষ্টায় অভিযোগ বঙ্গবন্ধুকে প্রধান আসামী করে নোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক যে মামলা দায়ের করা হয় তাই আগরতলা মামলা নামে পরিচিত ।
জেনে নিই
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা
১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করার পর ৩রা মার্চ শুনা যায় ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেন। ইয়াহিয়া খান ১ লা মার্চ পূর্ব ঘোষিত অধিবেশন অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করেন। প্রতিবাদে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সকল সরকারি কার্যক্রম প্রায় অঞ্চল হয়ে পড়ে। হরতাল চলাকালে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গুলিতে বহুলোক হতাহত হয় ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন ৩রা মার্চ, ১৯৭১। এমন পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বিশাল এক জনসভায় ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। এ ভাষণে তিনি স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে সকল বাঙালিকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে আহ্বান জানান।
১ মার্চ, ১৯৭১
২রা মার্চ, ১৯৭১
৩ মার্চ, ১৯৭১
৪ মার্চ, ১৯৭১
৬ মার্চ, ১৯৭১
৭ মার্চের ভাষণ
৮ মার্চ, ১৯৭১
৯ মার্চ, ১৯৭১
১২ মার্চ, ১৯৭১
১৩ মার্চ, ১৯৭১
১৪ মার্চ, ১৯৭১
১৫ মার্চ, ১৯৭১
১৬ মার্চ, ১৯৭১
১৭ মার্চ, ১৯৭১
১৮ মার্চ, ১৯৭১
১৯ মার্চ, ১৯৭১
২২ মার্চ, ১৯৭১
২৩ মার্চ, ১৯৭১
২৪ মার্চ, ১৯৭১
২৫ মার্চ, ১৯৭১
৭ মার্চের ভাষণ
শব্দ সংখ্যা ১১০৮ টি।
২৫ মার্চ, ১৯৭১
অপারেশন সার্চ লাইট
অপারেশন জ্যাকপট
অপারেশন ব্লিজ
২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা না দিয়ে বরং সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে সামরিক শাসনে ফিরে যাওয়ার যে ষড়যন্ত্র তা অপারেশন ব্লিজ নামে পরিচিত।
অপারেশন বিগ বার্ড
অপারেশন কিলো ফ্লাইট
অপারেশন চেঙ্গিস খান
৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান ভারতের ওপর যে বিমান হামলা চালায় তার সাংকেতিক নাম ছিল ‘অপারেশন চেঙ্গিস খান’ ।
অপারেশন ক্যাক্টাস লিলি
৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে যৌথবাহিনী পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে একযোগে যে আক্রমন করে তার নাম ছিল অপারেশন ক্যাক্টাস লিলি।
অপারেশন ক্লজডোর
মুক্তিযুদ্ধের সময় সারাদেশে মানুষের কাছে যে অবৈধ অস্ত্র ছিল তা জমা নেওয়ার জন্য যে অভিযান পরিচালিত হয় তা অপারেশন ক্লোজডোর নামে পরিচিত।
স্বাধীনতার ঘোষণা
পাক বাহিনী অপারেশন সার্চ লাইট অভিযান শুরু করে- ২৫ মার্চ রাত ১১:৩০ মিনিটের দিকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন পরিস্থিতিতে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন ওয়্যারলেসের মাধ্যমে ২৫ মার্চ রাত্রি বারোটার পর অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে । মূলত এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। ২৬ মার্চের বঙ্গবন্ধুর জারি করা মূল ঘোষণাটি ছিল- ইংরেজিতে।
২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণার স্বরূপ—
ইহাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছো, যাহার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো । পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।"
জেনে নিই
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র নিয়ে কিছু তথ্য
মুজিবনগর সরকার (যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার বা প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার নামেও পরিচিত) মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল জনগনের রায়ে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল এই সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে (বর্তমান মুজিবনগর) শপথ গ্রহণ করেন।
জেনে নিই
নাম | পদমর্যাদা |
---|---|
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (গোপালগঞ্জ) | রাষ্ট্রপতি [মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক] |
সৈয়দ নজরুল ইসলাম(কিশোরগঞ্জ) | উপ-রাষ্ট্রপতি (রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি) |
তাজউদ্দীন আহমেদ (গাজীপুর) | প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, স্থানীয় প্রশাসন, অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, তথ্য ও বেতার, স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণ। |
খন্দকার মোশতাক আহমেদ (কুমিল্লা) | পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। |
ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী (সিরাজগঞ্জ) | অর্থ, জাতীয় রাজস্ব, বাণিজ্য, শিল্প ও পরিবহন মন্ত্রণালয়। |
এ.এইচ.এম. কামরুজ্জামান (রাজশাহী) | স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন এবং কৃষি মন্ত্রণালয় । |
কর্নেল (অব.) এম.এ.জি. ওসমানী (সিলেট) | সেনাবাহিনী প্রধান (মন্ত্রীর পদমর্যাদা)। |
কর্নেল (অব.) এ. রব | সেনাবাহিনীর উপপ্রধান-চীপ অব স্টাফ। |
গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার | ডেপুটি চিপ অব স্টাফ |
মুজিবনগর সর্বদলীয় উপদেষ্টা পরিষদ (৮ সদস্য বিশিষ্ট)
জেনে নিই
মুজিবনগর মন্ত্রণালয়: মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ছিল- ১২টি। যথাঃ প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়, সাধারণ প্রশাসন, স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বিভাগ, ত্রাণ ও পুর্নবাসন বিভাগ, প্রকৌশল বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন, যুব ও অভ্যর্থনা ।
কুটনৈতিক মিশন: প্রথম কূটনৈতিক মিশন স্থাপিত হয়- কলকাতাতে মুক্তিযুদ্ধকালীন যুক্তরাজ্যের মিশন প্রধান ছিলেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী, নয়া দিল্লির হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্রের এম আর সিদ্দিকি। বাংলাদেশের প্রতি প্রথম আনুগত্য ও পতাকা উত্তোলন করেন কলকাতাস্থ পাকিস্তান মিশনের ডেপুটি কমিশনার হোসেন আলী (১৮ এপ্রিল, ১৯৭১)।
ব্রিগেড ফোর্স | কমান্ডার | সদর দপ্তর |
---|---|---|
Z ফোর্স | লে. কর্নেল জিয়াউর রহমান | তেলঢালা |
S ফোর্স | লে. কর্নেল কে এম শফিউল্লাহ | হাজামারা |
K ফোর্স | লে. কর্নেল খালেদ মোশারফ | আগরতলা |
ছাত্র, যুবক, কৃষক-শ্রমিক ও সকল পর্যায়ের মুক্তিকামী যোদ্ধাদের নিয়ে বিভিন্ন সেক্টরের অধীনে অনিয়মিত বাহিনী গঠিত হয়। এই বাহিনীর সরকারি নামকরণ করা হয় গণবাহিনী বা মুক্তিযোদ্ধা (FF) |
মুজিব বাহিনী (BLF)
Bangladesh Liberation Front (BLF) ১৯৭১ সালের নিয়মিত ও অনিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে মুজিববাহিনী' গঠিত হয়। সমগ্র বাংলাদেশকে ৪টি রাজনৈতিক যুদ্ধাঞ্চলে বিভক্ত করে প্রায় ১০,০০০ ছাত্রকে নিজ নিজ এলাকার ভিত্তিতে সর্বাত্মক প্রতিরোধমুখী অবস্থান নেয়ার জন্য প্রেরণ করা হয়।
বাহিনীর নাম | অঞ্চল |
---|---|
কাদেরিয়া বাহিনী | টাঙ্গাইল |
হালিম বাহিনী | মানিকগঞ্জ |
হেমায়েত বাহিনী | ফরিদপুর, বরিশাল |
আকবর বাহিনী | শ্রীপুর, মাগুরা |
লতিফ মীর্জা | সিরাজগঞ্জ, পাবনা |
বাতেন বাহিনী | টাঙ্গাইল |
আফসার বাহিনী | ভালুকা, ময়মনসিংহ |
জিয়া বাহিনী | সুন্দরবন |
ক্র্যাক প্লাটুন | ঢাকা |
মুজিব ব্যাটারি | গোলন্দাজ (ঢাকা) |
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর ও সেক্টর কমান্ডারগণ
সেক্টর নং | দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার | সদর দপ্তর |
---|---|---|
সেক্টর- ০১ | মেজর জিয়াউর রহমান (এপ্রিল-জুন) মেজর রফিকুল ইসলাম (জুন-ডিসেম্বর) | হরিনা, ত্রিপুরা |
সেক্টর- ০২ | মেজর খালেদ মোশাররফ (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) মেজর হায়দার (সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর) | মেলাঘর, ত্রিপুরা |
সেক্টর- ০৩ | মেজর শফিউল্লাহ (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) মেজর নুরুজ্জামান (সেপ্টম্বর-ডিসেম্বর) | কলাগাছি, ত্রিপুরা |
সেক্টর- ০৪ | মেজর সি আর দত্ত | করিমগঞ্জ, আসাম |
সেক্টর- ০৫ | মেজর মীর শওকত আলী | বাঁশতলা, সুনামগঞ্জ |
সেক্টর- ০৬ | উইং কমান্ডার খাদেমুল বাশার। | বুড়িমারী, পাটগ্রাম |
সেক্টর- ০৭ | মেজর কাজী নুরুজ্জামান | তরঙ্গপুর, পশ্চিমবঙ্গ |
সেক্টর- ০৮ | মেজর ওসমান চৌধুরী (অক্টোবর পর্যন্ত) মেজর এম. এ মনজুর (এপ্রিল-ডিসেম্বর পর্যন্ত) | বেনাপোল কল্যাণী, ভারত |
সেক্টর- ০৯ | মেজর আবদুল জলিল (এপ্রিল-ডিসেম্বর পর্যন্ত) | হাসনাবাদ, ভারত |
সেক্টর- ১০ | মুক্তিবাহিনীর ট্রেনিংপ্রাপ্ত নৌ-কমান্ডারগণ | নেই |
সেক্টর- ১১ | মেজর আবু তাহের (এপ্রিল-নভেম্বর) ফ্লাইট লেঃ এম হামিদুল্লাহ (নভেম্বর-ডিসেম্বর) | মহেন্দ্রগঞ্জ, আসাম |
মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বিদেশি বন্ধুদের সম্মাননা
ঊইলিয়াম ওডারল্যান্ড
সায়মন ড্রিং
মাদার মেরিও ভেরেঞ্জি
জগজিৎ সিং অরোরা
কনসার্ট ফর বাংলাদেশ
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশি শরণার্থীদের পক্ষে জনমত গঠন ও তহবিল সংগ্রহের জন্য ১লা আগস্ট, ১৯৭১ সালে নিউইকের ম্যাডিসন স্কয়ারে আয়োজন করা হয় Concert for Bangladesh রবি শঙ্কর জর্জ হ্যারিসনকে বাংলাদেশ কনসার্টে যোগ দেবার আমন্ত্রণ জানান।
তারিখ | ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট |
---|---|
উদ্যোক্তা | ফোবানা |
স্থান | নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার, যুক্তরাষ্ট্র |
ব্যান্ডদল | দ্য বিটলস (লন্ডন) |
প্রতিষ্ঠাতা | জর্জ হ্যারিসন (ব্রিটিশ) ও রবি শঙ্কর (ভারতীয়) |
উদ্দেশ্য | বাংলাদেশী শরণার্থীদের জন্য তহবিল সংগ্রহ |
পরিচালক | পল সুইমার |
অন্যান্য শিল্পী | ওস্তাত আলী আকবর খান, বব ডিলান, এরিক ক্লাপটন, লিয়ন রাসেল |
দর্শক সংখ্যা ও আয় | ৪০ হাজার, ২.৫ লক্ষ ডলার |
মুক্তিযুদ্ধে বৃহৎ শক্তিবর্গের ভূমিকা
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বিশ্বব্যাপী বিরাজমান ছিল- স্নায়ুযুদ্ধ(ঠান্ডা লড়াই); বিশ্ব ছিল দুই ব্লকে বিভক্ত মার্কিন নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক ব্লক ও সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বাধীন সমাজতান্ত্রিক ব্লক। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল- সমাজতান্ত্রিক ব্লক সোভিয়েত ইউনিয়ন, ভারত ও অধিকাংশ সমাজতান্ত্রিক দেশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে ছিল- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন।
১৯৭১ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধ চলমান থাকায় মার্কিন সপ্তম নৌ বহর দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থান করেছিল। ৯ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন বঙ্গোপসাগরে ৭ম নৌবহর প্রেরণের নির্দেশ দেন। USS Enterprise জাহাজের নেতৃত্বে 'টাস্কফোর্স ৭৪' গঠন করে বঙ্গোপসাগর অভিমুখে যাত্রা করে। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতের নৌবহর INS Vikrant থাইল্যান্ডের সমুদ্রসীমা ব্যবহার করে প্রতিরক্ষা বলয় তৈরি করে এবং রাশিয়ার ৮ম নৌবহর বাল্টিক সাগর থেকে বঙ্গোপসাগর অভিমুখে যাত্রা করলে ৭ম নৌবহর বঙ্গোপসাগর ত্যাগ করে।
২৯ মার্চ, ১৯৭১ নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্স সভায় অ্যালেক ডগলাস হিউম পাকিস্তানকে সামরিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করার আহ্বান জানায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় শরণার্থীদের সহয়তা করে। ১৯৭১ পর্যন্ত শরণার্থীদের সহায়তার পরিমাণ ছিল প্রায় ১ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড।
জাতিসংঘ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ, মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। প্রকৃতপক্ষে 'ভেটো' ক্ষমতা সম্পন্ন পাঁচটি বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রের বাইরে জাতিসংঘের নিজস্ব উদ্যোগে ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা ছিল সীমিত। তবে যুদ্ধ বিরতির জন্য জাতিসংঘে ৩ বার প্রস্তাব উত্থাপিত হয় । যথা :
সৌভাগ্যক্রমে USSR ৩ বারই ভেটো (অর্থ- আমি এটা মানি না) দেওয়ার ফলে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সফল হয়নি। যুদ্ধবিরতি না হওয়ায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে শেষ অবধি। তাই বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘে USSR বাংলাদেশের পক্ষে ভেটো প্রদান করে ।
বীরত্বসূচক খেতাব (Gallantry Awards)
১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭৩ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খেতাব তালিকায় স্বাক্ষর করেন। তারপরের দিন সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের খেতাব প্রদান করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের খেতাবধারীর সংখ্যা
খেতাব | ১৯৭৩ [গেজেট] | বৰ্তমান | খেতাসূত্র |
---|---|---|---|
বীরশ্রেষ্ঠ | ৭ | ৭ | সর্বোচ্চ পদ |
বীর উত্তম | ৬৮ | ৬৭ | উচ্চপদ |
বীর বিক্রম | ১৭৫ | ১৭৪ | প্রশংসনীয় পদ |
বীর প্রতীক | ৪২৬ | ৪২৪ | প্রশংসাপত্র |
মোট | ৬৭৬ | ৬৭২ | * |
খেতাবের নাম | বিবরণ |
---|---|
বীরশ্রেষ্ঠ |
|
বীর উত্তম |
|
বীর বিক্রম |
|
বীর প্রতীক |
|
বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা
নরসিংদী
গাজীপুর
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
কিশোরগঞ্জ
স্কোয়াড্রন ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিন
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান
ল্যান্স নায়েক নূর মুহাম্মদ শেখ
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের ঘটনাবলি
৩ ডিসেম্বর |
|
---|---|
৪ ডিসেম্বর |
|
৫ ডিসেম্বর |
|
৬ ডিসেম্বর |
|
১২ ডিসেম্বর |
|
১৩ ডিসেম্বর |
|
১৪ ডিসেম্বরে শহীদ কয়েকজন বুদ্ধিজীবীদের নাম-
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ
১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভারতের সেনাপ্রধান মানকেশ পাকিস্তানকে ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯ টার মধ্যে আত্মসমর্পণের জন্য সময়সীমা নির্দিষ্ট করে ঢাকায় পাকিস্তানি জেনারেল হামিদ নিয়াজিকে জানান। ১৬ ডিসেম্বর সকাল সোয়া ৯ টায় জেনারেল জ্যাকবকে আত্মসমর্পণ দলিল ঠিক করতে ঢাকায় পাঠানো হয়। পাকিস্তান আত্মসমর্পণের পরিবর্তে 'যুদ্ধ বিরতি করতে চাইলে জ্যাকব সিদ্ধান্তে অনঢ় থাকেন।
জেনে নিই
বিবিধ:
বাংলাকে স্বীকৃতি দানকারী বিভিন্ন দেশ
স্বীকৃতি | দেশের নাম ও সময় |
---|---|
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী প্রথম দেশ | ভুটান (৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১) |
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী দ্বিতীয় দেশ | ভারত (৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১) |
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী প্রথম আরব দেশ | ইরাক (৮ জুলাই, ১৯৭২) |
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী প্রথম অনারব মুসলিম | মালয়েশিয়া (২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭২) |
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী প্রথম ইউরোপের দেশ | পূর্ব জার্মানি (১১ জানুয়ারি, ১৯৭২) |
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী প্রথম আফ্রিকান দেশ | সেনেগাল (১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭২) |
দক্ষিণ আমেরিকার প্রথম স্বীকৃতি দেয় | ভেনিজুয়েলা (২ মে, ১৯৭২) |
উত্তর আমেরিকান দেশসমূহের মধ্যে প্রথম | বার্বাডোস (২০ জানুয়ারি, ১৯৭২) |
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী প্রথম ওশেনিয়ার দেশ | টোঙ্গা (২৫ জানুয়ারি, ১৯৭২) |
স্বাধীন বাংলাদেশকে রাশিয়া স্বীকৃতি দান করে | ২৪ জানুয়ারি, ১৯৭২ |
স্বাধীন বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃতি দান করে কবে | ৪ এপ্রিল, ১৯৭২ |
স্বাধীন বাংলাদেশকে চীন স্বীকৃতি দান করে | ৩১ আগস্ট, ১৯৭৫ |
পাকিস্তান স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দান করে | ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৪ |
সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসাবে প্রথম স্বীকৃতি দেয় | পোল্যান্ড (১২ জানুয়ারি, ১৯৭২) |
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্ম ও পরিচয়ঃ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফরিদপুরের গোপালগঞ্জে মধুমতি নদীর তীরে ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতার নাম সায়েরা খাতুন। বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছার ডাকনাম ছিল রেনু।
শিক্ষা জীবনঃ
১৯২৭ সালে বঙ্গবন্ধু গোপালগঞ্জের গিমাভাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র জীবন শুরু করেন ৭ বছর বয়সে। পরবর্তীতে মাদারীপুর ইসলামীয়া হাই স্কুলে পড়াশোনা শেষে ১৯৪২ সালে কলকাতার ইসলামীয়া কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি ২৪ নং বেকার হোস্টেলে থাকতেন। স্মৃতি স্মরণার্থে বর্তমানে বেকার হোস্টেলের ২৩ নং রুমকে গ্রন্থাকার এবং ২৪নং রুমকে মিউজিয়াম বানানো হয়েছে। ১৯৪৭ সালে তিনি কলকাতা ইসলামীয়া কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাস বিভাগ থেকে বি. এ. পাশ করার পর একই বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এসময় তার বিশ্ববিদ্যালয়ে রোল নম্বর ছিল ১৬৫।
পারিবারিক জীবনঃ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ছয় ভাই বোনের মধ্যে তৃতীয়। চাচাত বোন শেখ ফজিলাতুন্নেছা (ডাকনাম রেনু) কে বিবাহ করেন। তাদের পারিবারিক জীবনে ৫ সন্তান ছিল, তিন পুত্র ও দুই কন্যা।
শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনঃ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ১৯৩৯ সালে গোপালগঞ্জ মুসলিম ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৪০ সালে নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের পর ১৯৪৫ সালে ইসলামীয়া কলেজ থেকে সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন যা বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নামে পরিচিত।
আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাঃ
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন রোজ গার্ডেনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনে শেখ মুজিবুর রহমানের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে, তিনি প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন। প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শামসুল হক। ১৯৫৩ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে নেতৃত্ব দানকারীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ছিলেন অন্যতম। বঙ্গবন্ধু ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের সর্ব কনিষ্ঠ মন্ত্রী হিসেবে কৃষি-সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রী হিসেবে যোগদান করেন।
মুসলিম শব্দ বাদঃ
১৯৫৫ সালে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৫ সালেই তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়া হয়।
৬ দফা উত্থাপনঃ
১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ, বাঙালি জাতির ম্যাগনাকার্টা হিসেবে খ্যাত ৬ দফা দাবী পেশ করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে ২৩ মার্চ ছয় দফা দাবী উপস্থাপন করেন।
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনঃ
১৯৭০ সালের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে যথাক্রমে ১৬৭ ও ২৯৮ টি আসনে নিরঙ্কুশ জয়লাভ করেন। পাকিস্তানি সরকারের টালবাহানায় ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক যুগান্তকারী ৭ মার্চের ভাষণ প্রদান করার মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ যাত্রা শুরু করেন।
গ্রেফতার ও স্বাধীনতার ঘোষণাঃ
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাত বা ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করার কিছু পরেই রাস্ত ১:১০ মিনিটে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের ফয়সালাবাদের মিয়ানওয়ালী কারাগারে নিয়ে যায়। ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে পাক হেফাজতে থাকা বঙ্গবন্ধুকে অস্থায়ী সরকারের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়।
কারাভোগঃ
বঙ্গবন্ধু তার ৫৬ বছরের জীবনে ২১ বারে ১৪ বছর কারা ভোগ করেন যা দিনের হিসেবে ৪ হাজার ৬৮২ দিন। উল্লেখ্য যে, তিনি পাকিস্তান আমলে ৪ হাজার ৬৭৫ দিন জেলে ছিলেন । প্রথম কারা ভোগ করেন ১৯৩৮ সালে ব্রিটিশ শাসন আমলে ৭ দিন।
দেশ প্রত্যাবর্তনঃ
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ইংল্যান্ড ও ভারত সফর করে ১০ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। ১০ জানুয়ারিকে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস বলা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণঃ
১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু প্রধান মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে ৭ই মার্চ স্বাধীন দেশের ১ম নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনের মধ্যে ১৯৩ আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ জয়লাভ করলে তিনি পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পুনরায় দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে। শপগ্রহণ করেন এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি ডিক্রী জারি করে বাকশাল গঠন করেন ।
বঙ্গবন্ধুর ও জাতির জনক উপাধিঃ
বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রদান করেন তোফায়েল আহমেদ - ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। পরবর্তীতে জাতির জনক উপাধি প্রদান করেন- আ.স.ম আব্দুর রব ৩ মার্চ, ১৯৭১ সালে পল্টন ময়দানে। ১৯৭১ সালে ৫ এপ্রিল নিউজ উইক সপ্তাহিক ম্যাগ্যাজিন বঙ্গবন্ধুকে Poet of Politics বা রাজনীতির কবি হিসেবে আখ্যায়িত করে।
2010
2012
2015
2018
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্ম ও পরিচয়:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফরিদপুরের গোপালগঞ্জে মধুমতি নদীর তীরে ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতার নাম সায়েরা খাতুন। বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছার ডাকনাম ছিল রেনু।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর শিক্ষা জীবনঃ
১৯২৭ সালে বঙ্গবন্ধু গোপালগঞ্জের গিমাভাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র জীবন শুরু করেন ৭ বছর বয়সে। পরবর্তীতে মাদারীপুর ইসলামীয়া হাই স্কুলে পড়াশোনা শেষে ১৯৪২ সালে কলকাতার ইসলামীয়া কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি ২৪ নং বেকার হোস্টেলে থাকতেন। স্মৃতি স্মরণার্থে বর্তমানে বেকার হোস্টেলের ২৩ নং রুমকে গ্রন্থাকার এবং ২৪নং রুমকে মিউজিয়াম বানানো হয়েছে। ১৯৪৭ সালে তিনি কলকাতা ইসলামীয়া কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাস বিভাগ থেকে বি. এ. পাশ করার পর একই বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এসময় তার বিশ্ববিদ্যালয়ে রোল নম্বর ছিল ১৬৫।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনঃ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ১৯৩৯ সালে গোপালগঞ্জ মুসলিম ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৪০ সালে নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের পর ১৯৪৫ সালে ইসলামীয়া কলেজ থেকে সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন যা বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নামে পরিচিত।
আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাঃ
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন রোজ গার্ডেনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনে শেখ মুজিবুর রহমানের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে, তিনি প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন। প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শামসুল হক। ১৯৫৩ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে নেতৃত্ব দানকারীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ছিলেন অন্যতম। বঙ্গবন্ধু ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের সর্ব কনিষ্ঠ মন্ত্রী হিসেবে কৃষি-সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রী হিসেবে যোগদান করেন।
মুসলিম শব্দ বাদঃ
১৯৫৫ সালে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৫ সালেই তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়া হয়।
৬ দফা উত্থাপনঃ
১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ, বাঙালি জাতির ম্যাগনাকার্টা হিসেবে খ্যাত ৬ দফা দাবী পেশ করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে ২৩ মার্চ ছয় দফা দাবী উপস্থাপন করেন।
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনঃ
১৯৭০ সালের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে যথাক্রমে ১৬৭ ও ২৯৮ টি আসনে নিরঙ্কুশ জয়লাভ করেন। পাকিস্তানি সরকারের টালবাহানায় ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক যুগান্তকারী ৭ মার্চের ভাষণ প্রদান করার মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ যাত্রা শুরু করেন।
গ্রেফতার ও স্বাধীনতার ঘোষণাঃ
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাত বা ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করার কিছু পরেই রাস্ত ১:১০ মিনিটে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের ফয়সালাবাদের মিয়ানওয়ালী কারাগারে নিয়ে যায়। ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে পাক হেফাজতে থাকা বঙ্গবন্ধুকে অস্থায়ী সরকারের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়।
কারাভোগঃ
বঙ্গবন্ধু তার ৫৬ বছরের জীবনে ২১ বারে ১৪ বছর কারা ভোগ করেন যা দিনের হিসেবে ৪ হাজার ৬৮২ দিন। উল্লেখ্য যে, তিনি পাকিস্তান আমলে ৪ হাজার ৬৭৫ দিন জেলে ছিলেন । প্রথম কারা ভোগ করেন ১৯৩৮ সালে ব্রিটিশ শাসন আমলে ৭ দিন।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনঃ
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ইংল্যান্ড ও ভারত সফর করে ১০ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। ১০ জানুয়ারিকে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস বলা হয়।
বঙ্গবন্ধুর ও জাতির জনক উপাধিঃ
বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রদান করেন তোফায়েল আহমেদ - ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। পরবর্তীতে জাতির জনক উপাধি প্রদান করেন- আ.স.ম আব্দুর রব ৩ মার্চ, ১৯৭১ সালে পল্টন ময়দানে। ১৯৭১ সালে ৫ এপ্রিল নিউজ উইক সপ্তাহিক ম্যাগ্যাজিন বঙ্গবন্ধুকে Poet of Politics বা রাজনীতির কবি হিসেবে আখ্যায়িত করে।
১৯৫৪ সালে রাজবন্দি থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধু গণচীন ভ্রমণের অভিজ্ঞতার আলোকে সরস বিশ্লেষণ করেন। তিনি তার এই লেখার নাম দেন 'নয়াচীন ভ্রমণ'। তার লেখা ডায়েরিটিই 'আমার দেখা নয়াচীন' নামে বঙ্গবন্ধু রচিত তৃতীয় গ্রন্থ আকারে প্রকাশ করা হয়। শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে বাংলা একাডেমি ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বইটি প্রকাশ করে। মূলত, ২-১২ অক্টোবর ১৯৫২ গণচীনের পিকিংয়ে এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর প্রথম চীন সফরে চীনের অবিসংবাদিত নেতা মাও সে তুং-এর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর দেখা হয়। এসময় তিনি চীনের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা প্রত্যক্ষ করেন। চীন ভ্রমণের এসব অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি একটি ডায়েরি লেখেন যেখানে তিনি তৎকালীন পাকিস্তান ও চীনের রাজনৈতিক-আর্থসামাজিক অবস্থার তুলনা, কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে গণতন্ত্রের চর্চা প্রভৃতি বিষয়াদি প্রাঞ্জলভাবে আলোচনা করেন।
জেনে নিই
জেনে নিই
বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে উক্তি
জেনে নিই
কারাগারের রোজনামচাতে বঙ্গবন্ধুর উল্লেখযোগ্য উক্তি
জেনে নিই
''বাংলাদেশ ২০°৩৪' উত্তর অক্ষাংশ হতে ২৬°৩৮' উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত এবং অপরদিকে ৮৮°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ হতে ১২°৪১′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। গ্রিনিচ মান মন্দির (লন্ডন) থেকে ৯০° পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত। কর্কটক্রান্তি বা ট্রপিক অব ক্যান্সার বাংলাদেশের প্রায় মধ্যভাগ দিয়ে অতিক্রম করেছে। সুতরাং বাংলাদেশ ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত।
বাংলাদেশের মৌসুমী জলবায়ু ও সমভাবাপন্ন নাতিশীতষ্ণ আবহাওয়া বিদ্যমান। ভূপ্রকৃতির ভিত্তিতে বাংলাদেশ প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা-
১। টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ (মোট ভূমির প্রায় ১২%)
২। প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহ (মোট ভূমির ৮%)
৩। সাম্প্রতিক কালের প্লাবন সমভূমি (মোট ভূমির প্রায় ৮০%)
জেনে নিই
দিক | সীমান্ত রাজ্য |
---|---|
উত্তরে | ভারতের আসাম, মেঘালয় ও পশ্চিমবঙ্গ |
পূর্বে | ভারতের আসাম, মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং মিয়ানমার |
দক্ষিণে | মিয়ানমার, বঙ্গোপসাগর |
পশ্চিমে | ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য |
জেনে নিই
বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ
ব্রিটিশ শাসনামলে তৎকালীন বাংলা প্রদেশে সর্বপ্রথম বিভাগ গঠন করা হয়। সেসময় বর্তমান বাংলাদেশের ভূখণ্ডে রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম এই তিনটি বিভাগ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের একাংশ নিয়ে ১৯৬০ সালে খুলনা বিভাগ গঠিত। হয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে এই চারটি বিভাগ ছিল। ১৯৮২ সালে ঢাকা বিভাগ এবং ঢাকা শহরের ইংরেজি বানান Dacca (ঢাকা) কে পরিবর্তন করে Dhaka (ঢাকা) করা হয় যাতে বাংলা উচ্চারণের সাথে ইংরেজি বানান আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। খুলনা বিভাগের একাংশ নিয়ে ১৯৯৩ সালে বরিশাল বিভাগ গঠিত হয়, এবং ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম বিভাগকে ভেঙে সিলেট বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১০ সালে ২৫ শে জানুয়ারি বৃহত্তর রংপুর আর দিনাজপুর অঞ্চল নিয়ে রংপুর বিভাগ গঠন করা হয়, যা আগে রাজশাহী বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তে অষ্টম বিভাগ হিসেবে ময়মনসিংহ বিভাগের নাম ঘোষণা করা হয়। পূর্বে এটি ঢাকা বিভাগের অংশ ছিল। বর্তমানে প্রস্তাবিত দুইটি বিভাগের নাম পদ্মা ও মেঘনা ।
বিভাগ ভিত্তিক জেলাসমূহ
ঢাকা বিভাগঃ ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, টাইল, নরসিংদী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ী।
চট্টগ্রাম বিভাগঃ চট্টগ্রাম, রাগামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্বাসজার, লক্ষ্মীপুর, চাদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও ব্রক্ষ্মনবাড়িয়া।
রাজশাহী বিভাগঃ রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ , নওগা, নাটোর, পাবনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও জয়পুরহাট ।
খুলনা বিভাগঃ খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা
বরিশাল বিভাগঃ বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা।
রংপুর বিভাগঃ রংপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়।
সিলেট বিভাগঃ সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার।
ময়মনসিংহ বিভাগঃ ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা ও শেরপুর।
চারিদিকে পানি বা জল দ্বারা পরিবেষ্টিত ভূখণ্ডকে দ্বীপ বলা হয়। নিকটবর্তী একাধিক দ্বীপের গুচ্ছকে দ্বীপপুঞ্জ বলা হয়।
প্রাকৃতিকভাবে বিস্তীর্ণ জলরাশি ভূ-ভাগে আবদ্ধ হয়ে একটা স্থায়ী জলাশয় সৃষ্টি করে তাহলে সেই জলাশয়কে হ্রদ বা লেক বলে। হ্রদ হলো ভূ-বেষ্টিত লবণাক্ত বা মিষ্টি স্থির পানির বড় আকারের জলাশয়। হ্রদ উপসাগর বা ছোট সাগরের মতো কোনো মহাসমুদ্রের সাথে সংযুক্ত নয়, তাই এতে জোয়ার ভাটা হয় না। মাটি নিচু হয়েও হ্রদের সৃষ্টি করতে পারে। রাঙ্গামাটি লেকের জেলা হিসেবে পরিচিত।
ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র- ৪ টি।
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট
বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট
পৃথিবীর ৪টি দ্রাঘিমা রেখা (০°, ৯০°, ২৭০° ও ১৮০° ডিগ্রি) এবং ৩টি অক্ষরেখা (কর্কটক্রান্তি রেখা, মকরক্রান্তি রেখা ও নিরক্ষরেখা) পরস্পর ১২টি স্থানে ছেদ করেছে। যার ১০টি পড়েছে সমুদ্রে, আর বাকি ২টি স্থলভাগে। স্থলভাগের একটি মিলনস্থল সাহারা মরুভূমিতে (জনমানবহীন) এবং অন্যটি ফরিদপুরের ভাঙ্গায়। ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ভাঙ্গারদিয়া গ্রামে নির্মান করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু মানমন্দির ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা ও কর্কটক্রান্তি রেখার মিলনস্থল এটি।
একটি দেশের ভৌগোলিক সীমানা থেকে বিচ্ছিন্ন এবং অন্য দেশের ভূখণ্ড বা অন্য দেশের মধ্যে একটি দেশের বিচ্ছিন্ন অঞ্চলকে ছিটমহল বলে। ছিটমহল সমস্যার উদ্ভব হয় ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের সময়।
জেনে নিই
তিনবিঘা করিডোরের অবস্থান তিস্তা নদীর পাড়ে । এটি স্বতন্ত্র ভূমি যা ভারতের মালিকানাধীন সীমান্তবর্তী ৩ বিঘা জায়গার মধ্যে ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ করিডোর দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ছিটমহলে যাতায়াত করা হতো।
জেনে নিই
শিলিগুড়ি করিডোর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির সঙ্গে দেশের অবশিষ্ট অংশের সংযোগরক্ষাকারী একটি সংকীর্ণ ভূখণ্ড পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত এই ভূখণ্ডের আকৃতি মুরগির ঘাড়ের মতো বলে একে চিকেন'স নেক নামেও অভিহত করা হয়। এই ভূখণ্ডের প্রস্থ ২১ থেকে ৪০ কিলোমিটার। এর দুপাশে নেপাল ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র।
ধরি, ভারতের অনুমতি সাপেক্ষে ভারতের ভূমি ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে ভুটানে মালামাল পরিবহন করা হলো এখানে ভারত; বাংলাদেশ ও ভুটান উভয়ের জন্য ট্রানজিট হিসেবে বিবেচিত হবে। এবার আসা যাক কারডোরের ব্যাপারে। করিডোর নিজ দেশের এক অংশ থেকে অন্য অংশে যাবার জন্য ব্যবহৃত ভূখন্ড, যা দ্বিতীয় আরেকটি দেশের আয়ত্বাধীন।
জেনে নিই
বঙ্গোপসাগর হলো বিশ্বের বৃহত্তম উপসাগর। এটি ভারত মহাসাগরের উত্তর অংশে অবস্থিত ত্রিভূজাকৃতির উপসাগর। এই উপসাগরের পশ্চিম দিকে রয়েছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা, উত্তর দিকে রয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ এবং পূর্ব দিকে রয়েছে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড। বঙ্গোপসাগরের ঠিক মাঝখানে বিরাজ করছে ভারতের অধিভুক্ত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। বঙ্গোপসাগরের আয়তন ২১,৭২,০০০ বর্গকিলোমিটার একাধিক বড় নদী এই উপসাগরে এসে মিশেছে: পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা, ইরাবতী, গোদাবরী, মহানদী, কৃষ্ণা, সুবর্ণরেখা, কাবেরী ইত্যাদি। বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলি হল চেন্নাই, চট্টগ্রাম, পায়রা বন্দর, কলকাতা, হলদিয়া, মংলা, বিশাখাপত্তনম ও ইয়াঙ্গুন। বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার এই উপসাগরের তীরে অবস্থিত। এই উপসাগরের তীরে অবস্থিত বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রগুলি হল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, চেন্নাই, পুরি, বিশাখাপট্টনম, সুন্দরবন, দিঘা, ফুকে, কুয়াকাটা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ইত্যাদি ।
জেনে নিই
জাতীয় বিষয় | নাম |
---|---|
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত | আমার সোনার বাংলা |
বাংলাদেশের জাতীয় ভাষা | বাংলা |
বাংলাদেশের জাতীয় ফল | কাঁঠাল |
বাংলাদেশের জাতীয় ফুল | শাপলা |
বাংলাদেশের জাতীয় পশু | রয়েল বেঙ্গল টাইগার |
বাংলাদেশের জাতীয় পাখি | দোয়েল |
বাংলাদেশের জাতীয় খেলা | কাবাডি |
বাংলাদেশের জাতীয় মাছ | ইলিশ |
বাংলাদেশের জাতীয় গাছ | আম |
বাংলাদেশের জাতীয় কবি | কাজী নজরুল ইসলাম |
বাংলাদেশের জাতীয় উৎসব | বাংলা নববর্ষ |
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা | সবুজ আয়তক্ষেত্রের মধ্যে লাল বৃত্ত |
বাংলাদেশের জাতীয় বন | সুন্দরবন |
বাংলাদেশের জাতীয় চিড়িয়াখানা | ঢাকা চিড়িয়াখানা |
বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধ | সম্মিলিত প্রয়াস |
বাংলাদেশের জাতীয় লাইব্রেরী | আগারগাঁও, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা |
বাংলাদেশের জাতীয় বিমানবন্দর | হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর |
বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ | বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ |
বাংলাদেশের জাতীয় স্টেডিয়াম | বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম |
বাংলাদেশের জাতীয় পার্ক | ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান |
বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘর | বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, শাহবাগ, ঢাকা |
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সবুজ আয়তক্ষেত্রের মধ্যে লাল বৃত্ত ও সবুজ রং বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতি ও তারুণ্যের প্রতীক বৃত্তের লাল রং উদীয়মান সূর্য ও স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারীদের রক্তের প্রতীক। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সাথে জাপানের জাতীয় পতাকা মিল রয়েছে, কিন্তু পার্থক্য হচ্ছে সবুজের জায়গায় জাপানীরা সাদা ব্যবহার করে। এছাড়া বাংলাদেশের পতাকায় লাল বৃত্তটি একপাশে একটু চাপানো হয়েছে যেন পতাকা যখন উড়বে তখন বৃত্তটি পতাকার মাঝখানে দেখা যায়।
জেনে নিই
স্বাধীনতা আন্দোলনের পরিক্রমা বা পর্যায় হিসেবে সাতটি ঘটনাকে বিবেচনা করে সৌধটি নির্মিত হয়েছে।
ঘটনাগুলো হলঃ
১৯৭২ এর ১৬ই ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৮২ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হোসেন মুহাম্মাদ এরশাদ এর উদ্বোধন করেন ।
আয় চলে আয় ধুমকেতু, আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু
দুর্দিনের এই দুর্গশিরে উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন।'
কাজী নজরুল ইসলামের উপাধি ও পদক
বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে কয়েক ধরনের পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ব্যক্তি বিশেষ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। উল্লখযোগ্য কিছু পুরস্কার নিম্নরূপ-
স্বাধীনতা পদক
বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় পুরষ্কার। পুরস্কারটি প্রবর্তন করেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। প্রথম স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয় ১৯৭৭ সালে। প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে (২৬শে মার্চ) এই পদক প্রদান করা হয়ে আসছে। জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে (সরকার কর্তৃক নির্ধারিত) গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের নাগরিক এমন ব্যক্তি বা গোষ্ঠিকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়ে থাকে। এছাড়াও ব্যক্তির পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য প্রতিষ্ঠানসমূহকেও এই পুরস্কার প্রদান করা হয়ে থাকে। সর্বোচ্চ ১০ জনকে প্রতিবছর স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়।
একুশে পদক
বাংলাদেশে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। বাংলাদেশের বিশিষ্ট ভাষাসৈনিক, ভাষাবিদ, সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানকারী, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ এই পুরষ্কার প্রদান করা হয়। একুশে পদক প্রদান করা হচ্ছে ১৯৭৬ সাল থেকে। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ১৯৭৬ সালে এই পদকের প্রবর্তন করেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান । প্রথম একুশে পদক প্রদান করা হয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে।
বাংলা একাডেমী পুরস্কার
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার। এটি প্রবর্তন করা হয় ১৯৬০ সালে। বাংলা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রতি বছর এ পুরস্কার দেওয়া হয়। এ পুরস্কার শুধু ব্যক্তিবিশেষকে দেওয়া হয়। শিশু একাডেমী পুরস্কার শিশুসাহিত্যে সার্বিক অবদানের জন্য বাংলাদেশ শিশু একাডেমী বছরে একজন সাহিত্যিককে এ পুরস্কার প্রদান করে। ১৯৮৯ সাল থেকে এ পুরস্কার চালু করা হয়। মরণোত্তর পুরস্কার হিসেবে এই পুরস্কার দেওয়ার বিধান নেই।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার
চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য সরকার ব্যক্তিবিশেষকে এবং শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্রকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করে থাকে। এটি প্রবর্তন করা হয় ১৯৭৬ সালে। ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান করা হয়। এটি প্রবর্তন করা হয় ১৯৭৬ সালে।
রবীন্দ্র পুরস্কার
বাংলা একাডেমী ২০১০ সালে রবীন্দ্র পুরস্কার প্রবর্তন করেছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গীতের চর্চা এবং রবীন্দ্র সঙ্গীতের বিকাশের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তিবিশেষকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
নজরুল পুরস্কার
ইনস্টিটিউট ২০২২ সালে নজরুল পুরস্কার প্রবর্তন করেছে। কবি নজরুল ইসলাম সম্পর্কে গবেষণা এবং নজরুলগীতির বিকাশে অবদানের জন্য প্রতিবছর ব্যক্তিবিশেষকে এ পুরস্কার প্রদান করা হবে।
সংসদ ভবন বা জাতীয় সংসদ কমপ্লেক্স ঢাকার শেরে বাংলা নগরে ২১৫ একর জায়গার ওপর অবস্থিত। ৯ তলা বিশিষ্ট ভবনটির মূল স্থপতি লুই কান। তিনি একজন প্রখ্যাত মার্কিন স্থপতি। বাংলাদেশের সংসদ ভবন উপমহাদেশের অন্যতম স্থাপত্য নিদর্শন। এর স্থাপত্যশৈলী দ্বারা প্রকৃতির বিভিন্ন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রামকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
জেনে নিই
জনগনের পক্ষ থেকে সংবিধান রচনার গুরুদ্বায়িত্ব যে সাংবিধানিক কমিটির মাধ্যমে সম্পাদিত হয় তাকে গণপরিষদ বলে। এই গণপরিষদ ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত অস্থায়ী সংসদ হিসাবে কার্যকর ছিল। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর এবং ১৭ জানুয়ারি যথাক্রমে পাকিস্তান জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে নির্বাচিত ৪৬৯ জন সদস্যের মধ্যে ৪০৩ জন গণপরিষদ সদস্য তালিকায় স্থান পান।
সাল/ব্যক্তি | বিবরণ |
---|---|
১১ জানুয়ারি, ১৯৭২ | অস্থায়ী সাংবিধানিক আদেশ জারি করেন বঙ্গবন্ধু । |
২৩ মার্চ, ১৯৭২ | গণপরিষদের আদেশ জারি করা হয়। |
রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী | গণপরিষদের আদেশ জারি করেন। |
১০ এপ্রিল, ১৯৭২ | গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন বসে। |
মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ | প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। |
শাহ আব্দুল হামিদ | প্রথম অধিবেশনে স্পিকার ছিলেন। |
মোহাম্মদ উল্লাহ | প্রথম অধিবেশনে ডেপুটি স্পিকার ছিলেন। |
১১ এপ্রিল, ১৯৭২ | সংবিধান রচনা কমিটি গঠন করা হয়। |
১৭ এপ্রিল, ১৯৭২ | সংবিধান প্রণয়ন কমিটি প্রথম অধিবেশন সম্পন্ন করে। |
১২ অক্টোবর, ১৯৭২ | সংবিধানের খসড়া গণপরিষদে উত্থাপন করা হয়। |
৪ নভেম্বর, ১৯৭২ | খসড়া সংবিধান গণপরিষদ কর্তৃক গৃহীত হয়। সংবিধান দিবস ৪ নভেম্বর পালিত হয় । বাংলা ১৮ই কার্তিক, ১৩৭৯ বঙ্গাব্দ। |
১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর, ১৯৭২ | গণপরিষদের সদস্যগণ খসড়া সংবিধানে স্বাক্ষর করেন। প্রথম স্বাক্ষর করেন শেখ মজিবুর রহমান। |
১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২ | সংবিধান কার্যকর ও গণপরিষদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। |
সংবিধান প্রণয়ন কমিটি
সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের সংবিধান রচনা কমিটির গঠন করা হয়। এই কমিটি ১৭ এপ্রিল, ১৯৭২ সালে প্রথম অধিবেশন সম্পন্ন করে। কমিটিতে একমাত্র মহিলা সদস্য ছিলেন রাজিয়া আক্তার বানু। একমাত্র বিরোধী দলীয় সদস্য ছিলেন সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত।
প্রাসঙ্গিক তথ্য
প্রথম ভাগ-প্রজাতন্ত্র
অনুচ্ছেদ | বিষয় |
---|---|
১ | প্রজাতন্ত্র |
২ | প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানা |
২ক | রাষ্ট্রধর্ম |
৩ | রাষ্ট্রভাষা |
৪ | জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকা ও জাতীয় প্রতীক |
৪ক | বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি স্থাপন |
৫ | রাজধানী |
৬ | নাগরিকত্ব |
৭ | সংবিধানের প্রাধান্য |
৭ক | সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ |
৭খ | সংবিধানের মৌলিক বিষয়াবলী সংশোধন অযোগ্য। |
দ্বিতীয় ভাগ - রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি
অনুচ্ছেদ | বিষয় |
---|---|
৮ | মূলনীতিসমূহ |
৯ | জাতীয়তাবাদ |
১০ | সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্তি |
১১ | গণতন্ত্র ও মানবাধিকার |
১২ | ধর্ম নিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা |
১৩ | মালিকানার নীতি |
১৪ | কৃষক ও শ্রমিকের মুক্তি |
১৫ | মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা |
১৬ | গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব |
১৭ | অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা |
১৮ | অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা |
১৮ক | পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন |
১৯ | সুযোগের সমতা |
২০ | অধিকার ও কর্তব্যরূপে কর্ম |
২১ | নাগরিক ও সরকারি কর্মচারীদের কর্তব্য |
২২ | নির্বাহী বিভাগ হইতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ |
২৩ | জাতীয় সংস্কৃতি |
২৩ক | উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি |
২৪ | জাতীয় স্মৃতিনিদর্শন প্রভৃতি |
২৫ | আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন। |
তৃতীয় ভাগ- মৌলিক অধিকার
অনুচ্ছেদ | বিষয় |
---|---|
২৬ | মৌলিক অধিকারের অসামঞ্জস্য আইন বাতিল |
২৭ | আইনের দৃষ্টিতে সমতা |
২৮ | ধর্ম প্রভৃতি কারণে বৈষম্য |
২৯ | সরকারি নিয়োগলাভে সুযোগের সমতা |
৩০ | বিদেশি খেতাব প্রভৃতি গ্রহণ নিষিদ্ধকরণ |
৩১ | আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার |
৩২ | জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার অধিকার রক্ষণ |
৩৩ | গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ |
৩৪ | জবরদস্তি-শ্রম নিষিদ্ধকরণ |
৩৫ | বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে রক্ষাকবচ |
৩৬ | চলাফেরার স্বাধীনতা |
৩৭ | সমাবেশের স্বাধীনতা |
৩৮ | সংগঠনের স্বাধীনতা |
৩৯ | চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক্ স্বাধীনতা |
৪০ | পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা |
৪১ | ধর্মীয় স্বাধীনতা |
৪২ | সম্পত্তির অধিকার |
৪৩ | গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ |
৪৪ | মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ |
৪৫ | শৃঙ্খলামূলক আইনের ক্ষেত্রে অধিকারের পরিবর্তন |
৪৬ | দায়মুক্তি-বিধানের ক্ষমতা |
৪৭ | কতিপয় আইনের হেফাজত |
৪৭ক | সংবিধানের কিছু বিধান যেসব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। |
চতুর্থ ভাগ - নির্বাহী বিভাগ
অনুচ্ছেদ | বিষয় |
---|---|
৪৮ | রাষ্ট্রপতি |
৪৯ | রাষ্ট্রপতি ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার |
৫০ | রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ |
৫১ | রাষ্ট্রপতির দায়মুক্তি |
৫২ | রাষ্ট্রপতির অভিশংসন |
৫৩ | অসামর্থ্যের কারণে রাষ্ট্রপতির অপসারণ |
৫৪ | অনুপস্থিতি প্রভৃতির কালে রাষ্ট্রপতি-পদে স্পিকার |
৫৫ | মন্ত্রিসভা |
৫৬ | মন্ত্রিগণ |
৫৭ | প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ |
৫৮ | মন্ত্রীর পদের মেয়াদ |
৫৯ | স্থানীয় শাসন |
৬০ | স্থানীয় শাসন-সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা |
৬১ | সর্বাধিনায়ক |
৬২ | প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগে ভর্তি প্রভৃতি |
৬৩ | যুদ্ধ |
৬৪ | অ্যাটর্নি জেনারেল |
পঞ্চম ভাগ- আইনসভা
অনুচ্ছেদ | বিষয় |
---|---|
৬৫ | সংসদ-প্রতিষ্ঠা |
৬৬ | সংসদে নির্বাচিত হইবার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা |
৬৭ | সদস্যদের আসন শূন্য হওয়া |
৬৮ | সংসদ সদস্যদের পারিশ্রমিক |
৬৯ | শপথগ্রহণের পূর্বে আসনগ্রহণ বা ভোটদান করিলে সদস্যের অর্থদণ্ড |
৭০ | রাজনৈতিক দল হতে পদত্যাগ বা দলের বিপক্ষে ভোটদানের কারণে আসন শূন্য হওয়া |
৭১ | দ্বৈত-সদস্যতায় বাধা |
৭২ | সংসদের অধিবেশন |
৭৩ | সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও বাণী |
৭৩ক | সংসদ সম্পর্কে মন্ত্রিগণের অধিকার |
৭৪ | স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার |
৭৫ | কার্যপ্রণালী-বিধি, কোরাম প্রভৃতি |
৭৬ | সংসদের স্থায়ী কমিটিসমূহ |
৭৭ | ন্যায়পাল |
৭৮ | সংসদ ও সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি |
৭৯ | সংসদ সচিবালয় (Secretariat of Parliament) |
৮০ | আইনপ্রণয়ন-পদ্ধতি |
৮১ | অর্থবিল |
৮২ | আর্থিক ব্যবস্থাবলীর সুপারিশ |
৮৩ | সংসদের আইন ব্যতীত কর আরোপ নিষিদ্ধ |
৮৪ | সংযুক্ত তহবিল ও প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব |
৮৫ | সরকারি অর্থের নিয়ন্ত্রণ |
৮৬ | প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসেবে প্রদেয় অর্থ |
৮৭ | বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি |
৮৮ | সংযুক্ত তহবিলের উপর দায় |
৮৯ | বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি সম্পর্কিত পদ্ধতি |
৯০ | নির্দিষ্টকরণ হিসাব |
৯১ | সম্পূরক ও অতিরিক্ত মঞ্জুরী |
৯২ | হিসাব , ঋণ প্রভৃতির উপর ভোট |
৯৩ | অধ্যাদেশ প্রণয়ন-ক্ষমতা |
ষষ্ঠ ভাগ- বিচার বিভাগ
অনুচ্ছেদ | বিষয় |
---|---|
৯৪ | সুপ্রীম কোর্টের প্রতিষ্ঠা |
৯৫ | বিচারক নিয়োগ |
৯৬ | বিচারকদের পদের মেয়াদ |
৯৬(৩) | সুপ্রীম জুডিসিয়াল কাউন্সিল |
৯৬(৪) | সুপ্রীম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের দায়িত্ব ও ক্ষমতা |
৯৭ | স্থায়ী প্রধান বিচারপতি |
৯৮ | সুপ্রীম কোর্টের অতিরিক্ত বিচারক |
৯৯ | অবসর গ্রহণের পর বিচারকগণের অক্ষমতা |
১০০ | সুপ্রীম কোর্টের আসন |
১০১ | হাইকোর্ট বিভাগের এখতিয়ার |
১০২ | হাইকোর্ট এর ক্ষমতা |
১০৩ | আপীল বিভাগের ক্ষমতা |
১০৪ | আপীল বিভাগের পরোয়ানা জারী ও প্রয়োগ |
১০৫ | আপীল বিভাগ কর্তৃক রায় বা আদেশ পুনর্বিবেচনা |
১০৬ | সুপ্রীম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার |
১০৭ | সুপ্রিম কোর্টের বিধিপ্ৰণয়ন-ক্ষমতা |
১০৮ | “কোর্ট অব রেকর্ড" রূপে সুপ্রীম কোর্ট |
১০৯ | আদালতসমূহের উপর তত্ত্বাবধায়ন ও নিয়ন্ত্রণ |
১১০ | অধস্তন আদালত হইতে হাইকোর্ট বিভাগে মামলা স্থানান্তর |
১১১ | সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বাধ্যতামূলক |
১১২ | সুপ্রীম কোর্টের সহায়তা |
১১৩ | সুপ্রীম কোর্টের কর্মচারীগণ |
১১৪ | অধস্তন বা নিম্ন আদালতসমূহ প্রতিষ্ঠা |
১১৫ | অধস্তন আদালতে নিয়োগ |
১১৬ | অধস্তন আদালতসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা |
১১৬ক | বিচারবিভাগীয় কর্মচারীগণ বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা |
১১৭ | প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালসমূহ |
সপ্তম ভাগ - নির্বাচন
অনুচ্ছেদ | বিষয় |
---|---|
১১৮ | নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা |
১১৯ | নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব |
১২০ | নির্বাচন কমিশনের কর্মচারীগণ |
১২১ | প্রতি এলাকার জন্য একটিমাত্র ভোটার তালিকা |
১২২ | ভোটার হওয়ার যোগ্যতা |
১২৩ | নির্বাচন-অনুষ্ঠানের সময় |
১২৪ | নির্বাচন সম্পর্কে সংসদের বিধান প্রণয়নের ক্ষমতা |
১২৫ | নির্বাচনী আইন ও নির্বাচনের বৈধতা |
১২৬ | নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের সহায়তা |
অষ্টম ভাগ: মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক
অনুচ্ছেদ | বিষয় |
---|---|
১২৭ | মহা হিসাব-নিরীক্ষক পদের প্রতিষ্ঠা |
১২৮ | মহা হিসাব-নিরীক্ষকের দায়িত্ব |
১২৯ | মহা হিসাব-নিরীক্ষকের কর্মের মেয়াদ |
১৩০ | অস্থায়ী মহা হিসাব-নিরীক্ষক |
১৩১ | প্রজাতন্ত্রের হিসাব রক্ষার আকার ও পদ্ধতি |
১৩২ | সংসদে মহা হিসাব-নিরীক্ষকের রিপোর্ট উপস্থাপন |
নবম ভাগ - বাংলাদেশের কর্ম বিভাগ
অনুচ্ছেদ | বিষয় |
---|---|
১৩৩ | নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী |
১৩৪ | কর্মের মেয়াদ |
১৩৫ | অসামরিক সরকারি কর্মচারীদের বরখাস্ত প্রভৃতি |
১৩৬ | কর্মবিভাগ-পুনর্গঠন |
১৩৭ | কর্ম কমিশন প্রতিষ্ঠা |
১৩৮ | সদস্য নিয়োগ |
১৩৯ | পদের মেয়াদ |
১৪০ | কমিশনের দায়িত্ব |
১৪১ | বার্ষিক রিপোর্ট |
নবম ভাগ- জরুরী বিধানাবলী
অনুচ্ছেদ | বিষয় |
---|---|
১৪১(ক) | জরুরী অবস্থা ঘোষণা |
১৪১(খ) | জরুরী অবস্থার সময় কতিপয় অনুচ্ছেদের বিধান স্থগিতকরণ |
১৪১(গ) | জরুরি অবস্থায় মৌলিক অধিকার স্থগিতকরণ |
দশম ভাগ-সংবিধান সংশোধন
১৪২ | সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা |
একাদশ ভাগ- বিবিধ
অনুচ্ছেদ | বিষয় |
---|---|
১৪৩ | প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তি |
১৪৪ | সম্পত্তি ও কারবার প্রভৃতি-প্রসঙ্গে নির্বাহী কর্তৃত্ব |
১৪৫ | চুক্তি ও দলিল |
১৪৫(ক) | আন্তর্জাতিক চুক্তি |
১৪৬ | বাংলাদেশের নামে মামলা |
১৪৭ | কতিপয় পদাধিকারীর পারিশ্রমিক প্রভৃতি |
১৪৮ | পদের শপথ |
১৪৯ | প্রচলিত আইনের হেফাজত |
১৫০ | ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলী |
১৫১ | রহিতকরণ |
১৫২ | সংবিধানে ব্যবহৃত কয়েকটি শব্দের ব্যাখ্যা |
তফসিল শব্দের বাংলা অর্থ বিবরণ। কোনো বিষয়ে আলোচনার পর সে আলোচনাকে বোধগম্য করার জন্য অতিরিক্ত বিবরণের প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত আলোচনাকে তফসিল বলে। বাংলাদেশের সংবিধানে তফসিল ৭টি।
তফসিল
প্রথম তফসিল - অন্যান্য বিধান সত্ত্বেও কার্যকর আইন
দ্বিতীয় তফসিল - রাষ্ট্রপতি নির্বাচন (বর্তমানে বিলুপ্ত)
তৃতীয় তফসিল - শপথ ও ঘোষণা
চতুর্থ তফসিল - ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানবলী
পঞ্চম তফসিল - ১৯৭১ সালের ৭-ই মার্চের ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণ।
ষষ্ঠ তফসিল - ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা।
সপ্তম তফসিল - ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র।
সংশোধনী | বিষয় |
---|---|
প্রথম সংশোধনী- ১৯৭৩ | যুদ্ধবন্দী এবং অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করণ। |
দ্বিতীয় সংশোধনী- ১৯৭৩ | অভ্যন্তরীণ কিংবা বাহ্যিক গোলযোগে জরুরী অবস্থা ঘোষণার বিধান। |
তৃতীয় সংশোধনী— ১৯৭৪ | সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী ভারতকে বেরুবাড়ী হস্তান্তর। |
চতুর্থ সংশোধনী- ১৯৭৫ |
|
পঞ্চম সংশোধনী- ১৯৭৯ | ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সামরিক সরকারের সকল কাজের বৈধতা দান প্রসঙ্গে । |
ষষ্ঠ সংশোধনী- ১৯৮১ | উপ-রাষ্ট্রপতির পদ থেকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের বিধান নিশ্চিত করণ। |
সপ্তম সংশোধনী- ১৯৮৬ | ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত সামরিক সরকারের সকল আদেশের বৈধতা অনুমোদন প্রসঙ্গে । |
অষ্টম সংশোধনী- ১৯৮৮ |
|
নবম সংশোধনী- ১৯৮৯ |
|
দশম সংশোধনী- ১৯৯০ | সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত ১০ টি আসনের মেয়াদ আরো ১০ বছরের জন্য বৃদ্ধিকরণ । |
একাদশ সংশোধনী- ১৯৯১ | অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ এর স্বপদে ফিরে যাওয়ার বিধান সম্বলিত। |
দ্বাদশ সংশোধনী- ১৯৯১ | রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের পরিবর্তে সংসদীয় সরকার পুনঃপ্রবর্তন। |
ত্রয়োদশ সংশোধনী- ১৯৯৬ | অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালুকরণ। |
চতুর্দশ সংশোধনী ২০০৪ | সংসদে নারীদের জন্য ৪৫ টি সংরক্ষিত আসন বৃদ্ধি। প্রধান বিচারপতির অবসর বয়সসীমা ৬৫ থেকে ৬৭ বছরে উন্নিত। |
পঞ্চদশ সংশোধনী- ২০১১ |
|
ষোড়শ সংশোধনী- ২০১৪ |
নোট: ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। |
সপ্তদশ সংশোধনী-২০১৮ | জাতীয় সংসদের ৫০টি নারী সংরক্ষিত আসন আরো ২৫ বছরের জন্য বহাল রাখা প্রসঙ্গে। |
সাংবিধানিক পদ
সাংবিধানিক সংস্থা
সংবিধান অনুযায়ী পদত্যাগপত্র পেশ
রাষ্ট্রপতি | স্পিকারের নিকট |
স্পিকার | রাষ্ট্রপতির নিকট |
সংসদ সদস্য | রাষ্ট্রপতি স্পিকার |
প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীবৃন্দ | স্পিকারে নিকট |
কে কাকে শপথ পাঠ করান
বাংলাদেশ সরকারের অঙ্গ সংগঠন
বাংলাদেশের সরকার গঠিত হয়েছে ৩টি বিভাগ নিয়ে। যথা:
উপজেলার প্রধান প্রশাসক হলেন সিনিয়র সহকারি সচিব পদমর্যাদার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO)
দেশের বিভিন্ন এলাকায় কর আরোপসহ সীমিত ক্ষমতাদান করে যে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়, তাকে স্থানীয় সরকার বলে। বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার কাঠামো তিন স্তর বিশিষ্ট। এছাড়াও শহরগুলোতে পৌরসভা, বড় শহরে সিটি কর্পোরেশন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলায় ৩টি (খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙামাটি) স্থানীয় জেলা পরিষদ রয়েছে। স্থানীয় শাসন অর্ডিন্যান্স জারি হয়- ১৯৭৬ সালে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন | পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন | |
---|---|---|
গ্রামভিত্তিক স্থানীয় সরকার | শহর ভিত্তিক স্থানীয় সরকার | পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ |
জেলা পরিষদ | সিটি কর্পোরেশন | বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ |
উপজেলা পরিষদ | পৌরসভা | রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ |
ইউনিয়ন পরিষদ | - | খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ |
|
|
|
ওবাইদুল কাদের
সৈয়দ আবুল হোসেন
মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন
জি.এম. কাদের
আইন বিভাগ
সংসদের অধিবেশন
সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ
সংসদে স্থায়ী কমিটি
বিদেশি অতিথি
জাতীয় সংসদে এ পর্যন্ত ২ জন বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান বক্তৃতা প্রদান করেছেন
ওয়াক আউট
সংসদ বর্জন
ফ্লোর ক্রসিং
ট্রেজারি বেঞ্চ
বিল
চিফ হুইপ
কাস্টিং ভোট
আইন বিভাগ
বাংলাদেশে ৩ বার গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ২ বার অনুষ্ঠিত হয় প্রশাসনিক গণভোট এবং ১ বার অনুষ্ঠিত হয় সাংবিধানিক গণভোট।
প্রথম গণভোট
দ্বিতীয় গণভোট
তৃতীয় গণভোট
বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচন
জেনে নিই
পারিবারিক আদালতের অধিক্ষেত্রগুলো-
ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়ার শর্তাবলী:
নাগরিক অধিকার রক্ষায় বিচার বিভাগের ৫ ধরনের রীট প্রয়োগ করে। যথা:
নম্বর | সেবা |
---|---|
১৬১২৩ | কৃষি বিষয়ক যে কোন পরামর্শ পেতে বিনামূল্যে কল করা যাবে। কৃষি, মৎস, প্রানীসম্পদ বিষয়ক যে কোন পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জানা যাবে। |
১৩১ | বাংলাদেশ রেলওয়ে কল সেন্টার। ট্রেন এর টিকিট সম্পর্কে জানতে কল করা যাবে। |
১০৯ | নারী নির্যাতন বা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে- এই সেবা নেওয়া যাবে। |
১০৫ | জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্য কল সেন্টার। |
১৬২৫৬ | ইউনিয়ন সহায়তামুলক কল সেন্টারে। |
১৬১০৮ | মানবাধিকার সহায়ক কল সেন্টার। মানবাধিকার বিঘ্নিত হলে সেবা নিতে পারে যে কেউ। |
১৬২৬৩ | বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য কল সেন্টার। যে কোন সমস্যায় ২৪ ঘন্টায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ পাওয়া যাবে। |
৩৩৩ | জাতীয় তথ্যবাতায়ন কল সেন্টার। বাংলাদেশের যে কোন তথ্য জানতে ও সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে। |
১০০ | বিটিআরসি কল সেন্টার। |
১৬৪২০ | বিটিসিএল কল সেন্টার। |
১০৯৮ | শিশু সহায়তামূলক কল সেন্টার। চারপাশে শিশুদের যে কোন সমস্যা হলে বিনামূল্যে কল করে সেবা নেওয়া যাবে। |
১০৬ | দুর্নীতি দমন কমিশনের করে সেবা নেওয়া যাবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের কল সেন্টার। যে কোন দুর্নীতি চোখে পড়লে বিনামূল্যে কল করে জানানো যাবে। |
১৬৪৩০ | সরকারি আইনি সহায়তা কল সেন্টার। আইনগত যে কোন পরামর্শ বা সাহায্য পেতে বিনামূল্যে কল করা যাবে। |
৯৯৯ | বাংলাদেশের জরুরি কল সেন্টার। এখানে বিনামূল্যে ফোন করে জরুরী মুহুর্তে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও এ্যাম্বুলেন্স এর সাহায্যের জন্য। এছাড়াও যে কোন অপরাধের তথ্যও পুলিশকে জানানো যাবে। |
ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২
উপজাতি নিয়ে কিছু তথ্য জেনে নিই
নাম | অবস্থান |
---|---|
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক একাডেমী | বিরিশিরি, নেত্রকোনা |
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র | রাঙ্গামাটি |
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট | বান্দরবান |
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট | খাগড়াছড়ি |
মণিপুরী ললিতকলা একাডেমি | মৌলভীবাজার |
রাখাইন সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট | রামু, কক্সবাজার |
নোট: রাজশাহী ও কক্সবাজারে আরোও দুইটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটসহ মোট প্রতিষ্ঠান- ৮ টি।
পার্বত্য অঞ্চলে অধিক টাকার বিনিময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বহিরাগতদের কাছে কার্পাস বা তুলার কর আদায়ের চুক্তি করে ইজারা দিতে থাকে। এহেন পরিস্থিতিতে চাকমাদের জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়ে। প্রথম ১৭৭৬ সালে চাকমা দলপতি রাজা শের দৌলত ও তাঁর সেনাপতি রামু খাঁর নেতৃতে প্রথমবার চাকমা বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।
মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ছোট ভাই। পাহাড়ি অধিকার অন্দোলন কর্মী ও জনসংহতি সমিতির বর্তমান সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা বা সন্তু লারমা।
নদী(River) নদী যে অঞ্চলে উৎপত্তি লাভ করে তাকে নদীর উৎস এবং যে স্থানে সমুদ্রে বা হ্রদে মিলিত হয় সেই স্থানকে মোহনা বলে নদীর চলার পথে কখনও কখনও ছোট ছোট অন্যান্য নদী বা জলধারা এসে মিলিত হয়ে প্রবাহ দান করে- এগুলো উপনদী নামে পরিচিত। একটি নদী এবং এর উপনদীসমূহ একত্রে একটি নদীপ্রণালী বা নদীব্যবস্থা (river system) গঠন করে ভূ-পৃষ্ঠ কখনও পুরোপুরি সমতল নয় ফলে তৈরী হয় শাখা নদীর।
জেনে নিই
নদী | উৎপত্তিস্থল |
---|---|
পদ্মা | হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে। |
মেঘনা | আসামের লুসাই পাহাড় থেকে |
সাঙ্গু | আরাকান পর্বত হতে |
করতোয়া | সিকিম রাজ্যের পার্বত্য অঞ্চল থেকে |
হালদা | খাগড়াছড়ির জেলার বাদনাতলী পর্বত শৃঙ্গ থেকে |
নাফ | মিয়ানমারের আরাকান পর্বত থেকে |
কর্ণফুলী | ভারতের মিজোরাম রাজ্যেও লুসাই পাহাড় থেকে |
ব্ৰহ্মপুত্র | হিমালয় পর্বতের কৈলাস শৃঙ্গের মানস সরোবর হ্রদ হতে |
ফেনী | পার্বত্য ত্রিপুরা হতে |
তিস্তা | ভারতের সিকিম পর্বত হতে |
গোমতী | ত্রিপুরা পাহাড় হতে |
নদ-নদী | মিলিত স্থান | নতুন নাম ধারন |
---|---|---|
পদ্মা + যমুনা | গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) | পদ্মা |
পদ্মা + মেঘনা | চাঁদপুর | মেঘনা |
তিস্তা + ব্ৰহ্মপুত্র | চিলমারী (কুড়িগ্রাম) | ব্ৰহ্মপুত্ৰ |
সুরমা + কুশিয়ারা | আজমিরিগঞ্জ (হবিগঞ্জ) | কালনী |
বাঙ্গালি + যমুনা | বগুড়া | যমুনা |
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র + মেঘনা | ভৈরব বাজার (কিশোরগঞ্জ) | মেঘনা |
ধলেশ্বরী + শীতলক্ষ্যা | নারায়ণগঞ্জ | শীতলক্ষ্যা |
বাংলাদেশের প্রথম পানি জাদুঘর পটুয়াখালী জেলায় কলাপাড়ার অবস্থিত যা ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪ সালে অ্যাকশন এইড নামের একটি এনজিও স্থাপন করে। বাংলাদেশের মানুষের নদী-কেন্দ্রিক জীবন-জীবিকা ও সংস্কৃতি তুলে ধরাই এর উদ্দেশ্য । এই জাদুঘরে রয়েছে বাংলাদেশের ৭০০টি নদীর ইতিহাস ও বিভিন্ন নদীর পানি। এছাড়াও রয়েছে নদীর ছবি, নদীর পানির ইতিহাস ও জলবায়ু । জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার চিত্রসহ বিভিন্ন তথ্য। বাংলাদেশের সঙ্গে ৫৭টি আন্তর্জাতিক অভিন্ন নদীর তথ্য ও ইতিহাস রয়েছে এই জাদুঘরে। দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পানি জাদুঘরও এটি।
২০১৯ সালে হাইকোর্ট কর্তৃক ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে ঢাকার তুরাগ নদী বাংলাদেশের প্রথম নদী হিসেবে জীবন্ত সত্ত্বার মর্যাদা লাভ করে। এটি বাংলাদেশের শতবর্ষী ডেল্টা প্লানের একটি অংশ অর্থাৎ তুরাগ নদী এখন থেকে মানুষের মত কতগুলো মৌলিক অধিকার ভোগ করবে। নদীকে জীবন্তসত্ত্বা ঘোষণাকারী দেশসমূহ হলো কলম্বিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারত ও বাংলাদেশ। উল্লেখ্য যে, বিশ্বে সর্বপ্রথম ২০১৭ সালে নদীকে জীবন্ত সত্ত্বা ঘোষণাকারী দেশ কলম্বিয়া।
১৯৭৭ সালে ঢাকায় নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বাংলাদেশ সরকারের পানি সম্পদ রে অধীনে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা যা তিনটি বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত (হাইড্রোলিক রিসার্চ, জিওটেকনিক্যাল রিসার্চ অর্থ ও প্রশাসন অধিদপ্তর)। ১৯৮৯ সালে এটি ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় স্থানান্তর করা হয়।
টিপাইমুখ বাঁধ, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১০০ কিলোমিটার উজানে ভারতের বরাক নদীর ওপর নির্মিতব্য (২০০৯) একটি বাঁধ। টিপাইমুখ নামের গ্রামে বরাক এবং টুইভাই নদীর মিলনস্থল। এই মিলনস্থলের ১ হাজার ৬০০ ফুট দূরে বরাক নদীতে ১৬২.৮ মিটার উঁচু ও ১ হাজার ৬০০ ফুট দীর্ঘ বাঁধ নির্মাণ করে ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ভারত সরকার কাজ শুরু করেছে। অভিন্ন নদীর উজানে এই বাঁধ ভাটির বাংলাদেশের পরিবেশ আর অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে এমত আশঙ্কা করেন বিশেষজ্ঞরা।
তিস্তা সেচ প্রকল্প হলো বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প। এ প্রকল্পটি নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ৫ লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা প্রদান করে এর কাজ শুরু হয় ১৯৭৯ সালে এবং শেষ হয় ১৯৯০ সালে। সেচ প্রকল্পটির পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্বে রয়েছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
গঙ্গা নদীর দক্ষিণ তীরের বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে (বাংলাদেশের ভূখন্ডে) সেচের জন্য বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক গৃহীত একটি প্রকল্প। জি-কে প্রকল্প বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ সেচ প্রকল্প। কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ এবং মাগুরা জেলার ১,৯৭,৫০০ হেক্টর জমি এ সেচ কার্যক্রমের আওতাভুক্ত। এর মধ্যে ১,৪২,০০০ হেক্টর জমি সেচযোগ্য। উল্লিখিত চারটি জেলার সর্বমোট ১৩টি উপজেলায় এ কার্যক্রম বিস্তৃত।
কৃষি সম্পদে বিভিন্ন ফসল
পাট
চা
তুলা
তামাক
রেশম
রাবার
ধান
গম
আলু
আম
কৃষি সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য
জেনে নিই
বনভূমির পরিমান
জাতীয় বন
জেনে নিই
খনিজ সম্পদ
প্রাকৃতিক গ্যাস
তেল
চীনা মাটি
চুনাপাথর
কয়লা খনি
তেজস্ক্রিয় বালু
প্রাকৃতিক গ্যাস
তেল
চীনা মাটি
বাংলাদেশ এশিয়ার ১৯তম বৃহৎ গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ। দেশীয় জ্বালানী চাহিদার ৫৬ শতাংশ পূরণ করে গ্যাস। বাংলাদেশ অপরিশোধিত তেল ও খনিজ দ্রব্যাদির অন্যতম আমদানিকারক দেশ। দেশের জ্বালানী খাত রাষ্ট্র মালিকানাধীন কোম্পানি যেমন: বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন ও পেট্রোবাংলা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এদেশের হাইড্রোকার্বন শিল্পে কাজ করা আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে শেভরন, কনোকোফিলিপস, স্ট্যাটওয়েল, গ্যাসপ্রম এবং ওএনজিসি। যেখানে প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের ৫০ শতাংশ আসে শেভরনের গ্যাস কূপগুলো থেকে। ভূতত্ত্ববীদদের বিশ্বাস, সমুদ্রসীমার এক্সকুসিভ ইকোনোমিক জোনে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ তেল ও গ্যাসের মজুদ রয়েছে। ইন্দো-বাংলা পেট্রোলিয়াম কোম্পারি পূর্ব বাংলায় প্রথম খনিজ তেলের কূপ খনন করে চট্টগ্রামে ১৯০৮ সালে। ১৯৫৫ সালে বার্মা খনিজ তেল কোম্পানি সিলেটে গ্যাসের সন্ধান পায়। বর্তমানে দেশে মোট তেল গ্যাস অনুসন্ধান ব্লক রয়েছে ৪৯ টির মধ্যে স্থলভাগে ২৩ টি ও সমুদ্রে ২৬ টি।
জেনে নিই
Water Resources Planning Organization (WRPO) বা পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দেশের পানি সম্পদের সামষ্টিক পরিকল্পনা প্রণয়নে একমাত্র সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠান। দেশের সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন ও এর সুষম ব্যবহার নিশ্চিতের লক্ষ্যে পানি সম্পদ পরিকল্পনা আইন ১৯৯২ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ওয়ারপো সৃষ্টি হয়। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৩ হতে ১৯৯১ সালে জাতীয় পানি পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত “মাস্টার প্লান অরগানাইজেশন" বা এমপিও এর কার্যক্রম পরিচালনা করে। বাংলাদেশে প্রথম আর্সেনিক ধরা পড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ১৯৯৩ সালে। বর্তমানে সর্বাধিক আর্সেনিক আক্রান্ত জেলা চাঁদপুর। দেশে মোট আর্সেনিক আক্রান্ত জেলা- ৬১ টি অন্যদিকে আর্সেনিক মুক্ত জেলা - ৩টি যথা- রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি।
জেনে নিই
জেনে নিই
৪৫ হার্জ
৫০ হার্জ
৫৫ হার্জ
৬০ হার্জ
বাংলাদেশের সরকারি ইপিজেড সমূহ
নাম | আয়তন | অবস্থান | কার্যক্রম শুরু |
---|---|---|---|
চট্টগ্রাম (প্রথম সরকারি) | ৪৫৩ একর | হালিশহর, চট্টগ্রাম | ১৯৮৩ |
ঢাকা | ৩৫৩ একর | সাভার, ঢাকা | ১৯৮৭ |
মংলা | ৪৬০ একর | মংলা, বাগেরহাট | ১৯৯৮ |
কুমিল্লা | ২৬৭ একর | কুমিল্লা | ১৯৯৮ |
ঈশ্বরদী | ৩০৯ একর | পাকশি, পাবনা | ১৯৯৮ |
উত্তরা (একমাত্র কৃষিভিত্তিক) | ২৬৫ একর | সৈয়দপুর, নীলফামারী | ২০০১ |
আদমজি | ২৯৩ একর | নারায়ণগঞ্জ | ২০০৬ |
কর্ণফুলি | ২২২ একর | পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম | ২০০৬ |
শিল্প মন্ত্রণালয় প্রতি হয় ১৯৭২ সালে।
প্রথম শিল্পমন্ত্রী: মুজিবনগর সরকারে শিল্পমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলী।
খুলনা
সাভার
গজারিয়া
ভালুকা
কাগজ কল | প্রতিষ্ঠা সাল | অবস্থান | কাঁচামাল | বিশেষ তথ্য |
---|---|---|---|---|
কর্ণফুলি পেপার মিল | ১৯৫৩ | চন্দ্রঘোনা, রাঙ্গামাটি | বাঁশ | বৃহত্তম কাগজকল |
খুলনা নিউজপ্রিন্ট কারখানা | ১৯৫৯ | খালিশপুর, খুলনা | গেওয়া কাঠ | ২০০২ থেকে বন্ধ |
পাকশী নর্থ বেঙ্গল পেপার মিল | ১৯৭০ | ঈশ্বরদী, পাবনা | আখের ছোবড়া | পদ্মা নদীর তীরে |
সিলেট কাগজ কল ব্যবহৃত | - | - | নলখাগড়া ও ঘাস | মণ্ড ও কাগজ উৎপাদন |
সার কারখানা নিয়ন্ত্রকারী প্রতিষ্ঠান হলো- বিসিআইসি, এর নিয়ন্ত্রানাধীন কারখানার সংখ্যা- ৮ টি।
নাম ও সাল | প্রধান কাঁচামাল/অবস্থান | অতিরিক্ত তথ্য |
---|---|---|
ফেঞ্চুগঞ্জ (১৯৬১) | হরিপুরের প্রাকৃতিক গ্যাস | বাংলাদেশের প্রথম সার কারখানা |
যমুনা সার কারখানা (১৯৯১) | তারাকান্দি, জামালপুরে | সবচেয়ে বড় সার কারখানা। একমাত্র দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী কারখানা। |
কাফকো | - | জাপানের সহায়তায় দেশের সবচেয়ে বড় সার কারখানা |
শিল্প কারখানা | অবস্থান |
---|---|
বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি | গাজীপুর |
বাংলাদেশের একমাত্র তেল শোধনাগার | ইস্টার্ন রিফাইনারি, পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম |
দেশের সবচেয়ে বড় বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম তৈরির কারখানা | ইস্টার্ন ক্যাবলস, চট্টগ্রাম |
বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা | টঙ্গী, গাজীপুর |
বাংলাদেশর মোটর সাইকেল সংযোগ কারখানা | টঙ্গী, গাজীপুর |
বাংলাদেশের একমাত্র অস্ত্র কারখানা | জয়দেবপুর, গাজীপুর |
বাংলাদেশের প্রথম কয়লা শোধনাগার | বিরামপুর হার্ড কোল লিমিটেড, দিনাজপুর |
বাংলাদেশের একমাত্র রেয়ন মিল | কর্ণফুলী রেয়ন মিল, চন্দ্রঘোনা, রাঙামাটি |
বাংলাদেশে সাইকেল তৈরির কারখানা অবস্থিত | ঢাকায় |
বাংলাদেশ সর্বশেষ প্রবেশ করেছে। | হোম টেক্সটাইল শিল্পে |
জেনে নিই
ব্যাংক শব্দটি এসেছে ব্যাংকো থেকে। ব্যাংক তিন প্রকারের চেক প্রদান করে থাকে । একটি বৈধ ঢেকের মেয়াদ থাকে ৬ মাস। ব্যাংক ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড প্রদান করে থাকে লেনদেনের জন্য আন্তঃব্যাংকের সুদের হারকে বলা হয় কল মানি রেট ।
জেনে নিই
মুদ্রা | বিনিময়ের মাধ্যম |
---|---|
মুদ্রার প্রকারভেদ |
|
উপমহাদেশে প্রথম মুদ্রা আইন পাশ | ১৮৩৫ সাল |
উপমহাদেশে প্রথম কাগজের মুদ্রা চালু হয় | ১৮৫৭ সাল (লর্ড ক্যানিং) |
বাংলাদেশে দশমিক মুদ্রা চালু হয় | ১৯৬১ সাল |
বাংলাদেশের একমাত্র টাকা ছাপানোর প্রেস | দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন (১৯৮৯), গাজীপুর |
সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে মুদ্রিত প্রথম নোট | ১০ টাকার নোট |
বাংলাদেশে কাগজে ও ব্যাংক নোট যথাক্রমে | ৯টি ও ৭টি |
টাকা ছাপানোর বিশেষ কাগজ আমদানি করা হয় | সুইজারল্যান্ড থেকে |
৫০০ টাকার নোট ছাপা হয় | জার্মানিতে |
১,২,৩,৫ টাকার স্বাক্ষর থাকে | অর্থ সচিবের |
সবার জন্য শিক্ষা লেখা আছে | ২ টাকার মুদ্রায় |
বাংলাদেশে প্রথম নোট চালু হয় | ৪ মার্চ, ১৯৭২ (১ ও ১০০ টাকার নোট) |
বাংলাদেশে প্রথম ধাতব মুদ্রা চালু হয় | ১৯৭৩ সাল |
মুদ্রার অবমূল্যায়নের উদ্দেশ্য | রপ্তানি বৃদ্ধি করা |
বাংলাদেশে মুদ্রার ভাসমান বিনিময় চালু হয় | ১ জুন, ২০০৩ সালে |
জেনে নিই
রাষ্ট্রায়ত্ত /সরকারী বাণিজ্যিক নিয়মিত ব্যাংক সমূহ
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক ৬ টি
বিশেষায়িত ব্যাংক ৭টি (প্রথম ৩টি তফসিল ভুক্ত)
বিদেশী বাণিজ্যিক ব্যাংক ৯ টি
জেনে নিই
LDC থেকে উত্তরণের শর্ত- ৩টি; যথা-
প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মেয়াদ- ১৯৭৩-১৯৭৮ সাল।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মেয়াদ কাল- ২০২১-২০২৫ সাল।
Budget অর্থ Bag বা থলে । একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গৃহীত আর্থিক পরিকল্পনা। Oxford Dictionary অনুযায়ী বাজেট হচ্ছে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য আয় ও ব্যয় এর হিসাব। একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সরকারের আয় ও ব্যয় এর যে পরিকল্পনা আইন পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হয় তাই বাজেট । সর্বপ্রথম উত্থাপিত হয় ১৮৩৩ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। সংবিধান অনুযায়ী বাজেট প্রণয়নের দায়িত্ব সরকারের প্রধান নির্বাহীর। Rules of Business অনুযায়ী Budge প্রণয়নের দায়িত্ব অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের।
অর্থ বছরের বাজেটঃ ২০২২-২৩
তত্ত্ব | প্রবক্তা |
---|---|
খাজনা তত্ত্ব | ডেভিড রিকার্ডো |
তুলনামূলক খরচ তত্ত্ব | ডেভিড রিকার্ডো |
শ্রম বিভাগ তত্ত্ব | অ্যাডাম স্মিথ |
অর্থনীতি | অ্যাডাম স্মিথ |
আধুনিক অর্থনীতি | পল স্যামুয়েলসন |
ইউরো মুদ্রা | রবার্ট মুন্ডেল |
ব্যবস্থাপনা | পিটার ডুকার |
আধুনিক ব্যবস্থাপনা | হেনরি ফেয়ল |
লেইসে ফেয়ার নীতি | অ্যাডাম স্মিথ |
সামাজিক চয়ন তত্ত্ব | অমর্ত্য সেন |
জনসংখ্যা তত্ত্ব | টমাস ম্যালথাস |
কাম্য জনসংখ্যা তত্ত্ব | জন ডাল্টন |
মজুরের উদ্বৃত্ত মূল্য তত্ত্ব | কার্ল মার্কস |
মজুরি তহবিল তত্ত্ব | জে এস মিল |
ভোক্তার উদ্বৃত্ত তত্ত্ব | মার্শাল |
সুদের নগদ পছন্দ তত্ত্ব | লর্ড কিনস |
অভাব সাম্যের তত্ত্ব | হ্যান্স সিংগার |
গ্রেশাম বিধি | স্যার টমাস গ্রেশাম |
অর্থের পরিমাণ তত্ত্ব | আরভিং ফিশার |
বিশ্বগ্রাম | মার্শাল ম্যাকলুহান |
দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র | অধ্যাপক নার্কস |
স্বাভাবিক মুনাফা | আলফ্রেড মার্শাল |
মজুরি নির্ধারণ তত্ত্ব | ল্যাসলেকে |
কল্যাণ অর্থনীতি | অমর্ত্য সেন |
আলোচিত কয়েকটি স্থলবন্দরের অবস্থান
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ( পূর্বনাম আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী দিবস) প্রতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখে পালিত হয়। সারা বিশ্বব্যাপী নারীরা একটি প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এই দিবস উদ্যাপন করে থাকেন। বিশ্বের এক এক প্রান্তে নারীদিবস উদ্যাপনের প্রধান লক্ষ্য এক এক প্রকার হয়। কোথাও নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা উদ্যাপনের মুখ্য বিষয় হয়, আবার কোথাও মহিলাদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠাটি বেশি গুরুত্ব পায়।
ই দিবসটি উদ্যাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে সরকার লেঠেল বাহিনীর দমন-পীড়ন। ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হলো। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ; জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এরপর ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বৎসর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয়ঃ ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে লাগল। বাংলাদেশেও ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতার লাভের পূর্ব থেকেই এই দিবসটি পালিত হতে শুরু করে। অতঃপর ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার অভীপ্সা নিয়ে। সারা বিশ্বের সকল দেশে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
সোর্সঃ Wikipedia
হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে বাঙালির স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।
২৫ মার্চ মধ্যরাতের আগে আগে পাকিস্তানিরা শুরু করে গণহত্যা। সেদিন মধ্যরাতের পর পরই বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, ‘আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন।’ এই ঘোষণার পরে নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের সিঁড়ি বেয়ে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে চূড়ান্ত বিজয় লাভ করে বাংলাদেশ।
প্রতি বছর বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় দিনটি পালন করা হয়। স্মরণ করা হয় স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী দেশের বীর সন্তানদের। জাতি শ্রদ্ধা জানায় মহান স্বাধীনতার রূপকার বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় চার নেতা, নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের প্রতি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধাপে ধাপে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের পর বাঙালিরা অনুভব করে, তারা পাকিস্তান নামক নতুন ঔপনিবেশ পরাধীনতার নাগপাশে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। পাকিস্তানি শাসনের শুরুতেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালি। বায়ান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টির পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯। প্রবল গণ-অভ্যুত্থানে কেঁপে ওঠে তৎকালীন সামরিক শাসক জেনারেল আইয়ুবের মসনদ। ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো-বাংলাদেশ স্বাধীন করো’, ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গ্রাম-শহর, জনপদ।
বাঙালির ন্যায্য দাবিকে উপেক্ষা করতে না পেরে ১৯৭০ সালে নির্বাচন দেয় সরকার। ষড়যন্ত্র ও সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্তরের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। কিন্তু বাঙালির হাতে শাসনভার দেয়ার বদলে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে করতে থাকেন কালক্ষেপণ। পর্দার আড়ালে প্রস্তুত হয় হিংস্র কায়দায় বাঙালি হত্যাযজ্ঞের ‘নীলনকশা’।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করে। হানাদাররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, ইকবাল হল, রোকেয়া হল, শিক্ষকদের বাসা, পিলখানার ইপিআর সদর দপ্তর, রাজারবাগ পুলিশ লাইনে একযোগে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে হত্যা করে অগণিত নিরস্ত্র দেশপ্রেমিক ও দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। পাকহানাদার বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একাধিক গণকবর খুঁড়ে সেখানে শত শত লাশ মাটি চাপা দিয়ে তার ওপর বুলডোজার চালায়। আক্রমণ চালানো হয় পিলখানায় ইপিআর সদর দপ্তর ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনে।
বঙ্গবন্ধু তার দূরদর্শী সিদ্ধান্তে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হ্যান্ডবিল আকারে ইংরেজি ও বাংলায় ছাপিয়ে চট্টগ্রামে বিলি করা হয়। আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক জহুর আহমেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা চট্টগ্রামের ইপিআর সদর দপ্তর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ওয়্যারলেস মারফত পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান ২৬ মার্চ বেলা ২টা ১০ মিনিটে এবং ২টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম বেতার থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। এদিকে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়৷
বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকেই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ওই রাতেই তৎকালীন পূর্ব বাংলার পুলিশ, ইপিআর ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শুরু করে প্রতিরোধ যুদ্ধ, সঙ্গে যোগ দেয় সাধারণ মানুষ। ৯ মাসের যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর দেশ শত্রুমুক্ত হয়।
তাঁর বিখ্যাত চিত্রকর্মের-
তার উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম
উৎসর্গকৃত রচনাবলি
রবীন্দ্র রচনাবলি
নজরুলের লেখা গ্রন্থসমূহ
ভাস্কর্য (Sculpture)
টরাকোটা (Terracotta )
পটচিত্র (Scroll painting)
(Sketch): পেন্সিলে আকা ছবিকে নির্দেশ করে।
কাইয়ুম চৌধুরী
জয়নুল আবেদীন
কামরুল হাসান
মোহাম্মদ কিবরিয়া
সোনা মসজিদ
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
জাতীয় স্মৃতিসৌধ
লালবাগ কেল্লা
কুমিল্লা
গাজীপুর
বগুড়া
রাজশাহী
সীতাকোট বিহার বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত একটি বৌদ্ধ বিহার ।
৮১ টি
৬৫ টি
৭০ টি
৭৭ টি
খুলনায়
বাগেরহাটে
ঢাকায়
গাজীপুরে
কুমিল্লায়
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত বিশ্বসেরা সমুদ্রসৈকত। পাহাড়ঘেরা কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক বালুময় সমুদ্রসৈকত, এর দৈর্ঘ্য ১২০ কিলোমিটার (৭৫ মাইল)। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য কক্সবাজার আদর্শ জায়গা কারণ, এখানে শাহপরীর দ্বীপ, কুবদিয়া বাতিঘর, ছেড়া দ্বীপ, ডুলাহাজরা সাফারি পার্ক, সোনাদিয়া দ্বীপ, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, ইনানী সমুদ্র সৈকত, মেরিন ড্রাইভ, রামু রাবার বাগান ও মহেশখালী ছাড়াও এখানে অনেক প্রাচীন স্থাপনা রয়েছে।
সেন্টমার্টিন হলো বিশ্বের অন্যতম প্রবাল দ্বীপ। সেন্টমাটিন দ্বীপ ডাবের জন্য বিশেষভাবে বিখ্যাত। আপনি সেন্টমার্টিনে পাবেন সুমিষ্ট ডাবের পানি আর শাঁস। অপূর্ব সুন্দর সেন্টমার্টিনের অপর নাম নারিকেল জিঞ্জিরা। এর আয়তন মাত্র ৮ বর্গ কিলোমিটার।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা রাঙামাটি। কাপ্তাই লেকের বুকে ভেসে থাকা ছোট্ট এর জেলা শহর আর আশপাশে সর্বত্রই রায়েছে অসংখ্য বৈচিত্র্যময় স্থান: যেমন। কাপ্তাই হ্রদ, ঝুলন্ত সেতু, রাজবন বিহার, শুভলং ও হাজাছড়া বর্ণা, সাজেক ভ্যালি, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র ও কর্ণফুলি কাগজ কল। এখানকার জায়গাগুলো বছরের বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপে সাজে। কবে বর্ষার সাজ একেবারেই অন্যরূপ।
সৃষ্টিকর্তা অপার সৌন্দর্যে সাজিয়েছেন খাগড়াছড়িকে। এখানে রয়েছে আকাশ-পাহাড়ের মিতালি, চেঙ্গি ও মাইনি উপত্যকার বিস্তীর্ণ সমতল ভূভাগ ও উপজাতীয় সংস্কৃতির বৈচিত্রতা। যেদিকেই চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। ভ্রমণবিলাসীদের জন্য আদর্শ স্থান। খাগড়াছড়ি পুরোপুরি পাহাড়ি এলাকা। এখানে আলুটিলা রহস্যময় গুহা, রিছাং ঝরনা, মহালছড়ি হ্রদ, রামগর লেক ও চাবাগানসহ পাহাড়ি অদ্ভুত সৌন্দর্য উপভোগ করার স্থান ।
বান্দরবান জেলার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে বাকলাই ঝরনা, বগা লেক, বুদ্ধ ধাতু জাদি, চিম্বুক পাহাড় রেঞ্জ, চিনরি ঝিরি করনা, ফাইপি ঝরনা, জাদিপাই ঝরনা, কেওকারাডং, নাফাম, রেমাক্রি, নীলাচল, নীলগিরি, থানচি, পতংঝিরি ঝরনা, প্রান্তিক লেন, রাজবিহার, উজানিপারা বিহার, রিজুক ঝরনা, সাংগু ইত্যাদি।
দীঘিনালা উপভোগ বিহার, সাজেক ভেলী যাওয়ার পথে অবস্থিত খুব সুন্দর এবং শান্ত স্নিগ্ধ একটি জায়গা । এর ভিতরে প্রবেশের পর দুটি মন্দির দৃশ্যমান হবে। একটিতে বুদ্ধের একটি বড় মূর্তি আছে এবং অন্যটিতে রাঙ্গামাটি বিহারের ভাঙে নামের এক স্থানীয়র দুটি মূর্তি আছে।
বাংলাদেশের যে কয়েকটি অঞ্চলে চা-বাগান পরিলক্ষিত হয় তার মধ্যে সিলেট অন্যতম। সিলেটের চায়ের রং, স্বাদ এবং সুতে অতুলনীয়। রূপকন্যা হিসেবে সারা দেশে এক নামে পরিচিত সিলেটের জাফলং। এছাড়াও লালাখাল, তামাবিল, রাতারগুল, বিছানাকান্দি ইত্যাদি সিলেটের পর্যটন শিল্প।
সিলেটের পর্যটন স্বর্গ। দেশের সীমান্তঘেরা পাঘরের বিছানা ও মেঘালয় পাহাড় থেকে আসা ঠাণ্ডা পানি পাশেই পাহাড়ি সবুজের সমারোহ। ছোট বড় পাথরের ওপর দিয়ে ছুটে আসা স্বচ্ছ পানির স্রোতধারা বিছানাকান্দিতে সৃষ্টি করেছে এক মনোরম পরিবেশ ।
রাঙ্গামাটিতে এর অবস্থান হলেও যেতে হয় খাগড়াছড়ি হয়ে। খাগড়াছড়ি শহর থেকে দীঘিনালা, তারপর বাঘাইহাট হয়ে সাজেক। করাটাই অপূর্ব, আশপাশের দৃশ্যও মনোরম। পথের দুই পাশে লাল-সবুজ রঙের বাড়ি ও পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে জমে উঠে মেঘের মেলা ।
রংরাং পাহাড়ের চূড়ায় না উঠলে রাঙামাটির সৌন্দর্য অপূর্ণ থেকে যাবে। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে বয়ে গেছে মোহনীয় কর্ণফুলী। বরকল ও জুরাছড়ি উপজেলায় এর অবস্থান। চারপাশের এমন সব সৌন্দর্য চোখের সামনে চলে আসবে যদি রংরাং চূড়ায় উঠা যায়।
বান্দরবানের মংপ্রু পাড়ায় ঝরনাটির অবস্থান। দুই বিশাল পাহাড়কে পাহারায় রেখে পাথুরে জলের ধারা বয়ে দিচ্ছে এই ঝরনা। পাহাড়ের মেয়ে উঠতেই বদলে যাবে দৃশ্যপট। ঝরনাগুলো পুরো এলাকাকে ছড়িয়ে দিচ্ছে সাদাটে কুয়াশার চাদরে।
নীলগিরি দেশের সর্বোচ্চ পর্যটন কেন্দ্র। বান্দরবানের থানচি উপজেলায় এর অবস্থান। মেঘের সঙ্গে মিতালি করে এখানে মেঘ ছোঁয়ার সুযোগ রয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে নীলগিরিতে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত অপরূপ।
নিলাচল ও শুভ্রনীলা বান্দরবান জেলার প্রবেশমুখেই অবস্থিত। ১৭০০ ফুট উচ্চতার এই পর্যটনস্থানগুলোতে সবসময়ই মেঘের খেলা চলে। এ পাহাড়ের ওপর নির্মিত এ দুটি পর্যটনকেন্দ্র থেকে পার্শ্ববর্তী এলাকার দৃশ্য দেখতে খুবই মনোরম।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিলের নাম চলনবিল। পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় এটি। বর্ষার সুন্দরী বলা চলে ৩ জেলাজুড়ে (পাবনা- নাটোর, সিরাজগঞ্জ) বিস্তৃত এ বিল। বর্ষায় কানায় কানায় পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে রূপের পসরা সাজিয়ে বসে ৮০০ বর্গমাইলের এই বৃহৎ বিল।
ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বগুড়ায় অবস্থিত। পুণ্ড্রবর্ধনের রাজধানী ছিল বর্তমান বগুড়া মহাস্থানগড়। মৌর্য, গুপ্ত, পাল এবং সেন আমলেও বহুড়ার বিশেষ প্রশাসনিক গুরুত্ব ছিল। করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে এটির অবস্থান।
রাঙামাটি জেলার সর্বাপেক্ষা আকর্ষণীয় জায়গাগুলোর মধ্যে শুভলং ঝরনা একটি। এই ঝরনা দেখতে সর্বক্ষণ পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসে ঝরনাটি পতিত হয়েছে কাপ্তাই লেকে। শুভলংয়ের কাছে যেতে বাধা নেই, ফলে ঝর্ণার রূপ মাধুর্য প্রাণভরে উপভোগ করা যায়।
ঘন জঙ্গলের বুক চিঁড়ে চলে গেছে পাহাড়ি রাস্তা। দুই পাশে সারি সারি গাছ। তার মধ্য দিয়ে মধ্যদুপুর কিংবা সোনাঝরা সকালঅথবা বিকালের নরম আলো লাউয়াছড়াকে করেছে আরও মোহনীয়। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত এই বন।
বাংলার দার্জিলিং খ্যাত দেশের তৃতীয় বৃহত্তম পর্বত। বান্দরবানের চিম্বুক সারা দেশেই পরিচিত নাম। চিম্বুক যাওয়ার রাস্তার দুই পাশের পাহাড়ি দৃশ্য ও সাঙ্গু নদীর দৃশ্য খুবই মনোরম। পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে দেখা যাবে মেঘের ভেলা সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ২৫০০ ফুট উঁচু এ পাহাড়।
ষাট গম্বুজ মসজিদ নামে পরিচিত ষাট গম্বুজ মসজিদ, এটি বৃহত্তম মসজিদটি সুলতানি আমলে নির্মিত হয়। খান জাহান আলি (উলুঘ খান) এটি নির্মাণ করেন ১৫০০ শতাব্দীতে। মসজিদটির মোট গম্বুজ সংখ্যা ৮১ টি ।
অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটা। কুয়াকাটা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি মাত্র সমুদ্রসৈকত যেখানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত অবলোকন করা যায়। সমুদ্রের পেট চিরে সূর্যোদয় হওয়া এবং সমুদ্রের বক্ষে সূর্যকে হারিয়ে যাওয়ার দৃশ্য অবলোকন করা মসন্দেহে দারুণ ব্যাপার। এছাড়াও তার আইল্যান্ড, শুঁটকি পল্লী, গঙ্গামতির জঙ্গল, ফাতরার বন, সীমা বৌদ্ধ মন্দিরসহ ইত্যাদি স্পট।
বাংলাদেশের অংশ ৬,০১৭ বর্গ কি.মি.আয়তনের সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ, দীর্ঘতম লবণাক্ত জলাভূমি এবং জীব বৈচিত্রে সমৃদ্ধ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ইকোসিস্টেম। এখানে ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ এবং ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিদ্যমান, যার মধ্যে আছে ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৩১৫ প্রজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং বিশ্ববিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার। প্রধান সরীসৃপ জাতিগুলোর মধ্যে আছে নোনা পানির কুমির, অজগর, গোখরা, গুইসাপ, সামুদ্রিক সাপ, গিরগিটি, কচ্ছপ এবং অন্যান্য প্রায় ৩০ প্রজাতির সাপ সুন্দরবনে পাওয়া যায়। জলাভূমি হিসাবে রামসার এলাকার সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকায় সুন্দরবনকে ১৯৯২ সালে ৫৬০ তম রামসার এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করে।
বিরিশিরি বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার ঐতিহ্যবাহী একটি গ্রাম। এটি এক অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। বিরিশিরির মূল আকর্ষণ বিজয়পুর চীনামাটির খনি। সাদা মাটি পানির রঙকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তোলে।
বিশ্ব ঐতিহ্য (৩টি)
বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য (১ টি)
অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (৪টি)
রামসার ঘোষিত জলাশয় (২টি)
আলোচিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্কয়ার
1959
1955
1962
1972
ব্রিটিশ কমনওয়েলথে
জাতিসংঘ
NAM
১৯৭৩- এই সম্মেলনে কিউবার মহান নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলেন, “আমি হিমালয় দেখিনি তবে শেখ মুজিবকে দেখেছি। "
জেনে নিই
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি
পররাষ্ট্রনীতির মূলনীতি ৪টি। যথাঃ
শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্রনীতি
ফলাফল
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পররাষ্ট্রনীতি
হুসাইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে পররাষ্ট্রনীতি
খালেদা জিয়ার শাসনামল
অর্থনৈতিক কুটনীতির সাথে তিনটি বিষয় জড়িত। যথা:
শেখ হাসিনার শাসনামল
দক্ষিণ কোরিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা প্রশমন করে সৌহার্দপূর্ণ ও সম্প্রীতিমূলক আচরণ বজায় রাখার লক্ষ্যে যে পলিসি গ্রহণ করা হয়, তা-ই সানশাইন পলিসি। ১৯৯৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম পারে উদ্যোগে এ নীতি গ্রহণ করা হয়। কিম দায়ে জংয়ের এই নাতির জন্য ২০০০ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।
তিন বা ততোধিক দেশের অংশগ্রহনে সম্মেলনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপে যে কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানো হয়, তা উপাঞ্চলিক, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়েও হতে পারে। এটি দ্বিপক্ষীয় কূটনীতি থেকে সুস্পষ্টভাবে আলাদা, যা রাষ্ট্র বনাম রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পাদিত হয়। দ্বিপক্ষীয় কূটনীতি অবশ্য বহুপক্ষীয় কূটনীতির পরিপূরক (supplementary)
এটি মূলত সমকালীন অর্থনৈতিক বা সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয়ে সরকারী নীতির লিখিত বিবৃতি। কোনো আইন পরিবর্তন করে নতুন বিল তৈরির আগে বা যেকোনো বিষয়ে আইন প্রণয়নের আগে জনমত যাচাইয়ের জন্য শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়। ইংল্যান্ডে শ্বেতপত্রকে পার্লামেন্টারি পেপারস বলে।
বর্তমান বিশ্বরাজনীতিতে বহুল আলোচিত একটি কূটনৈতিক সিস্টেম। বাংলায় যাকে বলা হয় দ্বৈত ট্রাক কূটনীতি। এটাকে Track II diplomacy অথবা Backchannel diplomacy হিসেবেও আখ্যায়িত করে থাকে। মূল কথা হচ্ছে এই ডিপ্লোম্যাসির মধ্যে দুইটা সিস্টেম একসাথে কাজ করে। দ্বৈত ট্রাক (Dual Track) কূটনীতি এমন এক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরগুলো সরকার নিয়ন্ত্রণ করে এবং বেসরকারি সংস্থার হাতে এসব সেক্টর নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা খুব কমই থাকে।
বাংলাদেশ বনাম মিয়ানমার
২০১২ সালের ১৪ মার্চ জার্মানিতে অবস্থিত সমুদ্র আইন বিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে (ITLOS) এই মামলার রায় দেয়া হয়। রায় অনুসারে বাংলাদেশ তার উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। এছাড়াও সমুদ্রে অবস্থিত ২৮টি ব্লকের মধ্যে ১৮টি ব্লকের মালিকানা বাংলাদেশ পায় ।
বাংলাদেশ বনাম ভারত
২০১৪ সালের ৭ জুলাই নেদারল্যান্ডে অবস্থিত স্থায়ী সালিশি আদালত (UNCLOS) এই রায় আদালতের রায়ে বাংলাদেশ ভারত ও মিয়ানমার থেকে ১, ১৮, ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার সমুদ্র অঞ্চল, ১২ নটিক্যাল মাইল রাজনৈতিক সমুদ্রসীমা, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল (Exclusive Economic Zone - EEZ) এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে অবস্থিত সব ধরনের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
চুক্তির নাম | চুক্তি সম্পাদনের তারিখ | চুক্তিকারি দেশ |
বন্ধুত্ব সহযোগিতা ও শান্তিবিষয়ক চুক্তি | ১৯ মার্চ ১৯৭২ | বাংলাদেশ - ভারত |
১ম বাণিজ্য চুক্তি | ২৮ মার্চ ১৯৭২ | বাংলাদেশ-ভারত |
অভ্যন্তরীণ নৌপথ অতিক্রম ও বাণিজ্য প্রটোকল | ১১ নভেম্বর ১৯৭২ | বাংলাদেশ- ভারত |
সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি | ৩০ ডিসেম্বর ১৯৭২ | বাংলাদেশ-ভারত |
স্থল সীমান্ত চুক্তি | ১৬ মে ১৯৭৪ | বাংলাদেশ-ভারত |
বিমান পরিবহন চুক্তি | ৪ মে ১৯৭৮ | বাংলাদেশ ভারত |
যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন চুক্তি | ৭ অক্টোবর ১৯৮২ | বাংলাদেশ- ভারত |
দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি | ২৭ আগস্ট ১৯৯১ | বাংলাদেশ - ভারত |
গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি | ১২ ডিসেম্বর ১৯৯৬ | বাংলাদেশ - ভারত |
মোটরযান যাত্রী পরিবহন চুক্তি | ১৭ জুন ১৯৯৯ | বাংলাদেশ- ভারত |
ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিস প্রটোকল | ১৭ জুন ১৯৯৯ | বাংলাদেশ - ভারত |
মধ্যে ট্রেন চলাচল চুক্তি | ৪ জুলাই ২০০০ | বাংলাদেশ- ভারত |
সংশোধিত ভ্রমণ ব্যবস্থা বিষয়ে চুক্তি | ২৩ মে ২০০১ | বাংলাদেশ - ভারত |
যাত্রীবাহী রেল সার্ভিস চুক্তি | ১২ জুলাই ২০০১ | বাংলাদেশ - ভারত |
ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিসের প্রটোকল | ১০ জুলাই ২০০১ | বাংলাদেশ- ভারত |
মাদকদ্রব্য দ্রব্যের অবৈধ পাচার রোধ চুক্তি | ২১ মার্চ ২০০৬ | বাংলাদেশ - ভারত |
বিএসটিআই ও বিআইএসের মধ্যে সমঝোতা স্মারক | ৬ জুন ২০০৭ | বাংলাদেশ - ভারত |
বেসামরিক বিমান পরিবহন বিষয়ক সমঝোতা স্মারক | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ | বাংলাদেশ- ভারত |
দ্বিপক্ষীয় পুঁজি বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ চুক্তি | ৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ | বাংলাদেশ ভারত |
অপরাধ বিষয়ে পরস্পরকে আইনি সহায়তা প্রদানের চুক্তি | ১১ জানুয়ারি ২০১০ | বাংলাদেশ- ভারত |
সাজাপ্রাপ্ত বন্দিবিনিময় চুক্তি | ১১ জানুয়ারি ২০১০ | বাংলাদেশ - ভারত |
বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক | ১১ জানুয়ারি ২০১০ | বাংলাদেশ ভারত |
সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি | ১১ জানুয়ারি ২০১০ | বাংলাদেশ - ভারত |
১০০ কোটি ডলার ঋণচুক্তি | ৭ আগস্ট ২০১০ | বাংলাদেশ ভারত |
সীমান্ত হাট চুক্তি | ২৩ অক্টোবর ২০১০ | বাংলাদেশ ভারত |
পার্বত্য শান্তি চুক্তি | ২ ডিসেম্বর ১৯৯৭ | বাংলাদেশ জনসংহতি সমিতির |
স্থলমাইন চুক্তি | ১২ নভেম্বর ১৯৯৮ | বাংলাদেশ-মায়ানমার |
বাংলাদেশ-সিংগাপুর বাণিজ্য সহযোগিতা চুক্তি | ৩০ আগষ্ট ২০০০ | বাংলাদেশ-সিংগাপুর |
আসামি প্রত্যার্পণ চুক্তি | ৯ জুলাই ১৯৯৮ | বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড |
ত্রিদেশীয় দিল্লী চুক্তি | ১৯৭৪ র ৯ এপ্রিল | বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান |
সিমলা শান্তি চুক্তি | ২ জুলাই ১৯৭১ | ভারত পাকিস্তান |
রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র চুক্তি | ২ ফেব্রুয়ারি ২০১১ | বাংলাদেশ রাশিয়া |
রূপপুরের স্পেষ্ট ফুয়েল চুক্তি | ৩১ আগস্ট ২০১৭ | বাংলাদেশ - রাশিয়া |
বাংলাদেশ-রাশিয়া ঋণ চুক্তি | ২৬ জুলাই ২০১৬ | বাংলাদেশ - রাশিয়া |
আন্তঃরাষ্ট্রীয় কমিশন গঠনে চুক্তি | ০১ মার্চ ২০১৭ | বাংলাদেশ - রাশিয়া |
দেশের স্বার্থে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে হয়। যে চুক্তি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। এমন কিছু চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন হতে পারে সাধারণ জ্ঞান অংশে।
১. প্রশ্ন : গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় কবে?
উত্তর : ১২ ডিসেম্বর ১৯৯৬।
২. প্রশ্ন : কত বছরের জন্য গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়?
উত্তর : ৩০ বছরের জন্য।
৩. প্রশ্ন : কোন দেশের সঙ্গে গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়?
উত্তর : ভারতের সঙ্গে।
৪. প্রশ্ন : গঙ্গা পানি চুক্তিতে কে কে স্বাক্ষর করেন?
উত্তর : বাংলাদেশের পক্ষে শেখ হাসিনা এবং ভারতের পক্ষে দেব গৌড়া।
৫. প্রশ্ন : পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় কবে?
উত্তর : ০২ ডিসেম্বর ১৯৯৭।
৬. প্রশ্ন : পার্বত্য শান্তি চুক্তিতে কে কে স্বাক্ষর করেন?
উত্তর : বাংলাদেশের পক্ষে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের পক্ষে সন্তু লারমা।
৭. প্রশ্ন : কোথায় বসে পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়?
উত্তর : প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে।
৮. প্রশ্ন : শান্তি বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয় কবে?
উত্তর : ০৫ মার্চ ১৯৯৮।
৯. প্রশ্ন : শান্তি বাহিনী প্রথম কবে অস্ত্র সমর্পণ করে?
উত্তর : ১০ জানুয়ারি ১৯৯৮।
১০. প্রশ্ন : পার্বত্য শান্তি চুক্তি অনুযায়ী আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য সংখ্যা কত?
উত্তর : ২২ জন।
১১. প্রশ্ন : পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যানের পদমর্যাদা কী?
উত্তর : একজন প্রতিমন্ত্রীর সমান।
১২. প্রশ্ন : বাংলাদেশ-মায়ানমার স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় কবে?
উত্তর : ১২ নভেম্বর ১৯৯৮।
১৩. প্রশ্ন : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ট্রেন চলাচল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় কবে?
উত্তর : ৪ জুলাই ২০০০।
১৪. প্রশ্ন : বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড আসামি প্রত্যার্পণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় কবে?
উত্তর : ৯ জুলাই ১৯৯৮।
১৫. প্রশ্ন : ফারাক্কা বাঁধ চালু হয়–
উত্তর : ১৯৭৫ সালে।
১৬. প্রশ্ন : জাতিসংঘের কোন অধিবেশনে বাংলাদেশের পক্ষে ফারাক্কা ইস্যু উত্থাপন করা হয়?
উত্তর : ৩১তম অধিবেশনে।
১৭. প্রশ্ন : বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর বাণিজ্য সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় কবে?
উত্তর : ৩০ আগস্ট ২০০০।
১৮. প্রশ্ন : বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চুক্তি সাক্ষরিত হয় কবে?
উত্তর : ১৯ মার্চ ১৯৭২।
১৯. প্রশ্ন : বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চুক্তি সাক্ষরিত হয় কত বছরের জন্য?
উত্তর : ২৫ বছরের জন্য।
২০. প্রশ্ন : বাংলদেশ স্থলমাইন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে কবে?
উত্তর : ৮ মে ১৯৯৯।
চুক্তিটি পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি ও আদিবাসীদের স্বতন্ত্র জাতিসত্তা এবং বিশেষ মর্যাদাকে স্বীকৃতি দেয় এবং পার্বত্য অঞ্চলের তিনটি জেলার স্থানীয় সরকার পরিষদের সমন্বয়ে একটি আঞ্চলিক পরিষদ প্রতিষ্ঠা করে।
ভৈরব রেল সেতু
লালন শাহ সেতু
খান জাহান আলী (রঃ) সেতু
শেখ হাসিনা তিতাস সেতু
বাংলাদেশ ভারত মৈত্রী সেতু-১
জেনে নিই
প্রস্তাবিত দ্বিতীয় পদ্মা সেতু
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর- ৩ টি; যথা-
বাংলাদেশের প্রধান সংবাদ সংস্থার নাম- বাসস। বাংলাদেশের অন্যান্য সংবাদ সংস্থা গুলো- ইস্টার্ন নিউজ এজেন্সী ইউনাইটেড নিউজ অফ বাংলাদেশ (ইউ.এন.বি) আনন্দ বাংলা সংবাদ (আবাস) মিডিয়া সিন্ডিকেট, নিউজ ইডিয়া, বি.এন.এস প্রভৃতি ।
বাংলাদেশের সংবাদ সংস্থা
উপমহাদেশের চলচ্চিত্র
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র
BFDC
মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র
আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র
বিখ্যাত পরিচালক ও চলচ্চিত্র
জেনে নিই
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (Sustainable Development Goals) বা বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রাগুলো আন্তঃসংযুক্ত যা সকলের জীবনমান উন্নতরকরণ আরও টেকসই ভবিষ্যৎ অর্জনের পরিকল্পনা হিসাবে তৈরি করা হয়েছে। জাতিসংঘ লক্ষ্যগুলো প্রণয়ন করেছে এবং “টেকসই উন্নয়নের জন্য বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা” হিসেবে লক্ষ্যগুলোকে প্রচার করেছে। এসব লক্ষ্য সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (MDGs) -কে প্রতিস্থাপন করেছে, যা ২০১৫ সালের শেষ নাগাদ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। SDGs-এর মেয়াদ ২০১৬ থেকে ২০৩০ সাল। এতে মোট ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা ও ১৬৯টি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অন্তরভুক্ত রয়েছে ।
নির্ধারিত ১৭ লক্ষ্যমাত্রা
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (Millennium Development Goals -MDGs) হলো ২০০০ সালে জাতিসংঘ এর সহস্রাব্দ শীর্ষ-বৈঠকের পর প্রতিষ্ঠিত আটটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন লক্ষ্য। সেই সময় ১৯১ টি জাতিসংঘ সদস্য এবং কমপক্ষে ২২ টি আন্তর্জাতিক সংস্থা ২০১৫ সালের মধ্যে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। দারিদ্র্য, গুণগত শিক্ষার অভাব, স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতা, মাত্রাতিরিক্ত শিশুমৃত্যু, এইডস্, যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়ার মতো রোগব্যাধির মহামারির কারণে ব্যাপক হারে জনমৃত্যু ইত্যাদি বেশীরভাগ দেশের বহুকালের সমস্যা। এ সমস্যাগুলো সমাধান করতে না পারলে বিশ্বব্যাপী যে প্রকৃত অর্থে উন্নয়ন সম্ভবপর নয় তা-ই অনুধাবন করে। লক্ষ্যমাত্রাগুলো নির্ধারণ করা হয়। এই ব্যাপারটি অনুধাবন করে ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানগণ সম্মিলিতভাবে অঙ্গীকার করেন যে, ২০১৫ সালের মধ্যে তারা নিজ নিজ দেশে আটটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়ন করেন।
নির্ধারিত আটটি লক্ষ্যমাত্রা
জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশের (LDC) তালিকা প্রস্তুত করে ১৯৭১ সালে। বাংলাদেশ LDC (Least Development Country) ভূক্ত হয় ১৯৭৫ সালে। LDC থেকে বেড়িয়ে যাবার জন্য প্রথম যোগ্যতা যাচাই উত্তরণ- ২০১৮ সালে । LDC থেকে বেড়িয়ে যাবার জন্য দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত যাচাই উত্তরণ- ২০২১ সালে। LDC থেকে উত্তরণের সক্ষমতা অর্জনের ৩ বছর পর একটি দেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পদার্পন করে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম বঠকের ৪০তম প্লেনারি সভায় ২৩ নভেম্বর, ২০২১ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের সুপারিশ অনুমোদন করা হয়। বাংলাদেশ চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করে ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১। সে অনুসারে ২০২৮ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ চূড়ান্তভাবে এলডিসি থেকে বের হবে। বাংলাদেশ পাশাপাশি নেপাল ও লাওস হবার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা ২ বছর পিছিয়ে উত্তরণের সময় ২০২৬ নির্ধারণ করা হয়। আয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ২০২৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে LDC Graduation সম্পূর্ণ হবার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা ২ বছর পিছিয়ে উত্তরণের সময় ২০২৬ নির্ধারণ করা হয়।
রূপকল্প ২০৪১ বা বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১ বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল কর্তৃক প্রণীত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থানকে আরও দৃঢ় করে গড়ে তোলার জাতীয় কৌশলগত পরিকল্পনা। ২০২২ থেকে ২০৪৪ সাল, এই বাইশ বছরের কৌশলগত পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অংশ হিসাবে, বাংলাদেশের লক্ষ্য শিল্পায়নের মাধ্যমে উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন। বাংলাদেশ থেকে রফতানি বৃদ্ধি, মানব সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগের প্রসারকে উৎসাহ দেয়া রূপকল্প ২০৪১ এর উদ্দেশ্য। [প্রথম প্রেক্ষিতের সময় ২০১০-২১]
উদ্দেশ্য
প্রেক্ষাপট
নেদারল্যান্ডস কে অনুসরণ করে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের চাবিকাঠি হিসেবে শতবর্ষী ডেল্টা প্ল্যান তথা ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ প্রণয়ন করা হয়েছে। বন্যা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ, নদী ভাঙন, নদী ব্যবস্থাপনা, বজা ব্যবস্থাপনা ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার দীর্ঘমেয়াদী কৌশল হিসেবে 'ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের অনুমোদন পায়। ২০২০ সালের ১ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১২ সদস্যের ডেল্টা গভর্নর কাউন্সিল গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এই প্লানে বাংলাদেশকে মোট ৬টি হটম্পটে বিভক্ত করে প্রথম ধাপে অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য ৮০টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫টি ভৌত অবকাঠামো প্রকল্প এবং ১৫টি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, দক্ষতা ও গবেষণা বিষয়ক প্রকল্প। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ১৪৫ বিলিয়ন টাকা
ডেল্টা প্ল্যানে নির্ধারিত ৬ টি লক্ষ্য
ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। প্রশাসনিকভাবে এটি ঢাকা জেলার প্রধান ভৌগোলিকভাবে এটি বাংলাদেশের মধ্যভাগে বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীরে একটি সমতল এলাকাতে অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ায় মুম্বাইয়ের পরে দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। আন্তর্জাতিকভাবে ঢাকা একটি অতিমহানগরী মেগাসিটি (১১তম); ঢাকা মহানগরী এলাকার জনসংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। জনসংখ্যার বিচারে ঢাকা দক্ষিণ দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম শহর।
জেনে নিই
১৫১০
১৫৯০
১৬০০
১৬১০
বিশ্ব ধর্মের দেবতা নারায়ণ ঠাকুরের নামানুসারে নারায়ণগঞ্জ নামকরণ করা হয় এটি শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত। নারায়ণগঞ্জকে প্রাচ্যের ড্যান্ডি বলা হয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নদী বন্দর- নারায়ণগঞ্জ। পৃথিবীর বৃহত্তম পাটকল “ আদমজি” পাটকল নারায়ণগঞ্জে যা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫১ সালে এবং বন্ধ হয় ২০০২ সালের ৩০ জুন।
জেনে নিই
lampur
Chandradeep
Fatehabad
None of the above
খ্রিস্টপূর্ব ৮০০০ অব্দে পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব।
খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অস্ত্রে সভ্যতার যাত্রা শুরু।
খ্রিস্টপূর্ব ৪৯০ অব্দে ম্যারাথন যুদ্ধে গ্রিসের নিকট পারস্যের পরাজয়।
খ্রিস্টপূর্ব ৩২৭ অব্দে আলেকজান্ডারের ভারত বর্ষ আক্রমণ।
খ্রিষ্টপূর্ব ৩২১ অব্দে মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।
খ্রিস্টপূর্ব ২৬১ অব্দে কলিঙ্গের যুদ্ধে অশোক জয়লাভ করেন এবং বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন।
যিশু খ্রিষ্টের জন্ম।
৩২০- চন্দ্রগুপ্ত কর্তৃক গুপ্ত বংশের প্রতিষ্ঠা ।
৬০৬- বাংলার প্রথম স্বাধীন নৃপতি শশাংক ক্ষমতায় বসেন।
৭৫৬ - গোপাল কর্তৃক পাল বংশের প্রতিষ্ঠা ।
৭১২- মুহাম্মদ বিন কাশিমের সিন্ধু বিজয় ।
৯৯৭- গজনীর সুলতান মাহমুদের সিংহাসনে আরোহণ । প্রখ্যাত দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ আল বেরুনি, দার্শনিক ফরারি, শাহনামার রচয়িতা ফেরদৌসী প্রমুখ সুলতান মাহমুদের দরবার আলোকিত করেন।
১২০৪ - লক্ষণ সেনকে পরাজিত করে বখতিয়ার খলজির শাসন শুরু ।
১৩৩৩ - মুহম্মদ বিন তুঘলকের রাজত্বের সময় ইবনে বতুতার আগমন ।
১৪৯৮ - পর্তুগীজ নাবিক ভাস্কো-দা-গামার ভারত আগমন । ভারতে আসার জলপথ আবিষ্কার।
১৫২৬ - বাবরের সাথে পানি পথের প্রথম যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদীর পরাজয় এবং বাবর কর্তৃক মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করণ।
১৫৫৬ - সম্রাট আকবরের দিল্লীর সিংহাসন লাভ, আকবরের সেনাপতি বৈরাম খান ও আফগান নেতা আদিল শাহের সেনাপতি হিমুর মধ্যে পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে হিমুর পরাজয়।
১৬১০ - ঢাকা সর্বপ্রথম বাংলার রাজধানী হিসেবে স্থাপন।
১৬৭৮ - সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৃতীয় পুত্র শাহজাদা মোহাম্মদ আজম শাহ লালবাগের কেল্লা নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
১৭৩৯ - নাদির শাহ কর্তৃক ভারত আক্রমণ।
১৭৫৭ - পলাশী যুদ্ধ সংঘঠিত হয় (২৩ জুন)।
Naimur Rahman Durjoy
Akram Khan
Aminul Islam Bulbul
Khaled Masud
ফুটবল একটি দলগত খেলা। এটি বৈশ্বিকভাবে ব্যাপক পরিচিত ও জনপ্রিয় খেলা। এটি আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশন (ফিফা) কর্তৃক পরিচালিত ক্রীড়ার আনুষ্ঠানিক নাম। কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় খেলাটি সকার (Soccer)নামে পরিচিত।
জেনে নিই
FIFA
বিশ্বকাপ ফুটবল
দাবা
দাবা একটি জনপ্রিয় খেলা যা বোর্ড বা ফলকের উপর খেলা হয়। দাবা খেলার সর্বপ্রথম সূচনা হয় ভারতবর্ষে। যিনি দাবা খেলেন তাকে দাবাড়ু বলা হয়। দাবায় দু'জন খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করে। দাবা খেলায় জিততে হলে বোর্ডের ওপর দুটি সরিয়ে বা চাল দিয়ে বিপক্ষের রাজাকে কোণঠাসা করে এমন স্থানে আনতে হয় যেখান থেকে রাজা আর স্থানান্তরিত হতে পারে না, দাবার পরিভাষায় একে বলে 'কিস্তিমাত'।
জেনে নিই
অন্যান্য খেলাধুলায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী হচ্ছে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী যা সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত। পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডসহ অন্যান্য আধা সামরিক বাহিনীগুলো সাধারণ সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকে, তবে যুদ্ধকালীন সময়ে তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অধীনে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় হল প্রধান প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান যেখানে সামরিক আইন তৈরী ও বাস্তবায়ন করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিজেই বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। ১৯৭১-এর ২১শে নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী গঠিত হয়। প্রতিবছর ২১শে নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসাবে পালিত হয়।
জেনে নিই
পুলিশের ব্যবহৃত আইন
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী হচ্ছে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী যা সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত। পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডসহ অন্যান্য আধা সামরিক বাহিনীগুলো সাধারণ সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকে, তবে যুদ্ধকালীন সময়ে তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অধীনে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় হল প্রধান প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান যেখানে সামরিক আইন তৈরী ও বাস্তবায়ন করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিজেই বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। ১৯৭১-এর ২১শে নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী গঠিত হয়। প্রতিবছর ২১শে নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসাবে পালিত হয়।
রেনেসাঁর জনকঃ পেত্রার্ক (ইতালি)।
১৭ এপ্রিল ১৯৭২
১২ মার্চ ১৯৭২
৭ নভেম্বর ১৯৭২
২৬ মার্চ ১৯৭২
Read more